বিফলে গেল পূর্ব ভারতের প্রথম সফল ফুসফুস প্রতিস্থাপন, করোনায় মৃত্যু গ্রহীতার

চিকিৎসকদের কথায়, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ এবং রাইট ভেন্ট্রিকুলার বিকল হওয়ার জেরেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।

September 25, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

পূর্ব ভারতের প্রথম ফুসফুস প্রতিস্থাপনের সাক্ষী হয়েছিল কলকাতা। কিন্তু, সফল হল না সেই প্রতিস্থাপন। জীবনযুদ্ধে হার মানলেন পাটুলির বাসিন্দা দীপক হালদার। শুক্রবার রাত ৯টা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে। চিকিৎসকদের কথায়, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ এবং রাইট ভেন্ট্রিকুলার বিকল হওয়ার জেরেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।

উল্লেখ্য, তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী দীপক হালদার নামক ৪৬ বছরের এক ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১০৩ দিন ধরে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানে তাঁর প্রায় ৯০ দিন কেটেছে একমো-তে (এক্সট্রা-কর্পোরিয়াল মেমব্রেন অক্সিজেনেশন)। হাসপাতাল সূত্রে খবর, দীপক হালদারের বাম ফুসফুসটি সম্পূর্ণ বিকল হয়ে গিয়েছিল। ফলে চাপ পড়ছিল ডান ফুসফুসের উপর। এরপরেই ফুসফুস প্রতিস্থাপনের কথা চিন্তা করা হয়।

এরপরেই মরণোত্তর অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া সুরাটের এক পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তির ফুসফুস প্রতিস্থাপন করা হয় দীপকের দেহে। উল্লেখ্য, সুরাটের ইউনাইটেড গ্রিন নামে একটি হাসপাতালে ব্রেন ডেথ হয়েছিল এক ব্যক্তির। এরপরেই তাঁর ফুসফুস প্রতিস্থাপনের জন্য দীপককে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের একটি দল সুরাটে পৌঁছয়। ব্রঙ্কোস্কোপি, বায়োপসি-সহ নানা পরীক্ষা করা হয়। এরপরেই জানা যায়, ফুসফুসটি প্রতিস্থাপনের যোগ্য। ফুসফুসটি নিয়ে আসা হয় কলকাতায়। মুকুন্দপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে হয় এই প্রতিস্থাপন। প্রায় সাত ঘণ্টা সময় ধরে এই প্রতিস্থাপন চলে। চিকিৎসক কুণাল সরকারের নেতৃত্বে হয় এই অস্ত্রোপচার।

প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছিল প্রতিস্থাপনটি সফল হয়েছে। কিন্তু, অস্ত্রোপচার পরবর্তী কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে ওই ব্যক্তির শরীরে এমনই আশঙ্কা করছিলেন চিকিৎসকরা। এছাড়া দীপক দীর্ঘ সময় একমোতে ছিলেন। ফলে তাঁর শরীরে রক্ষক্ষরণ হতে পারে, তৈরি হচ্ছিল এমনই সম্ভাবনা। তাঁকে সুস্থ করে তোলার যাবতীয় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু, জীবনযুদ্ধে হার মানেন তিনি।

উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গে মাত্র দু’টি হাসপাতালকে ফুসফুস প্রতিস্থাপনের জন্য লাইসেন্স দেওয়া রয়েছে। তিন বছর আগে পিজি হাসপাতালকে ফুসফুস প্রতিস্থাপনের ছাড়পত্র দেওয়া হলেও রোগীর অভাবে সেখানে প্রতিস্থাপন আজ পর্যন্ত হয়নি। এদিকে,অন্য লাইসেন্সটি পায় শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতাল। করোনা পরিস্থিতিতে ফুসফুস প্রতিস্থাপনের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। গত এক বছরে গোটা দেশে প্রতি মাসে ১২ থেকে ১৫টি করে ফুসফুস প্রতিস্থাপন হয়েছে,সূত্রের খবর এমনটাই।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen