যশের আগে রাজ্যের আগাম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ এড়িয়েছে মৃত্যু

২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলা দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আটজনের প্রাণ কেড়ে ছিল।

May 29, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

একদিকে ঘূর্ণিঝড় যশের (Yaas) আতঙ্ক, অন্যদিকে ভরা কোটালের জলোচ্ছ্বাস। এই দুইয়ে মিলে দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) উপকূলবর্তী একাধিক ব্লক আজ বিপর্যস্ত। বানভাসি গ্রামের পর গ্রাম। বাড়িঘর, চাষের জমির চরম ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু এরমধ্যেই সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এই ভয়াল প্রাকৃতিক দুর্যোগে একটি প্রাণও যায়নি গোটা সুন্দরবন (Sundarbans) এলাকায়। আর স্পষ্ট করে বলতে গেলে সমগ্র জেলাতেই আজ এক চিত্র। বিগত তিনটি ঘূর্ণিঝড়ে একাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু এবার প্রশাসন যেভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রে আগাম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছিল, তা এড়িয়েছে মৃত্যু।

২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলা দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আটজনের প্রাণ কেড়ে ছিল। বছর দুই আগে বুলবুলে প্রাণহানি হয় দু’জনের। গত বছর উম-পুনে এই জেলায় ১৮ জন মারা গিয়েছিলেন। তবে এবার সাইক্লোন যশে জীবনহানির কোনও ঘটনাই ঘটেনি। এবার যত না ছিল ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব, তার থেকে বেশি ভুগিয়েছে ভরা কোটালের জলোচ্ছ্বাস। যেভাবে নিমেষের মধ্যে গ্রামের পর গ্রাম ভেসে গিয়েছে, তাতে জীবন সংশয়ের আশঙ্কা ছিল। কিন্তু গত বছর উম-পুন থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার জেলা প্রশাসন ছিল অনেকটাই সতর্ক।

দুর্যোগের পূর্বাভাস দিতে না দিতেই নিখুঁত পরিকল্পনা ছকে ফেলা হয়। ২৬ মে ছিল যশের ল্যান্ডফল। তার দু’দিন আগে থেকেই দুর্বল নদী বাঁধ সংলগ্ন এলাকাগুলি থেকে গ্রামবাসীদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছিল। কোভিড পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে শুধু ফ্লাড শেল্টার‌ই নয়, ব্লকে ব্লকে স্কুল-কলেজ কমিউনিটির বিল্ডিংগুলিকেও ত্রাণ শিবিরে পরিণত করা হয়েছিল। সব মিলিয়ে জেলায় এবার রেকর্ড প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরাতে পেরেছিল প্রশাসন। ঘূর্ণিঝড়ের দিন হাওয়ার দাপটের চেয়ে জলের স্রোত ছিল বেশি। যেসব মানুষ ত্রাণশিবিরে যাননি, জল বাড়তে শুরু করতেই সবাই গিয়ে সেখানে আশ্রয় নেন।

প্রশাসনের আধিকারিক ও অন্যান্য কর্মীরাও ছিলেন সজাগ। জলের কারণে যেখানে যাঁরা আটকে পড়েন, তৎক্ষণাৎ নৌকা বা অন্যান্য মাধ্যমে তাঁদের উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে আসা হয়। এবার জেলা প্রশাসনের মূল লক্ষ্যই ছিল, যতটা সম্ভব প্রাণহানি ঠেকাতে হবে। গতবার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কিংবা গাছ পড়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল অনেক। এবার একই রকম পরিস্থিতি যাতে না তৈরি হয়, তার জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসারদের স্পষ্ট এবং কড়া বার্তা দিয়ে রেখেছিলেন জেলাশাসক পি উলগানাথন। নিখুঁত পরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়নেই এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে প্রতিটি মানুষের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen