ধুন্ধুমার JNU-তে, উমর খালিদ-শারজিলদের আদলে রাবণের কুশপুতুল! সমালোচনা করলেই কি রাবণ হতে হবে মোদীর ভারতে?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১২:৫৬: দশেরা (Dussehra celebration) ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (Jawaharlal Nehru University)। অভিযোগ, জেএনইউ প্রাক্তনী উমর খালিদ এবং শারজিল ইমামের (Umar Khalid & Sharjeel Imam) আদলে রাবণের কুশপুতুল তৈরি করেছিল এবিভিপি (ABVP)। তারপরই দশেরার মিছিলে পাথর ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। এবিভিপির অভিযোগ, সেখানে হামলা চালায় বাম সংগঠনগুলি। বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলি দশেরার মিছিলে পাথর ছুড়েছে। আহত হয়েছেন বহু পড়ুয়া। এখানেই প্রশ্ন উঠছে, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললেই কি জুটবে বারণ তকমা?
বৃহস্পতিবার রাতে জেএনইউ-তে এবিভিপি-র তরফে মা দুর্গার বিসর্জন ও দশেরার ‘রাবণ-দহন’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই এবিভিপি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলির সংঘর্ষে পাথর ছোড়া হল, দেখানো হল জুতো। জেএনইউ-এর প্রাক্তনী উমর খালিদ এবং শারজিল ইমামকে রাবণ হিসাবে চিত্রিত করায় এবিভিপি-র বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মকে ব্যবহার করার অভিযোগ তুলেছে বাম সংগঠনগুলি। দুই শিবিরই বিবৃতি দিয়েছে।
AVBP-র দাবি, আইসা, এসএফআই এবং ডিএসএফ সহ বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ সবরমতী টি-পয়েন্টের কাছে বিসর্জনের শোভাযাত্রায় হামলা চালায়। অনেক ছাত্রছাত্রী আহত হয়েছেন। AVBP-র জেএনইউ সভাপতি বলেন, ‘‘এটা শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠানেই হামলা নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উৎসবের ঐতিহ্যে, পড়ুয়াদের ভাবাবেগে আঘাত। এই আগ্রাসন কোনও ভাবেই সহ্য করবে না এবিভিপি।’’ অন্যদিকে বামপন্থীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলাম বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা করছে এবিভিপি। আইসা বিবৃতিতে জানিয়েছে, উমর, শারজিলদের রাবণ হিসাবে দেখিয়ে ‘রাবণ-দহন’ করছিল এবিভিপি। রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের জন্য এভাবে ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগানো হচ্ছে। কেন রাবণ হিসাবে নাথুরাম গডসে, রাম রহিমদের বাছা হল না, প্রশ্ন তুলছে আইসা।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে সিএএ বিরোধী আন্দোলন এবং দিল্লি হিংসায় ষড়যন্ত্রের অভিযোগে উমর, শারজিলদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। উমর ও শারজিলের বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে (UAPA) মামলা করেছিল দিল্লি পুলিশ। গত পাঁচ বছর ধরে তাঁরা জেলবন্দি। দেখা যাচ্ছে, মোদীর ভারতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হলেই জেলবন্দি হতে হবে। সামাজিকভাবে জুটবে রাবণ তকমা। সম্প্রতি লাদাখের দাবিতে সরব হয়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন সোনম ওয়াংচুক। তাঁকেও UAPA আইনে গ্রেপ্তার করেছে কেন্দ্র। এবার কি আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের নাম উজ্জ্বল করা সোনমকেও রাবণের বেশে দেখা যাবে?