এখনও ৫ প্রশ্নে নিরুত্তর কমিশন! শুক্রে বৈঠকের সম্পূর্ণ প্রতিলিপি প্রকাশের দাবি তৃণমূলের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৭:০০: নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) ভূমিকা ও আচরণের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। শনিবার, ২৯ নভেম্বর দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন, লোকসভার সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল, লোকসভার সাংসদ সাজদা আহমেদ এবং রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখলে। অভিযোগ করেন যে ভোটার তালিকা সংশোধনী (SIR) কাজে নিয়োজিত বিএলওরা (BLO) চরম চাপের মধ্যে রয়েছেন, অনেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। এর জন্য সরাসরি দায়ী নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।
তৃণমূলের নেতৃত্ব জানান, ইতিমধ্যেই রাজ্যের একাধিক ব্লক লেভেল অফিসার (BLO) চাপে পড়ে আত্মহত্যার নোট লিখে রেখেছেন। দলের প্রতিনিধি বলেন, “ওরা ঘরে ফিরেও শান্তি পাচ্ছেন না। অতিরিক্ত কাজের চাপ, ইন্টারনেট সমস্যার মধ্যেও ফর্ম লোড করতে হচ্ছে। এই অমানবিক চাপ কে দিচ্ছে? নির্বাচন কমিশন। অন্য কেউ না।” একইসঙ্গে দলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, কমিশন ‘ফেক ন্যারেটিভ’ তৈরি করতে মিডিয়ায় ‘প্ল্যান্টেড খবর’ ছড়াচ্ছে।
রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন (Derek O’Brien) কমিশনের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, “যদি আমরা মিথ্যে বলি, তাহলে আপনাদের কাছে অনুরোধ-কালকের বৈঠকের সম্পূর্ণ ট্রান্সক্রিপ্ট প্রকাশ করুন। সাত দিন লাগুক, দশ দিন লাগুক-ট্রান্সক্রিপ্ট প্রকাশ করুন।”
এ প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল (Pratima Mondal) বলেন যে, পাঁচ দফা প্রশ্নের কোনোটিরই উত্তর দেয়নি নির্বাচন কমিশন। তাঁর দাবি, লোকসভার সদস্যদের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে নির্বাচন কমিশন ‘বিহার, অন্য রাজ্যের উদাহরণ, নানা প্রসঙ্গ’ তুলেছে। তিনি বলেন “পঞ্চান্ন মিনিট ধরে কথা বলেও আমাদের একটি প্রশ্নেরও উত্তর দেওয়া হয়নি।”
তৃণমূলের অভিযোগ, কমিশন বৈঠকের কোনও প্রেস রিলিজ দেয়নি। সাংবাদিক সম্মেলনও করেনি অথচ ‘মিডিয়ায় খবর রোপণ’ করে তৃণমূলকে ভুল প্রমাণ করার চেষ্টা করছে। নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে তৃণমূল চ্যালেঞ্জ করে বলে যে, “যদি লুকোবার কিছু না থাকে, তাহলে ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের বৈঠকের সম্পূর্ণ ট্রান্সক্রিপ্ট প্রকাশ করুন।”
আজ সকালে ৪১ বছরের এক মহিলা বিএলও-র মৃত্যুর ঘটনাকে “হৃদয়বিদারক” বলে উল্লেখ করে তৃণমূল। এ প্রসঙ্গে ডেরেকের বক্তব্য, “তিনি কোন সংখ্যার ভিক্টিম নন, একজন মানুষ। এখনও পর্যন্ত চারজন বিএলও মারা গেছেন। এত চাপ কেন? ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংশোধনী কাজ চলবে, এই সময়ের মধ্যে কতটা মানবিক মূল্য দিতে হবে?”
দলের বক্তব্য, তালিকা সংশোধন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। তাই ৭-১০ দিনের মধ্যে এই বিশাল কাজ শেষ করার জন্য যে তাড়াহুড়ো করা হচ্ছে, তা বিপজ্জনক। “পদ্ধতিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আপনি কালো টাকা বন্ধ করতে চাইলে ভালো কথা, কিন্তু ডিমনিটাইজেশনের মত ভুলভাবে করলে বিপর্যয় আসবে। এখানে একই ভুল হচ্ছে,” বলেন তৃণমূল প্রতিনিধিরা।
সংসদের অধিবেশন নিয়ে ডেরেকের অভিযোগ, বিজেপি (BJP) ইচ্ছাকৃতভাবে সংসদ অচল করে সরকারকে জনগণের কাছে দায়বদ্ধতার বাইরে রাখতে চায়। তিনি বলেন, “ওরা মাত্র ১৫দিনের অধিবেশন ডেকেছে। আমরা চাই সংসদ চলুক, যাতে সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে পারে।”