জানুয়ারি থেকে মার্চে অঙ্গীকারবদ্ধ ২ হাজার! বাংলায় বাড়ছে মরণোত্তর অঙ্গদানে আগ্রহ
এছাড়াও ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, অভিনেতা, শিল্পী— সব ধরনের পেশার মানুষই আছেন এই তালিকায়। তবে যাঁরা এগিয়ে এলে সচেতনতা হয়তো আরও বাড়ত, সেই চিকিৎসকদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম।
Authored By:

সার্বিকভাবে বাংলায় দ্রুত বাড়ছে মরণোত্তর অঙ্গদানে আগ্রহ। জানুয়ারি থেকে মার্চ— এই তিন মাসেই এই অঙ্গীকারপত্রে সই করেছেন রাজ্যের প্রায় দু’ হাজার মানুষ। রাজ্যে অঙ্গদান আন্দোলনের পুরোধা সংস্থা গণদর্পণ সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে। তারা জানিয়েছে, মরণোত্তর দেহদানের আগ্রহ সব পেশাতেই রয়েছে। তবে সাম্প্রতিককালে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেখা গিয়েছে গৃহবধূ এবং রাজনীতিবিদদের মধ্যে।বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরে ডি এল খান রোডে সংস্থার অফিসে এসে বিত্তবানরা যেমন অঙ্গীকারপত্র নিয়ে যাচ্ছেন, তেমনই আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা অংশের মানুষ আসছেন। সংগঠনের অন্যতম কর্তা শ্যামল চট্টোপাধ্যায় বলেন, শুনতে অবাক লাগলেও আমরা দেখছি, মরণোত্তর অঙ্গদানে আগ্রহীদের তালিকায় প্রথম সারিতে রয়েছেন গৃহবধূরা। দ্বিতীয় সারিতে রয়েছেন রাজনীতিবিদরা। এছাড়াও ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, অভিনেতা, শিল্পী— সব ধরনের পেশার মানুষই আছেন এই তালিকায়। তবে যাঁরা এগিয়ে এলে সচেতনতা হয়তো আরও বাড়ত, সেই চিকিৎসকদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম।
বরানগরের বাসিন্দা সোমা রায়চৌধুরী এমনই এক গৃহবধূ। শুধু মরণোত্তর চক্ষু ও অঙ্গদানের অঙ্গীকারপত্রে সই করেই ক্ষান্ত হননি, জড়িয়ে পড়েছেন এই আন্দোলনেও। তাঁর কথায়, ১৬ বছর বয়সে চক্ষুদানের অঙ্গীকারপত্রে সই করেছিলাম। গত বছর মরণোত্তর দেহদানের অঙ্গীকারও করেছি। বাড়ির লোকজনকে বুঝিয়েছি। এখন সচেতনতা আগের তুলনায় বেড়েছে। আমার কথা শুনে সম্প্রতি এক গৃহবধূ এবং তাঁর ছেলে দেহদানের অঙ্গীকার করতে চেয়েছেন। এটাই প্রাপ্তি।
কিন্তু অঙ্গদানের অঙ্গীকার আর বাস্তবে অঙ্গদান— দু’য়ের মধ্যে ফারাক কতটা? গণদর্পণ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৮৬ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্যের ১৩ লক্ষ মানুষ অঙ্গদানের অঙ্গীকার করেছেন। অঙ্গদান হয়েছে প্রায় ৪ লক্ষ। করোনা এবং করোনা পরবর্তী সময়ে এক সরকারি নির্দেশ এক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করেছে। শ্যামলবাবুদের দাবি, নির্দেশে বলা হয়েছে, মৃত্যুর ৭২ ঘণ্টা আগের আরটিপিসিআর রিপোর্ট নেগেটিভ থাকতে হবে। তবেই সেই দেহ গ্রহণ করা হবে। এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্তদের বক্তব্য, কারও পক্ষে কি জানা সম্ভব কবে কার মৃত্যু হবে!