বাংলায় কৃষক আন্দোলনের প্রভাব, অবরুদ্ধ ডানকুনি টোল প্লাজা

হরিয়ানা, দিল্লি, চণ্ডীগড় সীমানায় সংযোগকারী রাস্তার টোল প্লাজা অবরুদ্ধ করে এদিন বিক্ষোভে শামিল হন কৃষকরা। এর জেরে বেশ কয়েকটি হাইওয়ে দিয়ে বহু গাড়ি ট্যাক্স ছাড়াই এদিন যাতায়াত করে।

December 12, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

দিল্লির কৃষক আন্দোলনের (Farmers’ Protest) আঁচ এবার হুগলিতে। কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে শনিবার শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজন জমায়েত হয়ে বন্ধ করে দিলেন ডানকুনি (Dankuni) টোল প্লাজা। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপর তাঁদের বিক্ষোভ সমাবেশের জেরে দিনের বেলা প্রায় দু’ঘন্টা টোল ফ্রি হয়ে গেল। ফলে টোল ট্যাক্স না দিয়েই বহু গাড়ি দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যাতায়াত করে। ওদিকে, হরিয়ানা, দিল্লি, চণ্ডীগড় সীমানায় সংযোগকারী রাস্তার টোল প্লাজা অবরুদ্ধ করে এদিন বিক্ষোভে শামিল হন কৃষকরা। এর জেরে বেশ কয়েকটি হাইওয়ে দিয়ে বহু গাড়ি ট্যাক্স ছাড়াই এদিন যাতায়াত করে।

নয়া কেন্দ্রীয় কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে দিল্লির দরবারে এসে আন্দোলন চালাচ্ছেন কৃষকরা। ৬ বার কেন্দ্রের সঙ্গে কৃষকদের বৈঠকেও কোনও সমাধান সূত্র মেলেনি। উভয়েই উভয়ের দাবিতে অনড়। এই পরিস্থিতিতে কৃষকরা চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। মোদি সরকার তাঁদের কথা না শুনলে রেল রোকোর ডাক দেওয়া হয়েছে আন্দোলনকারীদের তরফে। তবে তার আগে শনিবার তাঁরা হাইওয়েতে নেমে বিভিন্ন টোল প্লাজা অবরুদ্ধে করে ফেলেন। হরিয়ানার কার্নাল-পানিপথ সংযোগকারী দিল্লি-চণ্ডীগড়ের ৪৪ নং জাতীয় সড়ক (NH 44), হিসার-চণ্ডীগড় সংযোগকারী ১৫২ নং জাতীয় সড়ক-সহ দিকে দিকে প্রায় ৫টি টোল প্লাজায় বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অবরোধের কারণে টোল প্লাজায় ট্যাক্স না দিয়ে অনায়াসেই যাতায়াত করল বহু গাড়ি। এভাবে টোল প্লাজা অবরোধের মাধ্যমেই তাঁরা কেন্দ্রের কাছে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করলেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।

বাংলাতেও এদিন তার প্রভাব পড়ল। শনিবার শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজন বেলা ১১টা থেকে দু’ঘন্টার জন্য ডানকুনি টোল প্লাজা অবরুদ্ধ করলেন। ছিলেন বহু মহিলাও। বিক্ষোভ চলাকালীন এক্সপ্রেসওয়ের উপর রীতিমতো চা বানিয়ে নিজেরাই খেলেন না, পথচলতি বহু মানুষকেও তা খাওয়ালেন। কলকাতার বাসিন্দা হরমিত সিং ক্ষোভের সঙ্গে জানান, যে সকল কৃষক পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান থেকে কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে দিল্লি গিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদি সরকার তাঁদের চারদিক থেকে এমনভাবে ব্যারিকেড করে ঘিরে রেখেছে যেন বাংলাদেশ, পাকিস্তান থেকে ফৌজ লড়াই করতে এসেছে। অন্নদাতাদের ‘খলিস্তানি আতঙ্কবাদী’ তকমা জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। এই অন্যায় তাঁরা মেনে নেবেন না। তাই ডানকুনি টোল প্লাজা বন্ধ করে গাড়ি যাতায়াত ফ্রি করে কেন্দ্রকে এই বার্তা দিতে চাইছেন, সারা দেশের কৃষকদের পাশে আছেন। তাঁদের জোরদার দাবি, নিঃশর্তে এই ‘কালা’ আইন প্রত্যাহার করতে হবে।

সুরিন্দর সিং বেদি-সহ অবরোধকারী শিখ মহিলারা হুঁশিয়ারির সুরে বলছেন, ”দিল্লি থেকে বহু দূরে এই আন্দোলন করে দু’ঘন্টা টোল ফ্রি করে দিয়েছি। এই ক্ষমতাকে যেন ছোট করে না দেখা হয়। আইন প্রত্যাহার না হলে আগামী দিনে কেন্দ্রের এই সরকার ফেলে দেওয়া হবে।” এদিন তাঁরা খাবারও সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন। তা জানিয়ে শিখ মহিলাদের বক্তব্য, প্রয়োজনে সারা বছরের খাওয়ার রসদ নিয়ে দেশজুড়ে এই আন্দোলন ছড়িয়ে দেবেন।

এদিকে, দিল্লির কৃষক আন্দোলন আরও জোরদার হচ্ছে। আরও সমর্থন মিলছে তাঁদের। অন্নদাতাদের মুখে সহজে খাবার তুলে দিতে আগেই রুটি মেশিন বসানো হয়েছে, যাতে এক ঘণ্টায় ২০০০টি রুটি তৈরি করা যায়। এবার বসানো হল ওয়াশিং মেশিন। প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র দিয়ে গুরুদ্বার কমিটি এগিয়ে এসেছিল। এবার অস্থায়ী ডেন্টাল ক্লিনিকও বসানো হল আন্দোলনস্থলে। কেন্দ্রীয় কৃষক সংগঠনের নেতারা ১৪ তারিখ থেকে অনশনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সবমিলিয়ে, কেন্দ্রের উপর চাপ আরও বাড়ছে নিঃসন্দেহে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen