বাংলায় ইথানল পার্কে বিনিয়োগে আগ্রহী বহু সংস্থা, ১৩ দিনে ২৭০০ কোটি টাকার লগ্নি প্রস্তাব

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃতীয় সরকার রাজ্যে শিল্পায়ন নিয়ে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে।

September 16, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi
ছবি: প্রতীকী

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে গত ২ সেপ্টেম্বর রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে ইথানল প্রমোশন পলিসি গৃহীত হয়। সেই নীতি গ্রহণের পর মাত্র ১৩ দিনে বিনিয়োগে আগ্রহী হল ১৫টি সংস্থা। ইতিমধ্যেই ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকার লগ্নি প্রস্তাব জমা পড়েছে। আর তাই প্রথম বৈঠকেই আলাদা একটি ইথানল শিল্পতালুক তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রমোশনাল বোর্ড। ওই বৈঠকের পর মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী সাংবাদিকদের বলেন, ‘চালের ক্ষুদ থেকে তৈরি হয় ইথানল। এই শিল্পের প্রভূত সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের রাজ্য থেকে ওই ক্ষুদ বিদেশে রপ্তানি হয়। এখানেই ইথানল যাতে তৈরি করা যায়, তার জন্য একটি প্রমোশনাল পলিসি তৈরি করা হয়েছিল। তারপরই ১৫টি প্রস্তাব এসেছে। তাদের এক জায়গায় শিল্পস্থাপনের জন্য রাজ্য সরকার একটি শিল্পতালুককে চিহ্নিত করবে। 

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃতীয় সরকার রাজ্যে শিল্পায়ন নিয়ে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। শিল্পস্থাপনে জটিলতা কাটাতে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন প্রমোশনাল বোর্ড তৈরি করা হয়। তাদের বৈঠকে ইথানল শিল্পে বিনিয়োগ ছাড়াও তাজপুর বন্দর তৈরি সহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ঠিক হয়েছে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যাই বলুন না কেন, তাজপুর বন্দর তৈরি করবে রাজ্যই। এর জন্য ১২০০ থেকে ১৪০০ একর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। দু’টি জমি দেখা হয়েছে। আর দু’টি জমি সরকারের হাতে রয়েছে। বন্দর তৈরির জন্য গ্লোবাল টেন্ডার ডাকা হবে।এছাড়াও এদিনের বৈঠকে বালি খনন নীতি নিয়ে আলোচনা হয়। ইতিমধ্যে বালি খাদান কেন্দ্রীকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বালি খনন এবং বিক্রির কাজ অনলাইনে টেন্ডার ডেকে হবে। সরকারি আধিকারিকরা টেন্ডার ডাকবেন। এর জন্য পোর্টাল তৈরি হয়েছে। বালি নিয়ে যাতায়াত করা গাড়িগুলিতে জিপিএস থাকবে। ফলে কোন খাদান থেকে বালি তোলা হচ্ছে বা কোথায় বিক্রি করা হচ্ছে, সবটাই জানা যাবে। বালি কেনার আবেদনও অনলাইনে হবে। সরকারি নজরদারিতে। ব্ল্যাক স্যান্ডস্টোন তোলার ক্ষেত্রেও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন। বীরভূম সহ রাজ্যের কয়েক জায়গায় মাটির তলায় ব্ল্যাকস্টোন পাওয়া যায়। দুর্গাপুর ব্যারেজ ড্রেজিং করার ক্ষেত্রে অবশ্য মাইনিং আইন চালু হবে না বলে মুখ্যসচিব জানিয়েছেন।রাজ্য মন্ত্রিসভায় ডেটা সেন্টার নীতি গৃহীত হয়েছে। ইতিমধ্যে রাজ্যে তিনটি ডেটা সেন্টার তৈরির প্রস্তাব এসেছে। তার মধ্যে নিউটাউনে রিলায়েন্স গোষ্ঠী এবং হুগলিতে হীরানন্দানি গোষ্ঠী ডেটা সেন্টার তৈরি করবে। সেইসঙ্গে এদিনের বৈঠকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে গ্যাস আনার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। হলদিয়া পর্যন্ত এই প্রকল্প ইতিমধ্যেই কার্যকর। হলদিয়া থেকে কলকাতা পর্যন্ত পাইপ বসানোর কাজ আগামী ২০২৪ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে শেষ হবে।এছাড়া অশোকনগরে মাটির তলা থেকে পেট্রলিয়াম তোলার জন্য ১২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে ওএনজিসি। এর জন্য অনেক কর্মসংস্থান হবে। উত্তর ২৪ পরগনা ছাড়াও হাওড়া, হুগলি ও পূর্ব মেদিনীপুরে তেলের সন্ধান চালানোর জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে।

পাশাপাশি রাজ্যে শিল্পায়নের ক্ষেত্রে আবশ্যিক শর্তের সংখ্যা কমানো হচ্ছে। ইজ অব ডুয়িং বিজনেসকে আরো সক্রিয় করে তোলা হবে। শিল্পায়নের কাজে কোন কোন বিধিনিষেধ আরও শিথিল বা সরলীকরণ করা যায়, তার জন্য এদিনের বৈঠকে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। সেখানে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সচিব এবং শিল্পন্নোয়ন নিগমের চেয়ারম্যান রয়েছেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen