বছরের শেষ দিনে ভুলেও অনলাইনে কিছু অর্ডার করবেন না, কেন জানেন?

December 26, 2025 | 2 min read

Authored By:

Saikat Saikat

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৫:০০: বছরের শেষ মানেই উৎসব, আনন্দ-আয়োজন। খাওয়াদাওয়া, কেনাকাটা সব মিলিয়ে জমিয়ে বছরকে বিদায় জানানো। আর এখন উৎসব, পার্টি আয়োজনের ভরসা অনলাইন। অনলাইন অর্ডার দিলেই মিনিটের মধ্যে দুয়ারে হাজির হয় জিনিস। কিন্তু বছরের শেষ দিন ভুলেও কিছু অর্ডার করবেন না। কারণ ৩১ ডিসেম্বর দেশজুড়ে বনধের ডাক দিয়েছেন ডেলিভারি ও গিগ কর্মীরা (Gig Workers)। সুইগি (Swiggy), জ্যোমাটো (Zomato), জেপ্টো (Zepto), ব্লিঙ্কিট (Blinkit), অ্যামাজন (Amazon), ফ্লিপকার্ট (Flipkart)-সহ একাধিক ই-কমার্স ও কুইক-কমার্স প্ল্যাটফর্মে পরিষেবা মিলবে না ওই দিন।

বড়দিনেও তাঁরা ধর্মঘট ডেকেছিল। বৃহস্পতিবার ছিল ধর্মঘটের প্রথম দিন। দেশের বহু অংশে সম্পূর্ণ থমকে গিয়েছিল অনলাইন পরিষেবা। দিল্লি-সহ দেশের অনেক জায়গায় অ্যাপে খাবার কিনতে পারেননি আম জনতা। পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়েছে দিল্লি, রাজধানী সংলগ্ন অঞ্চল, গুরুগ্রাম, হায়দ্রাবাদ, তেলঙ্গানা, চেন্নাইয়ে। তবে কলকাতা-সহ বাংলায় ধর্মঘটের প্রভাব তেমন পড়েনি বলেই খবর। জানা যাচ্ছে, বড়দিনে ৪০ হাজার ডেলিভারি কর্মী ধর্মঘটে শামিল হয়েছেন। ৫০% পরিষেবা ধাক্কা খেয়েছে। ৩১ ডিসেম্বর আরও বেশি কর্মী যোগ দেবেন। এবার প্রভাব পড়বে বেশি।

ডেলিভারি কর্মীদের অভিযোগ, উৎসবের মরশুমে শেষ মুহূর্তের ডেলিভারি সামলাতে গিয়ে তাঁদের উপর প্রচণ্ড চাপ তৈরি করা হচ্ছে। দীর্ঘ সময় কাজ করানো হলেও ন্যায্য পারিশ্রমিক মিলছে না। ‘কুইক সার্ভিস’ অর্থাৎ দশ মিনিটে পণ্য পৌঁছনোর পরিষেবাতে একটু বেশি সময় লাগলে চাপে জরিমানার বোঝা। কোনও মতে গন্তব্যে পৌঁছতে গিয়ে প্রাণও চলে যায়। কম মজুরি, নিরাপত্তাহীন কাজের পরিবেশ, সামাজিক সুরক্ষার অভাব, অতিরিক্ত সময় ধরে কাজ ইত্যাদি দাবিতে দু’দিনের ধর্মঘট ডেকেছে তেলেঙ্গনা গিগ অ‍্যান্ড প্ল্যাটফর্ম ওয়াকার্স ইউনিয়ন। সমর্থন করেছে ইন্ডিয়ান ফেডারেশন অব অ্যাপ বেসড ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স।

তাদের অভিযোগ, আয় কমছে, অথচ কাজের চাপ বাড়ছে। সামান্য অভিযোগ বা টার্গেট পূরণ না হলেই আইডি ব্লক (ID Blocking) করে দেওয়া হচ্ছে, যার ফলে রাতারাতি কাজ হারাচ্ছেন বহু কর্মী। ধর্মঘটে সামিল গিগ শ্রমিকদের দাবি, কোনও কারণ ছাড়া কর্মীদের বসিয়ে দেওয়া চলবে না। পিএফ-বিমার মতো সুরক্ষা দিতে হবে। কর্মক্ষেত্রে সম্মান, নিরাপত্তা, বিশ্রামের সময়, ছুটি, অভিযোগ করার উপযুক্ত ব্যবস্থা, স্বচ্ছ পারিশ্রমিক ইত্যাদিরও দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। ইউনিয়নগুলির আরও দাবি, অ্যাপগুলি যে ভাবে নিজেদের সুবিধার্থে ডেলিভারি পার্টনারদের ব্যবহার করে, তার বিরুদ্ধেও আন্দোলন করতে হবে। সূত্রের খবর, ২৫ ডিসেম্বরের তুলনায় ৩১ ডিসেম্বর আরও জোরদার আন্দোলনের পরিকল্পনা রয়েছে।

পাশাপাশি নির্দিষ্ট কাজের সময়, বাধ্যতামূলক বিশ্রামের সুযোগ, টেকনিক্যাল সাপোর্ট, চাকরির নিশ্চয়তা, স্বাস্থ্য বিমা (Health Insurance), দুর্ঘটনা কভারেজ (Accident Coverage) ও পেনশনের (Pension) মতো দীর্ঘমেয়াদি সামাজিক সুরক্ষার দাবিও তুলেছেন তাঁরা। সরকারকে হস্তক্ষেপের আবেদন জানানো হয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, শুধু কর্পোরেট প্ল্যাটফর্মের উপর নির্ভর না-করে গিগ কর্মীদের অধিকার রক্ষায় স্পষ্ট নীতি দরকার। ধর্মঘটের জেরে উৎসবের মরশুমে অনলাইন অর্ডার নির্ভর শহুরে জীবনে বড় ধাক্কা আসতে চলেছে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen