জানুন অম্বুবাচী কারা, কখন পালন করেন? 

অম্বুবাচী হিন্দুধর্মের বাৎসরিক উৎসব। অম্বুবাচীকে বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় অমাবতিও বলে।

June 22, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

আর্থ সামাজিক কারণে এখন যৌথ পরিবার ভেঙে গড়ে উঠেছে ছোট ছোট নিউক্লিয়ার পরিবার৷ ফলে পরিবারে বয়স্ক মানুষের দেখা পাওয়া যায় না, যিনি হিন্দু ধর্মের নানা আচার অনুষ্ঠানের কারণ ব্যাখ্যা করে অজানা বিষয়ের কৌতূহল নিরসন করবেন৷ প্রতি বছর পরিচিত বয়স্ক মহিলাদের মুখে অম্বুবাচী করার কথা শোনা যায়৷ স্বভাবতই জানতে ইচ্ছে করে এই দিনগুলি বিশেষত্ব কি? কেন, কারা, কি ভাবে তা পালন করেন? এটা কি নেহাত বাঙালী সমাজেই সীমাবদ্ধ নাকি দেশের অন্যত্রও চলে৷

অম্বুবাচী হিন্দুধর্মের বাৎসরিক উৎসব। অম্বুবাচীকে বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় অমাবতিও বলে। হিন্দুশাস্ত্রে পৃথিবীকে মা বলা হয়ে থাকে। বেদেও একই রকমই তাকে মা রূপে বর্ণনা করা হয়েছে, আবার পৌরানিক যুগেও পৃথিবীকে ধরিত্রী মাতা বলা সম্বোধন করা হয়েছে। আষাঢ মাসে মৃগশিরা নক্ষত্রের তিনটি পদ শেষ হলে পৃথিবী বা ধরিত্রী মা ঋতুময়ী হয়। সেই সময়টিতে অম্বুবাচী পালন করা হয়। অর্থাৎ এই প্রচলিত আচারের পিছনে দেখা যাচ্ছে পৃথিবী আমাদের মা এই বিশ্বাস রয়েছে৷

মহাজাগতিক ধারায় পৃথিবী যখন সূর্যের মিথুন রাশিস্থ আদ্রা নক্ষত্রে অবস্থান করে সেদিন থেকে বর্ষাকাল শুরু ধরা হয়। পাশাপাশি আমরা জানি মেয়েদের ঋতুকাল বা রজঃস্বলা হয় এবং একজন নারী তারপরই সন্তান ধারনে সক্ষম হয়। ঠিক তেমনই প্রতি বছর অম্বুবাচীর এই তিনদিনকে পৃথিবীর ঋতুকাল হিসেবে ধরা হয়।

অম্বুবাচী

ধর্মীয় আচার হলেও  এরসঙ্গে প্রাচীন কৃষি ব্যবস্থা জড়িয়ে থাকায় এটির একটি সামাজিক প্রভাবও রয়েছে। ফলে ‘অম্বুবাচী’ একটি কৃষিভিত্তিক অনুষ্ঠানও। এর অর্থ ধরিত্রীর ঊর্বরাকাল। দেখা যায় এই তিন দিন জমিতে কোনও রকম চাষ করা হয় না যাতে বর্ষায় সিক্তা পৃথিবী নতুন বছরে নতুন ফসল উত্পাদনের উপযোগী হয়ে ওঠে। 

ভারতের বিভিন্ন জায়গাতে এই অম্বুবাচী রজঃ উৎসব নামেও পালিত হয়। আবার এ সময় পরিবারে বয়স্ক বিধবা মহিলাদের তিনদিন ধরে অম্বুবাচী উপলক্ষ্যে ব্রত পালন করতে দেখা যায়৷ কোনও কোনও ক্ষেত্রে অম্বুবাচী পড়ার আগে রান্না করে রাখা হয় পরের তিনদিন খাওয়ার জন্য, যেহেতু অম্বুবাচী শুরু হয়ে গেলে রন্ধনের নিমিত্তে আগুণ জ্বালানো বারণ৷

অসম রাজ্যের গুয়াহাটি শহরের কামাখ্যা দেবীর মন্দিরকে ঘিরে প্রতি বৎসর অম্বুবাচী মেলার আয়োজন করা হয়। অম্বুবাচী শুরুর প্রথম দিন থেকে কামাখ্যা দেবীর দ্বার বন্ধ রাখা হয় ফলে অম্বুবাচীর সময় দেবী দর্শন নিষিদ্ধ থাকে। চতুর্থ দিন দেবীর স্নান ও পূজা সম্পূর্ণ হওয়ার পর কামাখ্যা মাতার দর্শন করার অনুমতি দেওয়া হয়। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen