চরম রাজনৈতিক অস্থিরতায় ফ্রান্স, মাত্র এক মাসেই পদত্যাগ প্রধানমন্ত্রীর

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ১৮:৫৬: ফ্রান্সে রাজনৈতিক অস্থিরতা এখন চরমে। দেশজুড়ে বিদ্রোহ ও জনবিক্ষোভের আবহে এবার সরাসরি প্রভাব পড়ল প্রশাসনের শীর্ষস্তরে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ২৭ দিন পর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করলেন সেবাস্তিয়ান লুকর্নু (Sebastien Lecornu)। মন্ত্রিসভা গঠনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাঁর এই ইস্তফায় দেশটির রাজনৈতিক সংকটকে আরও গভীর করে তুলেছে।
এই ঘটনায় আরও একবার স্পষ্ট হয়ে উঠল, ফ্রান্সে (France) রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এখন অতীত। লুকর্নু সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫, তিনি আচমকাই পদত্যাগপত্র জমা দিলেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রঁর কাছে।
রবিবারই নিজের নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণা করেছিলেন লুকর্নু, যার মধ্যে বেশ কিছু বিতর্কিত নিয়োগ ছিল। বিশেষ করে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ব্রুনো লে মায়েরকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়ায় রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বিরোধী দল এবং শরিকদের একাংশ এই মন্ত্রিসভাকে “অপরিবর্তিত” এবং “অগ্রহণযোগ্য” বলে অভিহিত করে।
লুকর্নু নিজেই তাঁর পদত্যাগের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আপসের অভাব। তিনি বলেন, “আমি সমঝোতার জন্য প্রস্তুত ছিলাম, কিন্তু প্রতিটি দল চায় অন্য দল তার পুরো কর্মসূচি মেনে নিক।” এই অবস্থায় তিনি মনে করেন, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে নতুন পথ খুঁজে বের করতে হবে।
এই পদত্যাগের ফলে ফ্রান্সে গত দুই বছরে পাঁচজন প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলেন। সংসদে কোনও দলই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় সরকার গঠনে বারবার জটিলতা দেখা দিয়েছে। লুকর্নুর পদত্যাগের পর বিরোধী দলগুলি প্রেসিডেন্ট মাক্রঁর পদত্যাগের দাবিও তুলেছে।
রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতেও। প্যারিসের CAC-40 সূচক সোমবার সকালে প্রায় ২% হ্রাস পায়। আন্তর্জাতিক বাজারে ইউরোর দামেও পতন লক্ষ্য করা গেছে।
এই পরিস্থিতিতে ফ্রান্সের সামনে এখন বড় প্রশ্ন, কে হবেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী এবং আদৌ কি স্থিতিশীলতা ফিরবে ফ্রান্সের রাজনীতিতে?