গ্রাহক বেড়ে চলেছে জিওতে

শহরে এনিয়ে যে সমীক্ষা করা হয়েছে, সেই রিপোর্টও গিয়েছে এয়ারটেল, ভিআইয়ের বিপক্ষে।

November 27, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi
ছবি: সংগৃহীত

 মোবাইল ফোনে কথা বলা এবং ডেটা স্পিড, এই দুই পরিষেবার ছিটেফোঁটাও অবশিষ্ট নেই ভোডাফোন-আইডিয়া বা ভিআই এবং এয়ারটেলে। গ্রাহকদের দৈনন্দিন অভিজ্ঞতা এমনটাই বলছে। ফলে  তাঁদের ধৈর্যের সীমা ছাড়াচ্ছে। তার জেরে এরাজ্যে হু হু করে নামছে ওই দুই সংস্থার গ্রাহক সংখ্যা। কিন্তু যাঁরা পরিষেবায় তিতিবিরক্ত হয়েও পরিষেবা ভালো হওয়ার খোয়াব দেখছেন, তাঁদের জন্য কোনও সুখবর শোনাতে পারছে না সংশ্লিষ্ট মহল। কারণ, যেভাবে এই সংস্থা দু’টি বিপুল অঙ্কের ক্ষতির উপর বসে রয়েছে, তাতে আগামীদিনে পরিষেবা বলে কিছুই আর অবশিষ্ট থাকবে কি না, সেটাই বড় প্রশ্ন। এদিকে, পরিষেবার প্রশ্নে এই দুই টেলিকম সংস্থার অপদার্থতার সুযোগ নিয়ে সাম্রাজ্য বাড়াচ্ছে রিলায়েন্স জিও। গ্রাহক ও লাভের বহর, দুই-ই বাড়ছে এই সংস্থায়। শহরে এনিয়ে যে সমীক্ষা করা হয়েছে, সেই রিপোর্টও গিয়েছে এয়ারটেল, ভিআইয়ের বিপক্ষে।
সমস্যা ঠিক কোথায়? শুরু করা যাক মোবাইলে কথা বলা দিয়েই।  গ্রাহকরা বলছেন, কথা বলতে গিয়ে বারবার ফোন কেটে যাওয়া এখন প্রত্যেক দিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাস্তায় বেরলে তো বটেই, বহু বাড়িতে মোবাইল ফোনের সংযোগই পাচ্ছেন না হাজার হাজার গ্রাহক। এয়ারটেল এবং ভিআই, দুটি সংস্থার ক্ষেত্রেই সমস্যাটা প্রায় একই রকম। ফোন করে একবারে পুরো কথা বলার সুযোগ প্রায় নেই। তাই একই ব্যক্তিকে বারবার ফোন করতে হচ্ছে গ্রাহকদের। এই দুই সংস্থাই বড়াই করে বলছে, তাদের ফোর জি পরিষেবা অসাধারণ। কিন্তু বাস্তবে কী, তা গ্রাহক মাত্রই টের পাচ্ছেন। কোথাও কোথাও ভালো ডেটা স্পিড মিললেও, বেশিরভাগ সময় অসন্তুষ্ট হচ্ছেন গ্রাহকরা। কিন্তু এসব অভিযোগ জানানোর ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা আরও খারাপ। কাস্টমার কেয়ারে ফোন করলে অপরপ্রান্ত থেকে সেই ফোন ধরার কেউ নেই বললেই চলে। গ্রাহক যদি কোনও অভিযোগ জানাতে চান, তাহলে তাঁকে এত বেশি অপ্রাসঙ্গিক কথা শুনতে হয় যে, তিনি নাজেহাল হয়ে যান। কাস্টমার কেয়ারের ফোনের নামে আসলে যে একপ্রকার ভাঁওতাবাজি চলছে, তা সাম্প্রতিক রিপোর্টে প্রকাশ করেছে টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অব ইন্ডিয়া বা ট্রাই। দেশের টেলিকম নিয়ামক সংস্থা স্পষ্ট করে বলেছে, বাংলায় এয়ারটেল এবং ভিআই-এর কাস্টমার কেয়ারের পরিষেবা জঘন্য।
গত আগস্ট মাস পর্যন্ত ট্রাই টেলিকম গ্রাহক সংখ্যার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, বেঙ্গল সার্কেলে প্রত্যেক মাসে নিয়ম করে লক্ষ লক্ষ গ্রাহক হারাচ্ছে ভিআই এবং এয়ারটেলের। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, গ্রাহক কমার ধারা অব্যাহত দেশের নানা প্রান্তে। তাদের বাজার যত খারাপ হচ্ছে, ততই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জিও’র গ্রাহক সংখ্যা।
ভিআই এবং এয়ারটেলের পরিষেবা ভালো হওয়ার বিষয়ে খুব একটা দিশা দেখছেন না গ্রাহকরা। কারণ, এই দুই সংস্থায় যে বিপুল পরিমাণ অর্থ সঙ্কট দেখা দিয়েছে, তাতে তাদের শ্যাম রাখি না কুল রাখি পরিস্থিতি। শেষ পাওয়া হিসেব অনুযায়ী চলতি আর্থিক বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে এয়ারটেলের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৬৩ কোটি টাকা। ভিআই’য়ের ক্ষতি ৭,২০৩ কোটি টাকা। অথচ ওই একই সময়ে জিও লাভ করেছে ২,৮৪৪ কোটি টাকা। মুকেশ আম্বানির এই সংস্থাটি যেমন পরপর লাভের মুখ দেখছে, তেমনই এয়ারটেল এবং ভিআই’য়ে মাসের পর মাস লাগাতারভাবে ক্ষতির স্রোত বইছে। পরিষেবার বহর বাড়াতে যে পরিকাঠামোগত খরচের দরকার, তা আদৌ তাদের পক্ষে সম্ভব কি না, সেই প্রশ্নই তুলছেন তিতিবিরক্ত গ্রাহকরা। ফলে ভোগান্তি কমার লক্ষণ আপাতত নেই, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। নুন আনতে পান্তা ফুরায় সংস্থায় সেটা আশা করাও অন্যায়, বলছেন তাঁরা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen