দুর্গাপুজোয় অপু ট্রিলজি ফিরিয়ে আনতে গাঁটছড়া তিন উদ্যোক্তার

দক্ষিণ কলকাতার তিন হেভিওয়েট পুজো, বাদামতলা আষাঢ় সংঘ, ৬৬ পল্লি এবং কালীঘাট নেপাল ভট্টাচার্য স্ট্রিট ক্লাব এবার একজোট হয়ে ‘সত্যযুগ’ ফিরিয়ে আনবে কলকাতায়

August 4, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবে করোনার কাঁটা। কিন্তু আবেগের দুর্গাপুজোকে কি আর বন্ধ রাখা যায়! তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে, জমায়েত এড়িয়ে কীভাবে পুজো করা যায় এবছর, সেই ভাবনাচিন্তাই করছে একাধিক পুজো কমিটি। হাতে আর বেশি সময় নেই। তাই ছোট করে হলেও জাঁকজমকের চেয়ে আবেগের দুর্গাপুজোকেই মাথায় রেখে কাজ শুরু করে দিয়েছে একাধিক পুজো কমিটি। কিন্তু করোনা আবহে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে কলকাতার তিন দুর্গাপুজো কমিটি। এবছর ‘সত্যযুগ’ ফিরিয়ে আনবেন তাঁরা। আর সেইসঙ্গে তাঁদের অভিনব ভাবনা হল, ‘ড্রাইভ ইন দর্শন’। দক্ষিণ কলকাতার তিন হেভিওয়েট পুজো, বাদামতলা আষাঢ় সংঘ, ৬৬ পল্লি এবং কালীঘাট নেপাল ভট্টাচার্য স্ট্রিট ক্লাব এবার একজোট হয়ে ‘সত্যযুগ’ ফিরিয়ে আনবে কলকাতায়।

কী এই ‘সত্যযুগ’? এবছর স্বনামধন্য পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের জন্ম শতবার্ষিকী। তাই বাংলা তথা বাঙালির গর্ব এই মাহান পরিচালকের বিখ্যাত ‘অপু ট্রিলজি’কেই থিম ভাবনায় ফুটিয়ে তুলবে তিন পুজো কমিটি। এবং পুরো প্রতিমা ও মণ্ডপ দর্শনটাই হবে ড্রাইভ ইন। মানে দর্শনার্থীরা গাড়িতে করে এসে পাশাপাশি তিন মণ্ডপসজ্জা দেখে নিতে পারবেন। করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনেই এবার এমন আয়োজন করেছে তিন ক্লাব। বাদামতলা আষাঢ় সংঘে ‘পথের পাঁচালি’ ছবিকে থিমে ফুটিয়ে তোলা হবে। নেপথ্যে শিল্পী স্নেহাশিস মাইতি, তারপর পাশের পুজো কমিটি ৬৬ পল্লির ভাবনায় ফুটে উঠবে ‘অপরাজিত’ ছবি। থিম কারিগর ঈষিকা চন্দ্র ও দীপ দাস। এবং শেষে ‘অপুর সংসার’ ফুটে উঠবে কালীঘাটের নেপাল ভট্টাচার্য স্ট্রিট ক্লাবে। ওই পুজো কমিটির সভ্যবৃন্দরাই মণ্ডপ সাজাবেন। বাংলায় প্রথম এক বিষয় নিয়ে তিন ক্লাব এবার সত্যযুগ ফিরিয়ে আনবেন অর্থাৎ সত্যজিৎ রায়ের জন্ম শতবর্ষে এই শ্রদ্ধার্ঘ দেবেন। পুরো বিষয়টির উদ্যোগ নিয়েছে IFSD (International Foundation for Sustainable Development) এবং মৃদুল পাঠক। 

ড্রাইভ ইন দর্শনের ভাবনাটাও অভিনব। মূলত করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই ভাবা। গাড়ি থেকে নামার প্রয়োজন নেই। এমনভাবে মণ্ডপসজ্জা করা হবে যাতে দর্শনার্থীরা গাড়ি চালিয়েই পাশাপাশি তিনটি মণ্ডপে পুরোটা দেখে বেরিয়ে যেতে পারবেন। এবার যাঁরা পায়ে হেঁটে ঠাকুর দেখবেন, তাঁদের জন্যও বিশেষ স্যানিটাইজেশন টানেল ব্যবস্থা থাকবে। একসঙ্গে খুব বেশি দর্শনার্থীদের মণ্ডপে ঢোকানে হবে না। আর মূল প্রবেশপথে থার্মাল গান নিয়ে শরীরে তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থাও রাখা হবে। দূরত্ববিধি-সহ সরকারি গাইডলাইন মেনে পুজোর বন্দোবস্ত করেছে তিন পুজো কমিটি। ৬৬ পল্লির একজন কর্মকর্তা প্রদ্যুম্ন মুখোপাধ্যায় বলছেন, “স্বাস্থ্যবিধি মেনেই এবার পুজো হবে। আচার-বিচার ছাড়াও প্রতিমা দর্শনেও গাইডলাইন মেনে চলা হবে। বাহনে বসেই মাকে দেখতে পাবেন দর্শনার্থীরা। কলকাতায় তিন ক্লাবের এমন যৌথ ভাবনা আগে হয়নি।” তাই অভিনব এই ভাবনার সাক্ষী থাকতে ও আরও বিশদে জানতে আসতেই হবে কালীঘাটের এই পুজোপাড়ায়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen