ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে বিতর্কে জোকোভিচ,দেশ ছেড়ে পরিবারসহ গ্রিসে বসবাস

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৬:৩০: ২৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী টেনিস কিংবদন্তি নোভাক জোকোভিচ নীরবে সার্বিয়া ছেড়ে তার পরিবারকে নিয়ে গ্রিসে গিয়ে বসবাস শুরু করেছেন। ব্রিটিশ দৈনিক ডেইলি মেইল-এর একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, সার্বিয়াতে বাড়তে থাকা রাজনৈতিক চাপ এবং সরকারের সমর্থকদের কটাক্ষের মুখে জোকোভিচ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
২০২৪ সালের প্যারিস অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জেতার পর থেকেই জোকোভিচ সার্বিয়ার বিভিন্ন ছাত্র আন্দোলনের প্রতি প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়ে আসছেন। ডিসেম্বর মাসে নোভি সাদ শহরের একটি রেলস্টেশনে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ১৬ জনের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনার পর থেকেই সার্বিয়ায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়, যার নেতৃত্বে ছিল দেশের তরুণ প্রজন্ম। ছাত্রদের পাশে দাঁড়াতে জোকোভিচ সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা পোস্ট করেন, এমনকি অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের ট্রফি এক আহত ছাত্রকে উৎসর্গ করেন। বেলগ্রেডের একটি বাস্কেটবল ম্যাচে তিনি পরেছিলেন ‘স্টুডেন্টস আর চ্যাম্পিয়নস’ লেখা একটি সোয়েটার।
এই সাহসী অবস্থানের কারণে জোকোভিচ একসময়ের জাতীয় নায়ক থেকে এখন দেশের ভেতরে বিতর্কিত ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন। মহামারীর সময় সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেক্সজান্ডার ভুচিচ তাকে ‘সার্বিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ দূত’ বলে অভিহিত করেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে প্রো-ভুচিচ মিডিয়াগুলো তাকে সমালোচনায় তুলোধোনা করছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, জোকোভিচ তার ছেলে স্টেফান (১১) এবং মেয়ে তারা (৮)-কে এথেন্সের বিখ্যাত সেন্ট লরেন্স স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন। তিনি এথেন্সে একটি বাড়ি কিনেছেন এবং ভবিষ্যতে গ্রিসের ‘গোল্ডেন ভিসা’ প্রোগ্রামের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতিও নিতে পারেন।
জোকোভিচের এই সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়েছে তার ব্যবসায়িক উদ্যোগেও। তাদের পরিবারের আয়োজিত বেলগ্রেড ওপেন টেনিস টুর্নামেন্ট এ বছর থেকে গ্রিসে অনুষ্ঠিত হবে। আয়োজকদের ভাষ্য, সার্বিয়ায় এখন টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য পর্যাপ্ত ‘পরিস্থিতি’ নেই। তবে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি অনুকূলে এলে আবারও বেলগ্রেডে ফেরানো হবে।
জোকোভিচ সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন,
“যুবকদের শক্তি এবং তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রতি আমার অগাধ বিশ্বাস রয়েছে। তাদের কণ্ঠস্বর শোনা উচিত। সার্বিয়ার সবচেয়ে বড় শক্তি হলো এর শিক্ষিত তরুণ প্রজন্ম। আমাদের সবার প্রয়োজন পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং সম্মান। আমি তোমাদের সঙ্গে আছি।”