সাঁওতাল সমাজের আরাধ্য অপদেবতা গদ্রবঙ্গার সম্পর্কে জানেন?
দীর্ঘদিন ধরে, গদ্রবঙ্গা সাঁওতাল সমাজে পূজিত হয়ে আসছেন। সাঁওতালরা ভারত , বাংলাদেশ ও নেপালে ছড়িয়ে রয়েছে।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: যুগ যুগ ধরে মানুষ দেবতার পুজো করে আসছেন। কিন্তু জনজাতি তথা সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর মধ্যে আজও অপদেবতাদের আরাধনার রীতি রয়েছে। তেমনই এক অপদেবতা হলেন গদ্রবঙ্গা। অপদেবতা হলেও গদ্রবঙ্গার ভক্তের সংখ্যা প্রচুর। দীর্ঘদিন ধরে, গদ্রবঙ্গা সাঁওতাল সমাজে পূজিত হয়ে আসছেন। সাঁওতালরা ভারত , বাংলাদেশ ও নেপালে ছড়িয়ে রয়েছে।
সাঁওতাল জনজাতির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এই গদ্রবঙ্গাকে অনেকেই গুদ্রা বঙ্গা বা কুদ্রা বঙ্গা বলেন। গদ্রবঙ্গার মূর্তি সাঁওতালরা নিজের হাতে বানান, যা দেখতে অনেকটা ছোট বাচ্চাদের মতো হয়। আদপে মূর্তিটিকে এক বিশেষ ধরণের পুতুল বলা যেতে পারে। মূর্তির উচ্চতা তিন ফুটের মতো হয়। সাঁওতালরা গদ্রবঙ্গাকে ছোট বাচ্চার মতই লালন-পালন করেন।
সাঁওতালদের বিশ্বাস, গদ্রবঙ্গা তুষ্ট হলেই প্রচুর ধনদৌলত মিলতে পারে। এও শোনা যায়, অতীতে তিনি নাকি অনেক সাঁওতালদের তাঁর ধনদৌলত দান করে ধনী করে দিয়েছেন। আরেকটি কিংবদন্তি অনুসারে, গদ্রবঙ্গা অন্যের বাড়ি থেকে সোনা এবং ধন-সম্পদ চুরি করে নিজের পালিত ঘরের মালিককে দেন।
তবে বলা হয়, গদ্রগঙ্গাকে তুষ্ট করা সহজ নয়। শোনা যায়, তিনি ধন সম্পদের বদলে বাড়ির ছোট ছোট সন্তানদের মেরে ফেলে। শিশুদের আত্মার শক্তি শুষে নিয়ে নিজে আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠেন ওই অপদেবতা। বাড়ির মালিক গদ্রবঙ্গার চাহিদা পূরণ না করলেই, তিনি ক্ষতি ও ধ্বংসের লীলা আরম্ভ করে দেন। তা সত্ত্বেও ধনী হওয়ার লোভে, সাঁওতালরা গদ্রবঙ্গার আরাধনা করে চলেছেন।