খরচ বেড়ে যাওয়ায় মোদীর সরকারের পরিকাঠামো প্রকল্পের বাস্তবায়ন বিশ বাঁও জলে

বারংবার প্রকল্প সমাপ্তির সময়সীমা বাড়িয়ে দিতে হচ্ছে।

March 20, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

পরিকাঠামো প্রকল্পগুলির উপর নির্ভর করেই অর্থনীতি থেকে কর্মসংস্থানের মোড় ঘোরানোর স্বপ্ন দেখছে মোদী সরকার। অথচ বিলম্বের দরুণ খরচ বেড়ে যাওয়ায় সেই প্রকল্পগুলির ভবিষ্যৎ আপাতত অনিশ্চিত। সাড়ে ৪ লক্ষ কোটি টাকার দেড় হাজারের বেশি প্রকল্প রূপায়ণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। বিগত কয়েক বছর ধরে বাজেটে সবথেকে বেশি জোর দেওয়া হয়েছিল, সড়ক, সেতু, রেলপথ নির্মাণের মতো পরিকাঠামো নির্মাণে। লক্ষ্য একটাই। পরিকাঠামো নির্মাণের মধ্যমেই বাড়বে লগ্নি, কর্মসংস্থান এবং বাণিজ্যিক তথা আর্থিক লেনদেনের প্রসার। এই ফ্যাক্টরের উপরই নির্ভর করে জিডিপি বৃদ্ধির হার। তাই কখনও ২৫ হাজার কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কখনও আবার ১ লক্ষ ১১ হাজার কোটি টাকার ইনফ্রাস্ট্রাকচার পাইপলাইনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে অর্থমন্ত্রক। প্রকল্পগুলির মেয়াদ ২০২৫ সাল পর্যন্ত। কিন্তু গত বছরের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত দেখা গিয়েছে, এই প্রকল্পগুলির মধ্যে অন্তত ৫৬৭টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে না বিলম্বের কারণে।

বারংবার প্রকল্প সমাপ্তির সময়সীমা বাড়িয়ে দিতে হচ্ছে। কখনও আর্থিক সঙ্কট। কখনও করোনা। এভাবে মোট ১৬৭১টি প্রকল্পের ব্যয় ৪ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। চলতি মাস পর্যন্ত সরকারের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে ১৪০ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে নির্মিত প্রকল্প রূপায়ণ পিছিয়ে রয়েছে শুধু বিলম্বের কারণে। এর ফলে সবথেকে বড় সঙ্কট এসে উপস্থিত হয়েছে আর্থিক বোঝা। কারণ, এই প্রকল্পগুলি বাস্তবায়নে যত টাকা ব্যয় হবে বলে স্থির হয়েছিল, তার তুলনায় ২০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে খরচ। আর এবার দেখা যাচ্ছে, এই ব্যয় বৃদ্ধি আরও ঊর্ধমুখী। কারণ মূল্যবৃদ্ধি। অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষের নিত্য‌঩প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়ের সমস্যা বাড়িয়েছে। পেট্রপণ্যের দাম বাড়ায় খাদ্যশস্য সহ তাবৎ জিনিপত্রের দাম বেড়ে গিয়েছে। পাশাপাশি পরিকাঠামো নির্মাণ উপকরণের দাম আকাশছোঁয়া হওয়ায় সরকারের ঘোষিত প্রকল্প বাস্তবায়নের খরচও বিপুল বেড়ে যাচ্ছে।
তাই যতক্ষণ না সেই সব প্রকল্পে আবার নতুন করে অর্থবরাদ্দ করা হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত প্রকল্পগুলির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। সিংহভাগ প্রকল্প রূপায়ণের সময়সীমা যে পিছিয়ে যাবে সেটা নিশ্চিত। কিন্তু আদৌ কবে সমাপ্ত হবে এখন সেটাই সবথেকে বড় প্রশ্ন সরকারের কাছে। এই বাড়তি টাকা আসবে কোথা থেকে সেটা ঘিরেও বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন। কারণ, আবার নতুন করে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো হলে আগামী আর্থিক বছরে বাজেট ঘাটতি লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার নিশ্চিত সম্ভাবনা। একদিকে মূল্যবৃদ্ধির হার সহনীয় সীমার উপরে, অন্যদিকে বাজেট ঘাটতিও হতে পারে ঊর্ধমুখী। এই দুই ফ্যাক্টরই অর্থনীতির উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিবন্ধকতা হবে সেক্ষেত্রে। তাই ঘোরতর দুশ্চিন্তায় সরকার। সেই কারণেই একঝাঁক সরকারি সংস্থার বিলগ্নিকরণ করে অর্থ সংগ্রহ করাই এখন পাখির চোখ।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen