ডাবল ইঞ্জিন মণিপুরে গৃহহীন নয় হাজার, সাহায্যের আর্তি মেরি কমের
জ্বলছে মণিপুর। দীর্ঘদিন ধরেই মেইতেই সম্প্রদায় তফসিলি উপজাতির তকমা আদায়ে সরব।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: জ্বলছে মণিপুর। দীর্ঘদিন ধরেই মেইতেই সম্প্রদায় তফসিলি উপজাতির তকমা আদায়ে সরব। তাদের দাবির বিষয়ে রাজ্যের বিজেপিকে সরকারকে বিবেচনার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে সরব হয় নাগা ও কুকি উপজাতির মানুষজন, যার দরুন বিগত কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত মণিপুর। উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যের পরিস্থিত ক্রমেই ভয়ানক হচ্ছে। গত বুধবার রাতে মেইতেই সম্প্রদায়ের সঙ্গে অন্যান্য উপজাতিদের সংঘর্ষ ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ইম্ফল, চূড়াচাঁদপুর এবং কাংপোকপিতে নতুন করে হিংসা ছড়ায়। সরকারি দপ্তর, আবাসন ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। পাশাপাশি অসংখ্য বাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠছে। পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হতেই সেনা মোতায়েন করেছে মণিপুর সরকার। র্যাফও আনা হয়েছে। আট জেলায় ইতিমধ্যেই কার্ফু জারি করা হয়েছে। হিংসা প্রবণ এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সাধারণ মানুষদের। বিক্ষোভকারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রশাসনের পদক্ষেপ প্রসঙ্গে, সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নিরাপত্তা বাহিনীকে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন মহিলা বক্সার তথা মণিপুরের মেয়ে মেরি কমও হিংসা বন্ধের আবেদন জানিয়েছেন। টুইটে তিনি লেখেন, তাঁর রাজ্য মণিপুরে আগুন জ্বলছে। সাহায্য করার জন্য আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, মণিপুরের মোট জনসংখ্যার ৬৪ শতাংশ মেইতেই সম্প্রদায়ের মানুষজন। কিন্তু তারা রাজ্যের মাত্র ১০ শতাংশ এলাকার বাসিন্দা। আদিবাসীদের জন্য সংরক্ষিত পাহাড়ি এলাকায় তাদের জমি কেনার অনুমতি নেই। যদি তারা তফসিলি উপজাতির তকমা পায়, তাহলে সমস্যার সমাধান হতে পারে। কিন্তু বিরোধিতায় সরব হয়েছে নাগা এবং কুকি উপজাতিরা। এতেই বাড়ছে হিংসার ঘটনা। বুধবার জনজাতির সংঘর্ষ চলেছে রাতভোর। উপজাতি অধ্যুষিত তিন জেলা চূড়াচাঁদপুর, কাংপোকপি এবং তেংনৌপাল অন্যদিকে, ইম্ফল পশ্চিম, কাকচিং, থৌবল, জিরিবাম, বিষ্ণুপুর; জেলায় কার্যত নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে প্রশাসন। আট জেলাতে কার্ফু জারি হয়েছে। পাঁচদিনের জন্য গোটা রাজ্যে ইন্টারনেট পরিষেবা বাতিল ঘোষণা করেছে সরকার। জনজাতির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে ন’হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। সকলকে উদ্ধার করে সেনা ক্যাম্পে সরানো হয়েছে। তার মধ্যে পাঁচ হাজার জনই চূড়াচাঁদপুরের বাসিন্দা। কাংপোকপি জেলায় পুলিশের গুলিতে কুড়ি বছর বয়সী ফুটবলার মাংমিনজোই হাওকিপের মৃত্যু হয়েছে।