ধরমশালায় হড়পা বান, মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ব্যাহত জনজীবন
ডেপুটি কমিশনার নিপুন জিন্দাল জানিয়েছেন, কাঙড়া জেলায় দু’জন নিখোঁজ রয়েছেন। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন।

কেদারনাথ বিপর্যয়ের স্মৃতি উস্কে হড়পা বানে (flash flood) ভাসল হিমাচলের ধরমশালা (Dharamshala)। সবচেয়ে বেশি বিধ্বস্ত হয়েছে ভাগসু নাগ এলাকা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাধিক হোটেল, দোকান ও ঘরবাড়ি। খড়কুটোর মতো ভেসে গিয়েছে পার্কিংয়ে থাকা বহু গাড়ি। প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও দু’জন নিখোঁজ। জেলা প্রশাসনের কাছে ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুর।
বেশ কয়েকদিন ধরেই দুর্যোগ চলছে হিমাচলে। সোমবার আচমকা মেঘভাঙা বৃষ্টি নামে কাঙড়া জেলায়। তার জেরেই পাহাড় বেয়ে হড়পা বান নেমে আসে ভাগসু নাগ এলাকাতে। ধরমশালা থেকে যার দূরত্ব ৫৮ কিলোমিটার। ২০১৩ সালে ঠিক একই ভাবে হড়পা বানে ভেসেছিল উত্তরাখণ্ডের দেবভূমি কেদারনাথ। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের দাপট কিছুটা কমতেই হিমাচলে ভিড় করছেন পর্যটকরা। রাজ্যের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র ধরমশালা। ভাগসু নাগও ভ্রমণপিপাসুদের সেরা গন্তব্য। তবে, দুর্যোগের কারণে এদিন দু’টি স্থানেই পর্যটকদের উপস্থিতি তেমন ছিল না। আর সেই কারণেই হড়পা বানে প্রাণহানি এড়ানো গিয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। তবে, ক্ষয়ক্ষতি কিছু কম হয়নি। ডেপুটি কমিশনার নিপুন জিন্দাল জানিয়েছেন, কাঙড়া জেলায় দু’জন নিখোঁজ রয়েছেন। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন।
বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে হড়পা বান ধেয়ে আসার ভিডিও তুলেছিলেন ম্যাকলিওডগঞ্জ থানার অফিসার বিপিন চৌধুরি। ৩৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি তিনি ট্যুইটারে পোস্ট করতেই ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হয়ে পড়ে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ভয়ঙ্কর গতিতে নেমে আসছে হড়পা বানের স্রোত। রাস্তার পাশে পার্কিংয়ে থাকা সমস্ত গাড়ি ভেসে যাচ্ছে। ভাসতে ভাসতে একটি এসইউভি গাড়ি আটকে গিয়েছে ভারী কোনও বস্তুতে। সেটাই পথ আটকে রেখেছে স্রোতে ভাসমান অন্যান্য গাড়িগুলিকে। ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে জেলা প্রশাসনের প্রাথমিক হিসেব বলছে, ভাগসু নাগ এলাকায় কমপক্ষে ১০টি দোকান বানের তোড়ে ভেঙে পড়েছে। বহু হোটেলে জল ঢুকে আসবাবপত্র নষ্ট হয়েছে। এদিকে, বৃষ্টি-দুর্যোগে বিপর্যস্ত গোটা হিমাচলই। সিমলা জেলার ঝাকরি সংলগ্ন জাতীয় সড়ক সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ। মানঝি নদী সহ একাধিক নদীর জল বিপদসীমার উপর বইছে। আগামী দু’-একদিন বৃষ্টির দাপট আরও বাড়তে পারে প্রশাসনকে সতর্ক করে দিয়েছে হাওয়া অফিস।