গোয়ায় সরকার গড়বে তৃণমূলই, বিজেপিকে ওপেন চ্যালেঞ্জ অভিষেকের

পাশাপাশি বিজেপি-কে নিশানা করে দেগেছেন একের পর এক তোপ। ডাক দিয়েছেন কোচবিহার থেকে বিজেপি-কে উৎখাতের।

October 25, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

তিন মাসের মধ্যে গোয়ায় সরকার গঠন করবে তৃণমূল। দিনহাটায় উপনির্বাচনের প্রচার মঞ্চ থেকে হুঙ্কার দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী দিনে তৃণমূলের সংগঠনকে সর্বভারতীয় স্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার নীল নকশাও তুলে ধরেছেন অভিষেক। পাশাপাশি বিজেপি-কে নিশানা করে দেগেছেন একের পর এক তোপ। ডাক দিয়েছেন কোচবিহার থেকে বিজেপি-কে উৎখাতের।

সোমবার দুপুরে শিলিগুড়িতে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে, একই সময়ে দিনহাটায় ভোট প্রচার সারছিলেন অভিষেক। দিনহাটার উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী উদয়ন গুহের সমর্থনে জনসভা করেন তিনি। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে সংগঠনকে আরও কয়েকটি রাজ্যে ছড়িয়ে দেওয়া তৃণমূলের পাখির চোখ। সেই ইচ্ছার কথা জনসভায় জানান অভিষেক। বলেন, ‘‘দিনহাটায় উদয়ন গুহ নন, প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেশের মানুষ এই ফলের দিকে তাকিয়ে আছেন। উপনির্বাচনের ফল ৪-০ হবে। তবে জয়ের ব্যবধান বাড়াতে হবে। কোচবিহার থেকে বিজেপি-কে উৎখাত করতে হবে।’’ এর সঙ্গেই তিনি জুড়ে দেন, ‘‘আমরা ত্রিপুরায় গিয়েছি। গোয়াতেও ঢুকেছি। আরও ৫-৭টা রাজ্যে যাব। এটা কী মাস? অক্টোবর। সামনে নভেম্বর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি। হাতে তিন মাস হাতে সময় আছে। গোয়ায় বিধানসভা আসন ৪০টি। দল আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে। তিন মাসে গোয়ায় জোড়াফুল ফুটবে। ওখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল সরকার প্রতিষ্ঠা করবে। আপনারা লিখে নিন। এর পর ত্রিপুরা, মেঘালয়, অসম এবং উত্তরপ্রদেশ-সহ একাধিক রাজ্যেও আমরা যাব। তার কারণ বাংলা পথ দেখিয়েছে। দেশকে পথ দেখাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’

অন্য সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তৃণমূলের ‘ফারাক’ আছে বলে জানিয়েছেন অভিষেক। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কথায়, ‘‘দেশে বহু রাজনৈতিক দল আছে। বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম, যদিও খাতায়-কলমে সর্বভারতীয় দল। মাঠে ময়দানে নেই, হাওয়া…জিরো। এনসিপি জাতীয় দল। তেমন তৃণমূলও সর্বভারতীয় দল। কিন্তু এদের মধ্যে পার্থক্য কী? যত রাজনৈতিক দল আছে সকলকে ইডি, সিবিআই দিয়ে একটু ধমকে চমকে ঘরে ঢুকিয়ে দিয়েছে। কিন্তু তৃণমূল বিশুদ্ধ লোহা। যত তাতাবে, যত পোড়াবে, যত প্রহার করবে, তত বিশুদ্ধ হবে। আমাকেও তো কত ধমকেছে, চমকেছে। দিল্লিতে ৯ ঘণ্টা জেরা করেছে। ভেবেছে কংগ্রেসের মতো বসে যাবে। কিন্তু আমরা বিশ্বাসঘাতকের দল নই।’’

গোসাবা, খড়দহ এবং শান্তিপুর, দিনহাটার উপনির্বাচনের মধ্যে ‘পার্থক্য’ দেখছেন অভিষেক। বিজেপি-কে ঝাঁঝালো আক্রমণ শানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘গোসাবা এবং খড়দহে উপনির্বাচন হচ্ছে তার কারণ তৃণমূলের সৈনিকরা ওই কেন্দ্রে জিতেছিলেন। কিন্তু মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। কিন্তু শান্তিপুর এবং দিনহাটায় উপনির্বাচন হচ্ছে কেউ সাংসদ থেকে মন্ত্রী হবেন বলে, নিজেদের রাজনৈতিক লালসা চরিতার্থ করবেন বলে মানুষের ভালবাসাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। ওঁরা সাংসদ হবেন, মন্ত্রী হবেন। তা হলে দাঁড়ালেন কেন? ভেবেছিলেন, বিজেপি ক্ষমতায় আসবে। ক্ষমতায় এলে মন্ত্রী হবেন।’’

বিজেপি-কে করোনার মতো ‘ভাইরাস’ আখ্যা দিয়েছেন অভিষেক। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘করোনা ভাইরাসের টিকা কোভিশিল্ড। আর বিজেপি ভাইরাসের টিকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’ পেট্রোল, ডিজেল, সরষের তেল, পোস্ত-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে অভিষেক তোপ দেগেছেন কেন্দ্রকে। পাশাপাশি দেশের অর্থনীতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। নাম না করে বিঁধেছেন বিজেপি-র সর্ব ভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও। কটাক্ষের সুরে অভিষেক বলেন, ‘‘যিনি সোনার বাংলা বানাবেন বলেছিলেন, আর যাঁরা গোরুর দুধ থেকে সোনা পাওয়া যায় বলেছিলেন, তাঁদের খেলা শেষ। গল্প শেষ। তাঁকেই তো আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কালীপুজোয় শ্যামাপোকা হয়। কালীপুজো মিটে গেলে আর ওই পোকা দেখতে পাওয়া যায় না। বিজেপি-ও তেমনই শ্যামাপোকা। নির্বাচনের সময় আসে। তার পর আর দেখতে পাওয়া যায় না। বিজেপি-র নেতা বলছেন, বাংলাদেশের ঘটনায় লাভ হবে। বিজেপি-র ভোটের ব্যবধান তিন গুণ বাড়বে। কে বলছেন? রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। বাংলাদেশের হিন্দুদের কষ্ট ভাঙিয়ে রাজনীতি করতে চান। আপনাদের লজ্জা করে না?’’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen