জলপাইগুড়িতে বেহাল রাস্তা, ভোগান্তি
সেইসঙ্গে নদীবাঁধে বিশাল আকারের রেইনকাট হওয়ায় বাইক চলাচলের ক্ষেত্রেও সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জলপাইগুড়ির পাহাড়পুরের কাছে ২৭ নম্বর জাতীয় সড়কের যানজট এড়াতে ব্যবহৃত বিকল্প রাস্তা বেহাল হয়ে পড়েছে। জুবিলি পার্ক থেকে বালাপাড়া পর্যন্ত সংযুক্ত সড়কের কাজ সম্পূর্ণ না হলেও বড়, মাঝারি যানবাহন, বালিবোঝাই গাড়ি যাওয়ায় রাস্তার উপর গর্তগুলি বড় বড় ডোবা হয়ে গিয়েছে। সেইসঙ্গে নদীবাঁধে বিশাল আকারের রেইনকাট হওয়ায় বাইক চলাচলের ক্ষেত্রেও সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জলপাইগুড়ি শহরের ব্যস্ততম পিডব্লিউডি মোড় থেকে দিনবাজার, পাহাড়পুর হয়ে বালাপাড়া মোড় থেকে তিস্তা সেতু পর্যন্ত চিরাচরিত রাস্তার উপর চাপ কমাতে তিস্তা ও করলা নদীকে দুই পাশে রেখে বাঁধ বরাবর বিকল্প সড়ক তৈরির পরিকল্পনা ২০১৮ সালে নিয়েছিল সেচ দপ্তর। প্রায় পাঁচ কিমি রাস্তা এবং ফুটপাথ তৈরি করতে খরচ ধরা হয়েছিল ৭ কোটি টাকা। রাস্তার সঙ্গে বাঁধের কিছু জায়গায় সংস্কারেরও পরিকল্পনা ছিল। ২০১৯ সালে বিকল্প রাস্তার কাজ শুরু করে সেচ দপ্তর। জলপাইগুড়ি শহরের জেলা শাসকের অফিসের সামনেই জুবিলি পার্ক। এই পার্কের সামনেই করলা নদীর বাঁধ। এই বাঁধ একদিকে করলা, অন্যদিকে তিস্তা নদীর জল থেকে বর্ষার সময় শহরকে রক্ষা করে। জুবিলি পার্ক থেকে এই রাস্তা বাঁধ বরাবর গিয়ে পাহাড়পুরকে বাইপাস করে বালাপাড়া মোড় পর্যন্ত গিয়েছে। দূরত্ব পাঁচ কিমি। জলপাইগুড়ি শহরের মধ্যে এই মুহূর্তে শান্তিপাড়া দিয়ে কদমতলা হয়ে সমস্ত যানবাহন চলাচল করে।

অন্যদিকে, গাড়িগুলি পিডব্লুডি মোড় থেকে পাহাড়পুর হয়ে শহরের বাইরে যায়। যানবাহনগুলি টাউন ক্লাবের সামনে থেকে বাঁধের এই রাস্তা ধরেই সরাসরি বালাপাড়া মোড়ে উঠে তিস্তা সেতু দিয়ে ডুয়ার্সে যেতে পারে। কিন্তু পাহাড়পুর থেকে তিস্তা সেতু এবং দোমোহনি মোড় পর্যন্ত ২৭ নম্বর জাতীয় সড়ক দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল হয়ে আছে। যানজট পাহাড়পুর মোড় থেকেই শুরু হয়। ফলে যাঁরা শহর থেকে তিস্তা সেতু দিয়ে ডুয়ার্সে যাবেন, তাঁরা বালাপাড়ার এই বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করছেন। স্থানীয় বাসিন্দা বিশু তন্ত্রের অভিযোগ, মাঝারি ওজনের যানবাহন চলাচলে আপত্তি নেই। কিন্তু বড় পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করাতেই বাঁধে রেইনকাট এবং বড় বড় গর্ত হয়ে ডোবার আকার নিয়েছে। এখন বাইক চলাচল করাই কঠিন হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা দিবাকর বিশ্বাস বলেন, জাতীয় সড়ক খারাপ থাকায় প্রতিদিন পাহাড়পুর থেকে যানজট হচ্ছে। ফলে বড় গাড়িও বালাপাড়ার বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করায় বাঁধের অবস্থা ও রাস্তা খারাপ হয়ে গিয়েছে।
সেচ দপ্তরের জলপাইগুড়ি বিভাগের কার্যনিবাহী বাস্তুকার জে পি পান্ডে বলেন, জুবিলি পার্ক থেকে বালাপাড়া পর্যন্ত পাঁচ কিমি রাস্তা বিটুমিনাস দিয়ে তৈরি হবে। নদীবাঁধের উপর গতবছর বালি, পাথর, মাটি দিয়ে প্রাথমিক রাস্তা করা হয়। যদিও গতবছর লোকসভা নির্বাচনের ব্যস্ততা, তারপর বর্ষা, পুজো এবং এই বছর লকডাউনে কাজ করা যায়নি। বর্ষা বিদায় হলে রাস্তার কাজ সম্পূর্ণ করা হবে। বাঁধেরও সংস্কার করা হবে। রাস্তার দুপাশে পায়ে হাঁটার জন্য ফুটপাথ তৈরি করা হবে। বাঁধের দুপাশে ঢাল করা হবে। ভারী যানবাহন চলাচল আটকাতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন। জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য সন্দীপ মাহাতো বলেন, ২০১৮ সালে পুরসভা থেকে রাজ্য সরকারের কাছে শহরের ব্যস্ততম রাস্তায় যানজট কমাতে বিকল্প এই সড়ক তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে বেহাল হয়ে পড়া এই বিকল্প সড়ক সাধারণের যাতায়াতের সুবিধার কথা চিন্তা করে মেরামত করা উচিত।