সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার বিদেশি লগ্নি ‘উধাও’ শেয়ার বাজার থেকে

মহামারীর ধাক্কা কাটিয়ে শিল্পোৎপাদন সেভাবে বাড়েনি। এমনকী, চলতি অর্থবর্ষে (২০২২-২৩) জিডিপির পূর্বাভাসও কমিয়েছে একাধিক সংস্থা। মানুষের হাতে টাকা না থাকায় আম জনতার ক্রয় ক্ষমতা কমেছে। এককথায় দেশের ভাঁড়ে মা ভবানী দশা।

April 18, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

একদিকে দেশে রেকর্ড মুদ্রাস্ফীতি। অন্যদিকে বিদেশি বিনিয়োগে ভাটা। এই অবস্থায় ভারতের অর্থনীতি নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিদেশি লগ্নিকারীরা। মাত্র তিনদিনে দেশের শেয়ার বাজার থেকে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা তুলে নিলেন তাঁরা। আম্বেদকর জয়ন্তী এবং গুড ফ্রাইডে উপলক্ষে ১৪ ও ১৫ তারিখ বাজার বন্ধ ছিল। শনি-রবিবার এমনিই ছুটি। অর্থাৎ এক সপ্তাহেই ভারতীয় বাজার থেকে উধাও হয়েছে ওই বিপুল অর্থ।

গত মঙ্গলবারই খুচরো মুদ্রাস্ফীতির রিপোর্ট প্রকাশ করেছে মোদি সরকার। সেখানে দেখা যায়, মার্চ মাসে মুদ্রাস্ফীতির হার বেড়ে হয়েছে ৬.৯৫ শতাংশ। গত ১৭ মাসে এই পরিসংখ্যান সর্বোচ্চ। খাদ্যপণ্যের দামবৃদ্ধির ফলেই এই মুদ্রাস্ফীতি বলে জানায় সরকার। উত্তরপ্রদেশ সহ পাঁচ রাজ্যে ভোট মিটতেই জ্বালানির দাম বাড়ছে। ফলে দাম বাড়তে শুরু করেছে সব্জি থেকে মাছ, মাংস সবকিছুর। জ্বর-ব্যথার প্যারাসিটেমল সহ বিভিন্ন ওষুধের দামও একধাক্কায় অনেকটা বাড়িয়েছে মোদি সরকার। জিএসটি আদায় নীচের দিকে। উল্টে রাজ্যগুলিকে ক্ষতিপূরণ দিতে বিপুল টাকা ঋণ করতে হচ্ছে কেন্দ্রকে। মহামারীর ধাক্কা কাটিয়ে শিল্পোৎপাদন সেভাবে বাড়েনি। এমনকী, চলতি অর্থবর্ষে (২০২২-২৩) জিডিপির পূর্বাভাসও কমিয়েছে একাধিক সংস্থা। মানুষের হাতে টাকা না থাকায় আম জনতার ক্রয় ক্ষমতা কমেছে। এককথায় দেশের ভাঁড়ে মা ভবানী দশা।

চরম অর্থসঙ্কট কাটাতে বিলগ্নিকরণে জোর দিলেও এয়ার ইন্ডিয়া ছাড়া তেমন কোনও বড় সাফল্যের মুখ মোদি সরকার এখনও দেখেনি। ঝুলে রয়েছে একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণ। ভাঁড়ারে অর্থ টানতে কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে সুবিধা দিলেও কাজের কাজ তেমন কিছু হয়নি। এই অবস্থায় দেশীয় সংস্থাগুলির চিন্তা বাড়িয়ে মাত্র তিন দিনে (১১-১৩ এপ্রিল) শেয়ার বাজার থেকে ৪ হাজার ৫১৮ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে বিদেশি লগ্নিকারীরা।

মার্কিন ঋণনীতি নিয়ে খুব শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে আমেরিকার ফেডারেল রিজার্ভ। সূত্রের খবর, তারা সুদের হার বাড়াতে পারে। আর সেকারণেই অস্থির পরিস্থিতিতে বিনিয়োগের নিরাপদ জায়গা খুঁজতেই বিদেশি লগ্নিকারীরা এই বিপুল অর্থ তুলে নিয়েছেন। শুধু তাই নয়, ঋণের বাজার থেকেও উধাও হয়ে গিয়েছে ৪১৫ কোটি টাকার বিদেশি লগ্নি। অথচ, গত সপ্তাহেই ঋণের বাজারে ১ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা ঢেলেছিলেন বিনিয়োগকারীরা। ১-৮ এপ্রিল বিদেশি লগ্নিকারীরা শেয়ারে ৭ হাজার ৭০৭ কোটি টাকা ঢেলেছিলেন। অথচ তার এক সপ্তাহের মধ্যে ৪ হাজার ৫১৮ কোটি টাকা তারা তুলে নিল। এর আগে গত মার্চ পর্যন্ত শেষ ছ’মাসে তাঁরা ১ লক্ষ ৪৮ হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছিলেন। প্রসঙ্গত, গত মাসেই দশমিক ২৫ শতাংশ সুদের হার বাড়িয়েছিল মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ। যা ছিল ২০১৮ সালের পর প্রথম।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen