নির্বাচনী বন্ড: ইউনিক ম্যাচিং কোড নিয়ে ধোঁয়াশায় রেখে দিল SBI

১৫ দিন মেয়াদের মধ্যে না ভাঙানো বন্ডগুলির টাকা সরকারি নির্দেশিকা মেনেই পাঠানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিলে।

March 14, 2024 | 3 min read
Published by: Drishti Bhongi
নির্বাচনী বন্ড: ইউনিক ম্যাচিং কোড নিয়ে ধোঁয়াশায় রেখে দিল SBI

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (এসবিআই) দেওয়া নির্বাচনী বন্ড তথ্যে কী আছে, কোন রাজনৈতিক দল কত টাকা পেয়েছে, তা নিয়ে কৌতূহল শুরু হয়েছে। বুধবার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা করে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (SBI) জানিয়েছে, ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল থেকে চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট ২২ হাজার ২১৭টি নির্বাচনী বন্ড কেনা হয়েছে। তার মধ্যে ২২ হাজার ৩০টি ভাঙিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। ১৫ দিন মেয়াদের মধ্যে না ভাঙানো বন্ডগুলির টাকা সরকারি নির্দেশিকা মেনেই পাঠানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিলে।

কিন্তু উল্লেখযোগ্যভাবে চেপে যাওয়া হয়েছে প্রতিটি নির্বাচনী বন্ডে থাকা ‘ইউনিক ম্যাচিং কোড’-(unique code) এর কথা। সেই সংক্রান্ত তথ্য কমিশনকে দেওয়া হয়েছে কি না, সেব্যাপারে পুরোপুরি নীরব এসবিআই। এই কোডটি সাদা চোখে দেখা যায় না। ঘটনাচক্রে, এই ইউনিক ম্যাচিং কোড ছাড়া কোন সংস্থার থেকে কোন দল কত টাকা পেয়েছে, তা সামনে আসা সম্ভব নয় বলেই সূত্রের খবর। রাজনৈতিক মহলের মতে, তেমনটা হলে স্বাভাবিকভাবেই লোকসভা ভোটের আগে গোটা বিষয়টি পর্বতের মুষিক প্রসব হয়ে দাঁড়াবে।

স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার হলফনামা

শীর্ষ আদালতের ধমক খেয়ে মঙ্গলবার বিকেলেই নির্বাচনী বন্ড (Electoral bonds) সংক্রান্ত তথ্য এসবিআই জমা দিয়েছেন জাতীয় নির্বাচন কমিশনে। একটি পেনড্রাইভে দু’টি পৃথক পিডিএফ ফাইলে তা পাঠানো হয়েছে। এসবিআই চেয়ারম্যান দীনেশকুমার খারার পেশ করা এই হলফনামায় জানানো হয়েছে, একটি পিডিএফ ফাইলে রয়েছে প্রতিটি বন্ড কেনার তারিখ, ক্রেতার নাম ও টাকার অঙ্ক। অন্যটিতে কোন বন্ড কত তারিখে ভাঙানো হয়েছে, কোন রাজনৈতিক দল তা ভাঙিয়ে কত টাকা পেয়েছে সেই হিসেব। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই ডিজিটাল পদ্ধতিতে (পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে সুরক্ষিত) এইসব তথ্যের রেকর্ড নির্বাচন কমিশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন তথ্য হাতে পাওয়ার যে প্রামাণ্য চিঠি দিয়েছে, হলফনামার সঙ্গে তার প্রতিলিপিও সুপ্রিম কোর্টে পেশ করেছে এসবিআই। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই এবার এসবিআইয়ের পেশ করা তথ্য পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। আগামী ১৫ মার্চ, শুক্রবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে তা দেশের মানুষের সামনে আনতে হবে। এদিন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই তাঁরা কমিশনের ওয়েবসাইটে তথ্যগুলি প্রকাশ করবেন।

কী এই নির্বাচনী বন্ড? রাজনৈতিক দলগুলির অর্থ তহবিলের অন্যতম উৎস এই বন্ড নিয়ে বিতর্কের কারণ কী?

নির্বাচনী বন্ড হল নগদের মতো ‘বিয়ারার’ অর্থ। সে কারণে বন্ডের মালিকানা বিষয়ক কোনও তথ্য রাখা হয় না। যার কাছে বন্ড, টাকার মালিকানা তার। এক হাজার, ১০ হাজার, এক লাখ, ১০ লক্ষ এবং ১০০ কোটি টাকার বন্ড কিনতে পাওয়া যায়। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কিছু নির্দিষ্ট শাখায় এই বন্ড বিক্রি হয়। কোনও ব্যক্তি, সংস্থা অথবা কর্পোরেট কোম্পানি এটা কিনে তাদের পছন্দমতো রাজনৈতিক দলকে দান করতে পারে। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে অর্থমন্ত্রক নির্বাচনী বন্ড নিয়ে আসে। লক্ষ্য ছিল রাজনৈতিক তহবিলকে স্বচ্ছ করা। রাজনীতিকে কালো টাকার প্রভাবমুক্ত করার উদ্দেশ্য ছিল বন্ডের। নির্বাচনী বন্ডে কোনও সুদ দেওয়া হয় না। যে কোনও ভারতীয় নাগরিক এটা কিনতে পারেন। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয় ফলে কে কিনছেন, তাঁর নাম থাকে না। বন্ডের মেয়াদ ১৫ দিনের। এর মধ্যে রাজনৈতিক দলের হাতে দিয়ে দিতে হয়। যে দলকে দেওয়া হয়, তারা নিজেদের অ্যাকাউন্ট থেকে নগদে টাকা তুলতে পারে। ২০ হাজার টাকার বেশি নগদে কোনও দলকে দান করলে তাঁর নাম প্রকাশ করা আবশ্যিক হলেও, পরিমাণে যাই হোক নির্বাচনী বন্ডের ক্ষেত্রে কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen