আজ পঞ্চম দোল, জেনে নিন হরিশ্চন্দ্রপুরের রায়বাড়ির রামকানাইয়ের দোলের কথা

আজ পঞ্চম দোল। প্রতিবছর দোলযাত্রার পর কৃষ্ণপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে আয়োজিত হয় পঞ্চম দোল

March 19, 2025 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আজ পঞ্চম দোল। প্রতিবছর দোলযাত্রার পর কৃষ্ণপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে আয়োজিত হয় পঞ্চম দোল। পঞ্চম-এর লুকিয়ে আছে ভক্তিরস তত্ত্ব। ধর্ম, অর্থ, কাম, মোক্ষকে পেরিয়ে পঞ্চম পুরুষার্থ প্রেমকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন শ্রীচৈতন্যদেব। প্রেমই শ্রীকৃষ্ণের মাধুর্যের আস্বাদন করায়। ‘ভক্ত ভেদে রতি ভেদ পঞ্চ পরকার। শাস্ত্র রতি দাস্য রতি সখ্য রতি আর।। বাৎসল্য রতি মধুর রতি এ পঞ্চ বিভেদ। রতিভেদে কৃষ্ণভক্তি রস পঞ্চভেদ।। শান্ত দাস্য সখ্য বাৎসল্য মধুর রস নাম। কৃষ্ণ ভক্তি রসমধ্যে এ পঞ্চ প্রধান।।’ অর্থাৎ শান্ত, দাস্য, সখ্য, বাৎসল্য ও মধুর রস। প্রেমভক্তির পঞ্চরসেই পাঁচটি গুণের পরিপূর্ণ প্রকাশ ঘটে।

পঞ্চম দোল গৌড়ীয় বৈষ্ণবদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এক উৎসব। বৈষ্ণবদের অনেকেরই মত, রাধাকৃষ্ণর দোলের দিন মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেবের দোল হওয়া উচিত নয়। সেই কারণে পরবর্তী পঞ্চমী তিথিতে মহাপ্রভুর পঞ্চম দোল পালন করা হয়। কিংবদন্তি অনুযায়ী, পঞ্চম দোলের সময় শ্রীকৃষ্ণ, তাঁর সখা-সখীদের সঙ্গে দোলায় চেপে আনন্দ করতেন। সেই রীতি মেনে পঞ্চম দোলে দেবদেবীর বিগ্রহকে পালকিতে চাপিয়ে ঘোরানো হয়।

বিভিন্ন মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত রাধামাধব, রাধাগোবিন্দ, গোপীনাথ, গোপাল, নিতাই, গৌরসহ সব মূর্তিকে পরিক্রমা করানো হয়। ভোগ-আরতির মাধ্যমে ভোগ নিবেদন করা হয়।চৈতন্যদেবের পায়ে আবির দিয়ে পঞ্চম দোলের সূচনা করা হয়। ভক্তরা চৈতন্যদেবের পায়ে আবির দেন। রাজ্যের অন্যত্রও সমারোহের সঙ্গে পালিত হয় পঞ্চম দোল।

পঞ্চম দোল মহাসমারোহে পালিত হয় মালদার জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরে। বহুদিনের ঐতিহ্যবাহী রায় বাড়ির পঞ্চমদোল উৎসব। হরিশ্চন্দ্রপুরের রায় জমিদার বাড়ির রামকানাইকে ঘিরে এই দোল উৎসব পালিত হয়ে আসছে। দীর্ঘ ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই উৎসব আয়োজিত হচ্ছে। এই বাড়ির বিশেষত্ব হল পঞ্চম দোলে সবাই লাল আবির দিয়ে রঙ খেলায় অংশগ্রহণ করে। রামকানাইয়ের বিগ্রহ নিয়ে গভীর রাতে শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন জনসাধারণ।

আজ থেকে প্রায় ১৫০ বছর আগে জমিদার ভজমোহন রায়, জমিদারির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তখন থেকেই দোল উৎসব হয়ে আসছে। পাঁচ দিন ধরে চলা এই উৎসবে কীর্তন চলে, জমিদার বাড়ির সামনে মেলা বসে। আতশবাজির প্রদর্শনী হয়। এই পাঁচদিন রায়দের পারিবারিক দেবতা রামকানাই সাধারণ মানুষের সঙ্গে বসেই কীর্তন শোনেন। বিশেষ পুজো হয়। পঞ্চম দিনের দিন রামকানাইকে গ্রামের সব ধর্মের মানুষ আবির দিয়ে রাঙিয়ে দেন। সবশেষে শোভাযাত্রা শুরু হয়। ঢোল, সানাই বাজিয়ে গোটা গ্রাম পরিক্রমায় বের হন রামকানাই। কীর্তন গাইতে গাইতে পেছনে চলে ভক্তবৃন্দ। চলতে থাকে আবির খেলা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen