দমদমে তৈরি হচ্ছে ‘উমা বাটী’

বরাবরই পরিবেশবান্ধব উপাদান দিয়ে মণ্ডপ গড়ায় বিশ্বাসী শিল্পী। এবার বাঁশ আর খড় দিয়েই সৃষ্টি করছেন ‘উমা বাটী’।

October 20, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

প্রযুক্তির আধুনিকতার মুখোশ পরে মানুষ স্মার্ট হয়েছে। কংক্রিটের জঙ্গলে কোথাও যেন ধামাচাপা পড়েছে মানবিকতা। সমাজের এই রূপ দেখতেই যখন চোখ সয়ে গিয়েছে, ঠিক তখনই সুজন হলে যে তেঁতুল পাতাতেও ন’জন ধরে যায়, সেই প্রবাদই মিলিয়ে দিল দমদম তরুণ দল। এবার তারা একসঙ্গে তিনটি পুজোর দায়িত্ব নিয়েছে।

উৎসবের মরশুমে শহরের ক্যাকোফোনির মধ্যে যদি একচিলতে গ্রাম বাংলার ছোঁয়া পাওয়া যায়, কেমন হয় বলুন তো? সোঁদা মাটির গন্ধ, খড়ের চাল আর তারই মাঝে আসিন মৃন্ময়ী মা। ভক্তি ও শান্তির সহাবস্থানে একেবারে মন ভাল করা অনুভূতি। আর সেটাই হবে তরুণ দলের মণ্ডপে পা রাখলে। যে স্থানের নাম ভালবেসে ‘উমা বাটী’ রেখেছেন শিল্পী দেবতোষ কর।

সাইক্লোন আমফানে ক্ষতিগ্রস্থ সুন্দরবনের জোড়া দুর্গাপুজোর দায়িত্ব নিয়েছেন পুজো উদ্যোক্তারা। হিঙ্গলগঞ্জের ছোট সাহেবখালির দুটি গ্রাম আমফানে তছনছ হয়ে গিয়েছিল। দু’বেলা দু’মুঠো অন্ন জোগাড় করতেই নাজেহাল হয়ে পড়েছিলেন গ্রামবাসীরা। একে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, তার উপর ভাইরাসের থাবা। সেই কঠিন পরিস্থিতিতে তাই পুজোর কথা ভাবতেই পারেননি তাঁরা। কিন্তু সেই ভাবনায় সাহস দিয়েছিল দমদম তরুণ দল। 

বিশ্বজিৎ প্রসাদ-সহ ক্লাবের তরফে বেশ কয়েকজন মিলে ত্রাণ দিতে দিয়ে গ্রামবাসীদের কথা দেন, তাঁরাই সেখানকার দুটি পাড়ার পুজোর আয়োজনের দায়িত্ব নেবেন। এলাকার বাসিন্দাদের হাতে তুলে দেন পুজোর পোশাকও। উৎসবের রং লাগে ছোট সাহেবখালিতে। আর সেই গ্রাম বাংলার ফ্লেভারই নিজের শৈল্পিক ছোঁয়ায় দমদমের মণ্ডপে মিশিয়ে দিয়েছেন দেবতোষ কর।

বরাবরই পরিবেশবান্ধব উপাদান দিয়ে মণ্ডপ গড়ায় বিশ্বাসী শিল্পী। এবার বাঁশ আর খড় দিয়েই সৃষ্টি করছেন ‘উমা বাটী’। তাছাড়া করোনা আবহে বাজেটে টান। সবদিক ভেবেই নিজের ভাবনাকে রূপ দিচ্ছেন তিনি। প্রতিমাও গড়ছেন নিজেই। তাঁর সৃষ্টিকে অন্যমাত্রায় পৌঁছে দেওয়ার বাকি কাজটা সারবেন আলোকশিল্পী প্রেমেন্দবিকাশ চাকীর আলোকসজ্জা এবং সংগীতশিল্পী শতদল চট্টোপাধ্যায়ের থিম মিউজিক।

ক্লাবের তরফে বিশ্বজিৎ প্রসাদ বলছিলেন, “আমরা পুজো করব, আর উৎসবের দিনে ওই অসহায় গ্রামটা অন্ধকারে ডুববে, সেটা ভেবেই মনটা খারাপ লাগছিল। তাই বাজেটে কাটছাঁট করে এই ছোট্ট প্রয়াস। আমাদের মতো আরও ক্লাব নিজেদের মতো করে এগিয়ে আসুন। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিক। এটাই চাইব।”

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen