কোভিড রিপোর্টে দেরির জেরে বাড়ছে সংক্রমণ-শঙ্কা

কোথাও সাত তো কোথাও দশ দিন আগে নির্দিষ্ট ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে করোনা সন্দেহভাজনদের লালারসের নমুনা। কিন্তু রিপোর্ট আসার নাম নেই! এই অবস্থায় সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা প্রকাশ করে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা বলছেন, একা পরিযায়ী শ্রমিকে রক্ষা নেই, বিলম্ব দোসর! মুশকিল আসানের খোঁজে শনিবার সন্ধ্যায় বিভিন্ন জেলার প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিয়ো-বৈঠক করেন তাঁরা।

June 1, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

কোথাও সাত তো কোথাও দশ দিন আগে নির্দিষ্ট ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে করোনা সন্দেহভাজনদের লালারসের নমুনা। কিন্তু রিপোর্ট আসার নাম নেই! এই অবস্থায় সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা প্রকাশ করে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা বলছেন, একা পরিযায়ী শ্রমিকে রক্ষা নেই, বিলম্ব দোসর! মুশকিল আসানের খোঁজে শনিবার সন্ধ্যায় বিভিন্ন জেলার প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিয়ো-বৈঠক করেন তাঁরা।

স্বাস্থ্য ভবনের আধিকারিকদের একাংশ জানান, বিভিন্ন পর্যায়ে লকডাউন যেমন এগোচ্ছে, তার সঙ্গে তাল রেখে নমুনা পরীক্ষা নিয়ে সমস্যার ধরনও যাচ্ছে বদলে। একেবারে গোড়ায় এ রাজ্যে নমুনা পরীক্ষা সে-ভাবে হচ্ছে না বলে অভিযোগকে ঘিরে বিতর্ক বেধেছিল। সেই বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যায় চমকপ্রদ বৃদ্ধি ঘটিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু তা করতে গিয়ে জেলার একাধিক ল্যাবে নমুনার পাহাড় জমে তৈরি হয় নতুন সমস্যা। স্বাস্থ্য দফতরের খবর, মে-তে দেড় লক্ষ নমুনা পরীক্ষার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগোচ্ছিল স্বাস্থ্য ভবন। রবিবারের বুলেটিন বলছে, সেই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে দু’লক্ষের বেশি নমুনার করোনা পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে। এই কৃতিত্ব অর্জনের লক্ষ্যে জেলাগুলিকে রোজ নমুনা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল। এরই মধ্যে শত শত পরিযায়ী শ্রমিক রাজ্যে ফেরায় ল্যাবরেটরিতে নমুনার পাহাড় জমতে থাকে। বকেয়া নমুনার সংখ্যা কমানো গেলেও পরীক্ষার পরে রিপোর্ট আপলোডের সমস্যা বেড়েছে।

কোভিড রিপোর্টে দেরির জেরে বাড়ছে সংক্রমণ-শঙ্কা

সন্দেহভাজনদের নমুনার সঙ্গে সঙ্গে কাদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, সেই সংক্রান্ত তথ্য ল্যাবরেটরিগুলিতে পাঠানো হয়। নমুনা পরীক্ষার পরে সেগুলো মিলিয়ে তথ্য আপলোড করেন ডেটা এন্ট্রি অপারেটরেরা। স্বাস্থ্য দফতরের খবর, তথ্য না-মেলায় বেশ কিছু নমুনার পরীক্ষা হয়ে গেলেও তথ্য আপলোড করা হয়নি। তথ্য আপলোডের সমস্যা কতটা জটিল অবস্থায় রয়েছে, তা বোঝার জন্য একটি পরিসংখ্যানই যথেষ্ট। শনিবারের ভিডিয়ো-বৈঠকে উপস্থিত স্বাস্থ্য ভবনের কর্তাদের একাংশ জানান, ল্যাবরেটরিগুলি যে-তথ্য আপলোড করে, তাতে দেখা যাচ্ছে, এ-পর্যন্ত ১০ হাজার নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট বাকি রয়েছে। কিন্তু জেলা স্তর থেকে যে-হিসেব পাওয়া যাচ্ছে, তাতে নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট বকেয়া রয়েছে অন্তত ৪০ হাজার!

দ্রুত পরিস্থিতির বদল না-ঘটলে সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়বে বলে মনে করছে চিকিৎসক সংগঠনগুলি। অ্যাসোসিয়েশন অব হেল্‌থ সার্ভিস ডক্টর্সের সম্পাদক মানস গুমটা জানান, যে-সব পরিযায়ী শ্রমিককে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়রান্টিনে রাখা হচ্ছে, তাঁরা সকলেই যে আক্রান্ত, তা নয়। কিন্তু বহু ক্ষেত্রে পরিযায়ী শ্রমিকদের যেখানে রাখা হয়েছে, সেখানে অব্যবস্থার অভিযোগ উঠছে। এই বিষয়ে বিক্ষোভের জেরে সুরক্ষা বিধির দফারফা হয়ে যাচ্ছে। সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের সম্পাদক সজল বিশ্বাস বলেন, ‘‘এক সময় রিপোর্ট আসতে দেরি হলেও ফোনে তথ্য পাওয়া যেত। কিন্তু এখন এত বিপুল সংখ্যায় পরিযায়ী শ্রমিকেরা ফিরছেন যে, সেই পদ্ধতি মেনে চলা কঠিন। রিপোর্ট আসতে দেরি হলে যাঁরা সুস্থ, তাঁদেরও আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে।’’

নমুনা পরীক্ষা প্রক্রিয়ার অন্যতম দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘এখন যা পরিস্থিতি, তাতে রোজ অতিরিক্ত এক হাজার রিপোর্ট আপলোড করলে বকেয়ার পরিমাণ কমবে। সেই জন্য ডেটা এন্ট্রি অপারেটরদের প্রতিদিন তথ্য আপলোডের সংখ্যা বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে বাড়তি ডেটা এন্ট্রি অপারেটরও দেওয়া হবে।’’ শনিবারের বৈঠকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতরের খবর।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen