দলের অন্দরেই উঠছে ইস্তফার দাবি, অস্বস্তিতে নেপাল সরকার

পরিস্থিতি যে দিকে গড়াচ্ছে তাতে ওলিকে অবিলম্বে একটি পদ ছাড়তেই হবে। দলের তরফেও এই নিয়ে তার উপর তুমুল চাপ তৈরি করা হচ্ছে।

June 28, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

বেকায়দায় পড়েছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। বেশ কিছুদিন ধরেই তাঁর কাজে একেবারেই খুশি নয় নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি (এনসিপি)। তার উপর ‘বন্ধু’ ভারতের তিনটি এলাকা নেপালের বলে দাবি করে সংসদে নতুন রাজনৈতিক মানচিত্র পাস করিয়েছেন। নিজের গদি বাঁচাতে গিয়ে ওলির এই পদক্ষেপ তাঁকে আরও সঙ্কটে ফেলে দিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি যৌথভাবে এনসিপির চেয়ারম্যান পদে আছেন ওলি। আরেকজন চেয়ারম্যান হলেন ওলির ঘোর বিরোধী পুস্প কমল দহল তথা প্রচণ্ড। পরিস্থিতি যে দিকে গড়াচ্ছে তাতে ওলিকে অবিলম্বে একটি পদ ছাড়তেই হবে। দলের তরফেও এই নিয়ে তার উপর তুমুল চাপ তৈরি করা হচ্ছে।

গত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে দলের স্ট্যান্ডিং কমিটির উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ছিল। কিন্তু, বাড়িতে থাকলেও তিনি সেই বৈঠকে যোগ দেননি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনা থেকেই পরিষ্কার ওলির উপর কতটা চাপ তৈরি হয়েছে। উল্লেখ্য, ওই বৈঠকটি গত ৭ মে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ৪৪ সদস্যের কমিটিতে সংখ্যালঘু ওলি ছলে-বলে-কৌশলে বারবার তা পিছিয়ে দিয়েছেন। এদিকে, একাধিক ইস্যুতে ওলির কাজে তিতিবিরক্ত হয়ে উঠেছেন প্রচণ্ডও।

দলের অন্দরেই উঠছে ইস্তফার দাবি, অস্বস্তিতে নেপাল সরকার

নেপালের একটি নামজাদা সংবাদপত্র সূত্রে খবর, কোনও রাখঢাক না রেখেই ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন তিনি। প্রচণ্ড জানিয়েছেন, ওলিকে পাঁচ বছরের জন্য প্রধানমন্ত্রী পদ ছেড়ে তিনি বিরাট ভুল করেছেন। এই পরিস্থিতিতে দুটি রাস্তা খোলা আছে। হয় দু’জনকে আলাদা হয়ে যেতে হবে অথবা উদ্ভূত সঙ্কটের মোকাবিলা করতে হবে। এই মুহূর্তে আলাদা হওয়া সম্ভব নয়। তাই আমাদের পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজনে আত্মত্যাগও করতে হবে। কিন্তু, এই ‘আত্মত্যাগ’ বলতে প্রচণ্ড কী বলতে চেয়েছেন, তা নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। তাঁর গোষ্ঠীর নেতারাই ইতিমধ্যে ওলিকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরানোর দাবি তুলেছেন। সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ওলি এবং প্রচণ্ড’র মধ্যে সম্পর্ক এতটাই তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে যে, প্রায়ই বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ছেন তাঁরা।

ভারতের তিনটি এলাকাকে নিজেদের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে নেপালের সংসদের পূর্ণ সমর্থন পেয়েছিলেন ওলি। কিন্তু, সাংসদদের একটা বড় অংশের বক্তব্য, অকারণে বন্ধুদেশের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট না করে, গোটা বিষয়টি আরও ভালোভাবে সমাধান করা যেত। পাশাপাশি, করোনা সঙ্কট মোকাবিলা করা নিয়েও কঠোর সমালোচনা মুখে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এর উপর যোগ হয়েছে, তাঁর মাত্রাতিরিক্ত চীন প্রীতি। যা একেবারেই ভালো চোখে দেখছেন না নেপালের বিরাট অংশের মানুষ। এরমধ্যেই নেপালের বেশ কয়েকটি গ্রাম চীন দখল করে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও নেপালের বিদেশ মন্ত্রক সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। অভিজ্ঞ মহলের মতে, যেভাবে একাধিক ইস্যুতে ঘরে বাইরে চাপের মুখে পড়ছেন ওলি, তাতে কতদিন তিনি মসনদ ধরে রাখতে পারবেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen