Durga Puja: মল্লারপুরে ৫০০ বছরের ঐতিহ্য রায়বাড়ির দুর্গোৎসব

প্রায় পাঁচশো বছরের ঐতিহ্য। এখনও একই নিয়মে চলে আসছে দক্ষিণগ্রামের বাবুপাড়ার রায়বাড়ির দুর্গাপুজো।

September 8, 2025 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১১:১৭: প্রায় পাঁচশো বছরের ঐতিহ্য। এখনও একই নিয়মে চলে আসছে দক্ষিণগ্রামের বাবুপাড়ার রায়বাড়ির দুর্গাপুজো। বাংলার নবাব মুর্শিদকুলি খাঁয়ের সময় স্থানীয় জমিদার আশারাম রায় এই পুজোর সূচনা করেছিলেন। মুর্শিদকুলির কাছ থেকে ‘রায়’ ও পরে ‘বাবু’ উপাধি পাওয়া আশারাম রায়ের হাত ধরেই শুরু হয় বাবুপাড়ার দুর্গোৎসব।

তখন মাটির মন্দিরে একচালার প্রতিমা স্থাপন করে পুজো শুরু হয়। এখনও সেই একচালার প্রতিমাই বিরাজমান। মন্দিরটি পরে পাকা হলেও প্রথার পরিবর্তন হয়নি। কৃষ্ণপক্ষের নবমী থেকে ‘সংকল্প প্রদীপ’ জ্বালিয়ে শুরু হয় পুজো। দেওয়া হয় ছাগবলি। দশমীর বিসর্জনের পর ধীরে ধীরে নিভে যায় প্রদীপ। অপরাজিতার স্তোত্রপাঠের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে পুজোর। দেবীর ভোগে কচুর শাক দেওয়ার রীতি এখনও অটুট।

পরিবারের প্রবীণ সদস্যের নামে হয় পুজোর সংকল্প। এবারে হবে ৮৬ বছরের মিহিরকুমার রায়ের নামে। স্বদেশরঞ্জন রায় জানান, ষষ্ঠী থেকে মৃন্ময়ী প্রতিমায় পুজো হয়। সপ্তমীর দিন তিনটি বলি, সন্ধি পুজোয় একটি, আর নবমীতে চারটি পাঁঠা, একটি মোষ ও একটি মেষ বলি দেওয়া হয়। সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত গ্রামবাসীকে পাত পেড়ে ভোগ খাওয়ানোর রীতি এখনও বজায় রয়েছে।

অতীতে দশমীর দিন কুমারী পুজো, সিঁদুর খেলা, প্রতিমা কাঁধে নিয়ে গ্রাম প্রদক্ষিণ শেষে দিঘিতে নিরঞ্জন ছিল পুজোর প্রধান আকর্ষণ। এখন অবশ্য ট্রাক্টরে প্রতিমা বসিয়ে শোভাযাত্রা হয়। এরপরেই অপরাজিতা স্তোত্র পাঠের মাধ্যমে শেষ হয় দেবী আরাধনা।

এক সময় এই পুজোয় জমিদারদের সমাগম, নাচগান, বিলাসবহুল আয়োজন থাকত। এখন আড়ম্বর কমেছে, তবে নিষ্ঠা ও প্রাচীন প্রথা একই রয়ে গেছে। গ্রামের প্রবীণরা বলেন, “জাঁকজমক কমলেও ঐতিহ্য ও নিষ্ঠায় কোনও পরিবর্তন হয়নি।”

আশারাম রায়ের কাকা গোলাপ আচার্যও রায় উপাধি পেয়ে গ্রামের অন্য প্রান্তে পৃথক দুর্গাপুজোর প্রচলন করেছিলেন। সেই থেকে গ্রামে রায়বাড়ির দু’টি পুজো চলে আসছে। ঘটভরা থেকে বিসর্জন-সবই হয় একসঙ্গে। ঐতিহ্য, নিষ্ঠা ও আভিজাত্যে আজও উজ্জ্বল দক্ষিণগ্রামের রায়বাড়ির দুই দুর্গোৎসব।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen