বিজেপির কথায় চলছে কমিশন, তীব্র আক্রমণ মমতার

ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পরই কমিশনের কাছে মমতার আর্জি ছিল, ‘বাংলাকে নিজের রাজ্য হিসেবে দেখুন। বিজেপির চোখে বাংলা দেখবেন না।’

March 2, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণা হওয়ার পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) প্রশ্ন তুলেছিলেন, যেখানে অন্য রাজ্যে এক থেকে তিন দফায় ভোট হচ্ছে, সেখানে বাংলায় কেন আট দফায়? মমতার প্রশ্ন যে অমূলক নয়, তা দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বের বক্তব্যে আরও স্পষ্ট হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশের সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব থেকে বিহারের আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব—সকলেই বলেছেন, আট দফায় নির্বাচন আগে কখনও দেখেনি বাংলা। আর এই পরিস্থিতিতে সোমবার মমতা ফের বললেন, ‘এখানে এক একটা জেলার জন্য তিন-তিনবার ভোটের দিন করেছে। বিজেপি পার্টি যা বলেছে, তাই করে দিয়েছে কমিশন। আমি চাই না বিজেপি (BJP) দল নির্বাচন কমিশনকে কন্ট্রোল করুক।’ বিশেষত, ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পরই কমিশনের কাছে মমতার আর্জি ছিল, ‘বাংলাকে নিজের রাজ্য হিসেবে দেখুন। বিজেপির চোখে বাংলা দেখবেন না।’

বস্তুত, বাংলার ভোট (West Bengal Election 2021) নিয়ে এখন নজর সারা দেশের। দেশের পাঁচ রাজ্যে ভোট হলেও, আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু পশ্চিমবঙ্গ। বিজেপি এখানে ‘সোনার বাংলা’ গড়তে চাইছে। কিন্তু তৃণমূল (Trinamool) বলছে, ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়।’ ২৭ মার্চ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত ভোট পর্বের এই লম্বা ইনিংসে নির্বাচন কমিশন থাকবে নিরপেক্ষ। কখনও কেন্দ্রের সরকার দ্বারা পরিচালিত হবে না, এমনটাই মনে করেন মমতা। কিন্তু বেশ কয়েকটি ঘটনার কথা তুলে ধরে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, কাকে সুবিধা করে দেওয়ার জন্য আট দফায় নির্বাচন?

মমতার পাশে দাঁড়িয়েছেন সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব। তাঁর বক্তব্য, আট দফা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে প্রশ্ন তুলেছেন, তার সঙ্গে একমত। বিজেপি চাইছে যত বেশি দফায় সম্ভব ভোট করিয়ে সমস্যার জন্ম দিতে। এই নির্বাচনে মমতাকে পূর্ণ সমর্থনের কথা ঘোষণা করে তৃণমূলকে জেতানোর ডাক দিয়েছেন মুলায়ম সিং যাদবের পুত্র। সেইসঙ্গে এও বলেছেন, অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় বাহিনী নির্বাচনী এজেন্টদের বাইরে বের করে দেয়। কিন্তু সব বুথে নির্বাচনী এজেন্ট না থাকলে, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে না।

অখিলেশের বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে বিহারের তরুণ নেতা আরজেডির তেজস্বী যাদবের কথায়। এদিন নবান্নে এসে মমতার সঙ্গে ৪৫ মিনিট বৈঠক করেন তিনি। নবান্ন (Nabanna) পর্বের পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন তেজস্বী। পূর্ণ শক্তি নিয়ে মমতাকে সমর্থন দেব বলে একবাক্যে জানিয়ে দিয়েছেন লালু-পুত্র। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মমতা বলেছেন, ‘বিহারে তো তেজস্বী যাদবের জেতার কথা ছিল। কিন্তু ওখানে গোলযোগ করে ওকে জিততে দেওয়া হয়নি।’ তেজস্বী বলেন, ‘বিহারেও তো ডবল ইঞ্জিন সরকারের কথা বলেছিল। কিন্তু সেখানে কী করছে বিজেপি আর তাদের সহযোগী দল! বিজেপি যত‌ই চেষ্টা করুক না কেন, বাংলায় কিছু করতে পারবে না।’

এদিকে, ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হতেই প্রার্থী তালিকা নিয়ে জোরকদমে আলোচনা শুরু করেছে তৃণমূল। এদিন কালীঘাটে মমতার সঙ্গেই হাজির ছিলেন নির্বাচন কমিটির বাকি সদস্যরা। সিদ্ধান্ত হয়েছে, ৮০ বছরের ঊর্ধ্বে কাউকে প্রার্থী করা হবে না। সেক্ষেত্রে একাধিক বর্তমান বিধায়কের নাম কাটা পড়বে। তাঁদের দলের অন্য কাজ দেওয়া হবে। তরুণ মুখকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘কোভিড পরিস্থিতির কথা ভেবে ৮০ বছরের উপরের কাউকে প্রার্থী করা হবে না। সম্মানজনকভাবে তাঁদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen