‘হয় ড্রেজিং করো, নয়তো বাঁধ ভেঙে দাও’, উত্তরের বন্যায় DVC-র ভূমিকা নিয়ে কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ মমতার

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ১৮:০০: উত্তরবঙ্গের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি ঘিরে ফের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বুধবার দার্জিলিঙে (Darjeeling) প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি ডিভিসি-র (DVC) ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “হয় ড্রেজিং করো, নয়তো বাঁধ ভেঙে দাও। প্রকৃতিকে নিয়ে খেলা চলে না।” একই সঙ্গে রাজ্যের সেচ দপ্তরের কাজ নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা জানান, ডিভিসি জলাধার থেকে জল ছাড়ার ফলে ‘ম্যানমেড’ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, “নদীকে নিজের মতো বইতে দিতে হয়। ড্রেজিং না করে বাঁধ দিয়ে নদীকে আটকে রাখা যায় না।” পাশাপাশি, জলসম্পদমন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার দপ্তরকে পূর্ত দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার নির্দেশ দেন তিনি।
ভুটানের জল ছাড়াকেও বন্যার অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করে মমতা বলেন, “ভুটানের জলেই এত বড় দুর্যোগ হয়েছে। ওদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত বাংলাকে।” তিনি জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের ডাকে ১৬ অক্টোবর এই বিষয়ে বৈঠক হবে, যেখানে রাজ্যের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন।
দার্জিলিঙের মিরিক এলাকায় ধস এবং রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়েছে। পূর্ত দপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা দিনরাত কাজ করছেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। অস্থায়ী হিউম পাইপ ব্রিজ তৈরির পাশাপাশি একটি পাকা সেতু নির্মাণের কাজও শুরু হয়েছে।
বন্যায় এখনও পর্যন্ত ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে, দার্জিলিঙে ২১, জলপাইগুড়িতে ৯ এবং কোচবিহারে ২ জন। মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ এবং এবং তাদের পরিজনদের এক জন করে স্পেশ্যাল হোমগার্ডের চাকরি দেওয়া হয়েছে। দার্জিলিঙের ৯টি ব্লক ও ৪টি পুরসভায় প্রায় ৭০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ৩৭টি ত্রাণশিবিরে এখনও ছ’হাজারের বেশি মানুষ রয়েছেন।
ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজ জোরকদমে চলছে। জেলা প্রশাসনের তরফে ১৬ হাজার কিট বিতরণ করা হয়েছে। রাজ্য সরকার ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ডিজ়াস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি’ নামে একটি তহবিল গঠন করেছে, যেখানে সাধারণ মানুষও সাহায্য করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে মমতা বলেন, “আবাস যোজনার টাকা, ১০০ দিনের কাজ, গ্রামীণ রাস্তা, সর্ব শিক্ষা মিশন- সব বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। তবু আমরা সামলাচ্ছি।” তিনি আশ্বাস দেন, যাঁদের বাড়ি ভেঙেছে, তাঁদের ডিসেম্বরে ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের আওতায় অর্থসাহায্য দেওয়া হবে।