মাঘের শীতে জমজমাট হাঁড়ি মালসার মেলা, জানেন কোথায় বসে?

শতাব্দী প্রাচীন এই মেলাটি আগে একদিনের ছিল, পরে গ্রামবাসীদের উদ্যোগে তা বেড়ে পাঁচ দিন করা হয়।

January 27, 2024 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: রাঢ়বাংলার অন্যতম প্রাচীন মেলাগুলির মধ্যে অন্যতম ব্রহ্মদৈত্যর মেলা৷ প্রতিবছর মকরসংক্রান্তির পরের দিন বসে এই মেলা৷ স্থানীয়দের কাছে এই মেলা সাধারণত মাঘ মেলা বা হাঁড়ি মালসার মেলা নামেই পরিচিত। তবে কেন এই মেলাকে ‘ব্রহ্মদৈত্যের মেলা’ বলা হয়? সে নিয়ে অনেক গল্প কাহিনী ছড়িয়ে রয়েছে।

মনে করা হয়, ব্রহ্মদৈত্য হলেন সেই ভূত যে বাংলার গাছে গাছে বাস করে। রূপকথা অনুযায়ী এই ভূত খুবই বুদ্ধিমান এবং বয়জ্যেষ্ঠ। ঠিক তেমনই এই অঞ্চলের অন্তজ্য শ্রেনীর মধ্যে দুমকো বা ঝুমকো ঠাকুরের অনেক মিল পাওয়া যায়। তিনিও গাছে বাস করেন আর ভূতের প্রেতের মতোই রেগে গেলে মানুষ ধরে খান।

শতাব্দী প্রাচীন এই মেলাটি আগে একদিনের ছিল, পরে গ্রামবাসীদের উদ্যোগে তা বেড়ে পাঁচ দিন করা হয়। হাঁড়ি, মালসা, ফুলদানি, সড়া, ঘট, পাতনা থেকে শুরু করে যাবতীয় মাটির জিনিস এই মেলায় বিক্রি হয়। এছাড়াও সমস্ত রকম মনোহারী জিনিসপত্র, কাঁচা সবজিও পাওয়া যায় এই মেলায়। এমনকি এই মেলায় বড় বড় খাবারের দোকানও বসে। মেলা উপলক্ষ্যে পুতুল নাচ, পঞ্চরস, সার্কাস, লেটো গান প্রভৃতি অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়।

এই মেলার বিশেষত্ব, এখানে বেশিরভাগ মাটির জিনিসপত্র বেচা-কেনা হয়, যা প্রায় ৬০-৬৫ বছর ধরে ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। মেলায় বিক্রি হয় ঘট, সরা,মালসা, পাতনা, হাঁড়ি,কলসী এমন নানান পোড়ামাটির গৃহস্থালি জিনিসপত্র।

কথিত আছে, অনেক বছর আগে ইন্দ্রনারায়ণ রায় ছিলেন নগরীর জমিদার। তখন ওই এলাকা ছিল ঘন বনে ঢাকা। সেই সময় তারাপীঠ থেকে ময়ূরাক্ষী নদী পেরিয়ে বক্রেশ্বরের দিকে যেতেন সাধু সন্ন্যাসীর দল। এই বট গাছের তলায় বসত আখড়া। সেই স্থানেই বর্তমানে মেলা বসে।

মাঘ মাসের প্রথম দিনে বীরভূমের মহম্মদবাজারের সেকেড্ডা পঞ্চায়েতের দীঘলগ্রাম মাঠে ব্রহ্মদৈত্যর পুজো উপলক্ষে বসে মেলা। মেলা চলে পাঁচ দিন। বহু পুরনো বটগাছকে ঘিরে মেলাটি বসে। জায়গাটি ব্রহ্মচারীর আস্তানা নামে পরিচিত। বহু দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার লোকের সমাগম হয় এখানে। ঝাড়খণ্ড থেকেও মানুষ আসেন এই মেলায় মাটির তৈরি জিনিস কিনতে। সিউড়ি ১ ব্লক ছাড়াও এই মেলা দেখতে পাওয়া যায় ময়ূরেশ্বরের ঢেকা, শিবগ্রাম, সাঁইথিয়ার ভ্রমরকোল, রক্ষাকালীতলা, লাভপুরের লায়েকপুর, নানুরের থুপসড়া-সহ বিভিন্ন জায়গায়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen