পুজোয় পাশে থাকার আশ্বাস তৃণমূল বিধায়কদের

পুজো নিয়ে অপপ্রচারের জবাব দিতেই ঝাঁপিয়েছে গোটা শাসক শিবির।

September 20, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

বাংলা জানে কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয়। অতঃপর, পুজো হচ্ছেই। পাশে থাকার বার্তা দিচ্ছেন তৃণমূল বিধায়করা। মাধ্যম অবশ্যই সোশ্যাল মিডিয়া। নেপথ্যে ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের ‘আইপ্যাক’। পুজো নিয়ে অপপ্রচারের জবাব দিতেই ঝাঁপিয়েছে গোটা শাসক শিবির।

রাতভর কার্ফু, মণ্ডপে ফুল-বেলপাতা নিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা—ক’দিন ধরেই পুজোকে ঘিরে এমন গুজব ঘুরপাক খাচ্ছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। এর পিছনে বিশেষ এক রাজনৈতিক দলের অভিসন্ধি রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহলে। গতকাল মহালয়াকে সামনে রেখে একটি ট্যুইট করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতেই মোটামুটি স্পষ্ট হয়ে যায়, পুজোকে ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় যা কিছু প্রচার চলছে, সেগুলি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ট্যুইটারে মুখ্যমন্ত্রীর সাফ কথা, ‘কোভিড-পরিস্থিতির কারণে বহু বিধিনিষেধে জড়িয়ে গিয়েছে আমাদের উৎসব। কিন্তু সে যাই হোক, পুজোর উদ্দীপনাকে কোনওভাবেই নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না।’ তার পরেই পুজো নিয়ে যাবতীয় বিভ্রান্তি, সংশয় দূর করতে মাঠে নেমে পড়েন দলের বিধায়করা। সবার বার্তা একটাই—‘আমরা পাশে রয়েছি। প্রয়োজনে রয়েছি। মহামারীকে রুখে মহামায়ার আরাধনা হবেই। বাঙালির উৎসব-ঐতিহ্যে ছেদ নয়।’ বিধায়কদের মধ্যে কেউ ট্যুইটারে, কেউ ফেসবুক লাইভে, কেউ আবার হোয়াটসঅ্যাপে এই বার্তাই পৌঁছে দিচ্ছেন সাধারণ মানুষের কাছে। পুজো-আয়োজনে অভয় দিচ্ছেন উদ্যোক্তাদেরও। মূলত, তাঁরাই এখন সবচেয়ে বেশি সংশয়ে রয়েছেন। পুজোর আয়োজন কীভাবে হবে? সামাজিক দূরত্ববিধি কীভাবে পালন করা হবে? স্বাস্থ্যবিধির সঙ্গে খাপ খাইয়ে কীভাবে তৈরি হবে পুজোর আচারবিধি? এসব নিয়ে এখনও দিশেহারা উদ্যোক্তারা। তবে সবকিছুই হবে স্বাস্থ্যবিধির কড়া অনুশাসনে। এমন অবস্থানও একরকম স্পষ্ট করে দিয়েছে সরকার।

রাজ্যে এই মুহূর্তে শাসক শিবিরের বিধায়ক সংখ্যা ২১৮। জনসংযোগকে জোরদার করতে বহু বিধায়কই দুর্গোপুজোর উদ্যোক্তা। অনেকে আবার প্রত্যক্ষ না হলেও কোনও না কোনও পুজো কমিটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন। এবারে পরিস্থিতি একেবারে অন্যরকম। কোভিড মহামারীর দাপটে উৎসব প্রস্তুতি শুরু হয়েছে অনেকটাই দেরিতে। তার উপর সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ভুয়ো পোস্ট। ফলে পুজো নিয়ে চরম বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। শুক্রবার তৃণমূলের এক বিধায়ক বলছিলেন, ‘বিভ্রান্তি ও সংশয়ের কোনও প্রশ্নই নেই। আগেও ছিল না। কোভিডের চোখরাঙানি উপেক্ষা করে বাংলায় পুজো হবেই।’

শুধু মুখের কথা নয়, অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সংগঠিতভাবে এই বার্তাই তুলে ধরা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর ট্যুইটের পর ‘আইপ্যাক’ বিধায়কদের বার্তার একটি বয়ান তৈরি করে পাঠানো শুরু করেছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘এ বছরের পুজো একটু অন্যরকম। এবার সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাও যুদ্ধ করছে কোভিড-১৯ মহামারীর সঙ্গে…। কিন্তু আমরা এমন একটি রাজ্য যারা সকল বাধা পার করতে জানে। এবারও আমরা সব বিপর্যয় কাটিয়ে উঠব। এই কঠিন সময়ে আমরা এমনকিছু করতে পারি যা সকলের মুখে হাসি ফোটাবে। অন্য বছরের মতো এবারের শারদোৎসবও আনবে সকলের জীবনে আনন্দের জোয়ার…। তাই আমাদের এই ‘মহালয়া প্রতিশ্রুতি’—বাংলার কোনও বাড়ি পুজোর আনন্দ থেকে বঞ্চিত থাকবে না। আমি আছি পাশে। আপনি আছেন তো?’ গতকাল সন্ধ্যা থেকেই তৃণমূলের বিধায়করা ভিডিও ফুটেজ সহ এই বার্তাই পোস্ট করছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গ সফর থেকে ফিরে পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠক করতে করতে পারেন। কোভিডকে মোকাবিলা করে কীভাবে পুজো হবে, তার একটি পূর্ণাঙ্গ ‘গাইড লাইন’ ওই বৈঠকে ঘোষণা করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen