শীতের ছুটিতে জমজমাট পাহাড়: টয় ট্রেনের টিকিটের চাহিদা তুঙ্গে, বাড়ল জয় রাইডও
Authored By:

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৯:৩২: বড়দিন ও বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে উত্তরবঙ্গে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। শীতের আমেজে পাহাড়ি পথে স্টিম ইঞ্জিনের নস্টালজিয়া উপভোগ করতে ভিড় জমছে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়েতে। বিশেষ করে সুকনা থেকে রংটং রুটের টয় ট্রেন (Toy train) এবং দার্জিলিং-ঘুম ‘জয় রাইড’-এর চাহিদা এখন আকাশছোঁয়া। কুয়াশাঘেরা জঙ্গল আর কয়লা পোড়া গন্ধের সেই ধ্রুপদী অভিজ্ঞতা নিতেই পর্যটকরা ভিড় করছেন পাহাড়ে।
ডিএইচআর (DHR) সূত্রে খবর, সাধারণ টিকিটের বদলে এবার পর্যটকদের বড় দলগুলির মধ্যে আস্ত ট্রেন ভাড়া বা ‘চার্টার’ করার প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে সুকনা-রংটং রুটে এই চাহিদা সবচাইতে বেশি। গত মঙ্গলবারই পর্যটকদের একটি দল ডিজেল ইঞ্জিনচালিত একটি পুরো ট্রেন ভাড়া নিয়ে এই পথে সফর করেছেন। আগামী ২৯ ডিসেম্বর একটি বেসরকারি পর্যটন সংস্থা সুকনা থেকে রংটং পর্যন্ত স্টিম ইঞ্জিন-সহ আস্ত ট্রেন ভাড়া নিয়েছে।
পর্যটকদের এই বিপুল উৎসাহ দেখে খুশি রেলকর্তারাও। ডিএইচআর ডিরেক্টর ঋষভ চৌধুরী জানান, “সুকনা থেকে রংটং রুটে চার্টার্ড ট্রেনের হিড়িক পড়েছে। পাশাপাশি জয় রাইডের চাহিদাও তুঙ্গে। পর্যটকদের ভিড়ের কথা মাথায় রেখে দার্জিলিং-ঘুম রুটে বাড়তি তিনটি জয় রাইড চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি এবং প্রয়োজন হলে ট্রেনের সংখ্যা আরও বাড়ানো হতে পারে।”
স্কুল-কলেজ ও অফিস ছুটির মরশুম হওয়ায় সপরিবারে বহু মানুষ এখন পাহাড়মুখী। রেলের পরিসংখ্যান বলছে, ২৫ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ৮০ শতাংশ টিকিট অনলাইনে আগাম বুক হয়ে গিয়েছে। এনজেপি থেকে দার্জিলিংগামী নিয়মিত ট্রেনের টিকিটের চাহিদাও আকাশছোঁয়া। ভিড় সামাল দিতে এবং পর্যটকদের মনোরঞ্জনে দার্জিলিং-কার্শিয়াং এবং কার্শিয়াং-তিনধারিয়া রুটেও জয় রাইড পরিষেবা চালু রেখেছে ডিএইচআর।
হঠাৎ করেই পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় ওপরের দিকে উঠে এসেছে সুকনা-রংটং রুট। কিন্তু কেন এই জনপ্রিয়তা? আসলে শিলিগুড়ির কোলাহল থেকে খুব কাছেই অপেক্ষা করছে পাহাড় ও সবুজের এক মায়াবী জগৎ। অল্প সময়ের এই যাত্রাপথে একদিকে যেমন পাহাড়ের হাতছানি, তেমনই ঘন অরণ্যের নিস্তব্ধতা। শীতের ভোরে পাখির কলতান আর কুয়াশাঘেরা পথে টয় ট্রেনের ঝিকঝিক শব্দ এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার সৃষ্টি করে। তাই তো বছর শেষে পাহাড়ের রাণী ও তার হেরিটেজ টয় ট্রেনেই মজেছেন ভ্রমণপিপাসুরা।