বৈদ্যবাটির চৌধুরীদের একচালার প্রতিমার গড়নের সঙ্গে পুজোর ইতিহাসও বিরল

কার্তিকের মাথার উপরে সেই বংশীবাদনরত মূর্তি বাংলার বারো ভুঁইঞাদের সময় থেকে পুজিত হয়ে আসছে।

October 8, 2024 | < 1 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বৈদ্যবাটির সাবেক ধনাঢ্য চৌধুরীদের ঠাকুরদালানে এলে চমক লাগে। এখানে সরস্বতী থাকেন না। তাঁর পরিবর্তে থাকেন গোবিন্দ জিউ অর্থাৎ নারায়ণের কৃষ্ণ অবতার। কার্তিকের মাথার উপরে সেই বংশীবাদনরত মূর্তি বাংলার বারো ভুঁইঞাদের সময় থেকে পুজিত হয়ে আসছে।

একচালার গড়নের সঙ্গে পুজোর ইতিহাসও বিরল। ইতিহাস হোক বা জনশ্রুতি, পুজোর বয়স, তার আভিজাত্য এবং নিয়মনিষ্ঠার গরিমা এখনও স্বমহিমায় ভাস্বর। চৌধুরীদের সাবেক শিকড় খুঁজতে চলে যেতে হবে আকবর বা জাহাঙ্গিরের আমলের অবিভক্ত ও বিস্তৃত বঙ্গদেশে। তখন যশোহরে(অধুনা বাংলাদেশ) দাপুটে সাম্রাজ্য অন্যতম বারো ভুঁইঞা প্রত‌াপাদিত্য ও তার কাকা বসন্ত রায়ের। সেই সময় ফরিদপুরের অন্যতম ধনাঢ্য ও মান্য পুরুষ ছিলেন শিবরাম সার্বভৌম।

চৌধুরী পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০২০ বঙ্গাব্দ নাগাদ বসন্ত রায় মতান্তরে প্রতাপাদিত্য স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন তাঁদের কুলদেবতা গোবিন্দ জিউকে শিবরাম সার্বভৌমের বাড়িতে রেখে আসতে হবে। বসন্ত রায় তখন ওড়িশায়। তিনি যতক্ষণে সার্বভৌম নিবাসে এসে পৌঁছন ততক্ষণে শারদীয়া আসন্ন। সার্বভৌম বাড়িতে প্রতিমা গড়া চলছে। এদিকে বাড়িতে স্বপ্নাদেশের বিগ্রহ নিয়ে হাজির দাপুটে ভুঁইঞা।

জনশ্রুতি বেদজ্ঞ শিবরাম তখন দেবীর চালাতেই স্থান দেন গোবিন্দজিউকে। অর্থাৎ লক্ষ্মী ও নারায়ণ রূপে তাঁরা দেবী দুর্গার একচালায় স্থাপিত হলেন। তাতেই বাদ পড়েন সরস্বতী। কিন্তু সরস্বতীই কেন? সে প্রশ্নের উত্তর যুক্তিসঙ্গতভাবে মেলে না। বৈদ্যবাটির চৌধুরীদের পুজো নিয়ে চর্চা করেছেন শ্রীরামপুরের প্রাবন্ধিক সুমন্ত বড়াল। তিনি বলেন, ‘ওঁদের সঙ্গে অনেক আলোচনা করেছি। লক্ষ্মী-নারায়ণ একসঙ্গে থাকবে, এটুকু ছাড়া যুক্তিগ্রাহ্য তথ্য পাইনি। কেউ কেউ বিষয়টিতে নারী ও পুরুষবাদের ছোঁয়া খুঁজে পেয়েছেন। কার্তিক ও গণেশের মতো পুরুষ দেবতাকে না সরিয়ে সরস্বতীকে সরানো হয়েছিল, এমনটা ধরে নেওয়া যায়।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen