লন্ডভন্ড হেনরিজ আইল্যান্ড, বিপর্যস্ত পর্যটন, দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস মন্ত্রীর
একের পর এক ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়েছে উপকূলের বহু এলাকা।

একের পর এক ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়েছে উপকূলের বহু এলাকা। সেই ক্ষত এখনও বয়ে বেড়াচ্ছে নামখানা ব্লকের হেনরিজ আইল্যান্ডের সমুদ্র সৈকত। ঝড়ের ধাক্কায় শ্রীহীন হয়ে পড়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই পর্যটন কেন্দ্র। সমুদ্রপাড়ে মরা গাছের ভিড়। শুকনো ডালপালায় ঢেকে রয়েছে গোটা তট। পরিত্যক্ত অবস্থা। এই অবস্থায় এখানে আসবে কে? স্বাভাবিক কারণেই মুখ ফিরিয়েছেন পর্যটকরা। তবে সরকার চুপ করে বসে নেই। যেভাবেই হোক এই সমুদ্র সৈকতের আকর্ষণ বাড়াতে বদ্ধপরিকর রাজ্য। শীঘ্রই এব্যাপারে পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা।
শহরের কোলাহল থেকে দূরে নির্ভেজাল ছুটি কাটানোর জন্য আদর্শ জায়গা বকখালি। ছোটখাট উইকএন্ডে ট্যুরে এর বিকল্প নেই। এই ট্যুরে প্যাকেজ হিসেবে থাকে ফ্রেজারগঞ্জ এবং হেনরিজ আইল্যান্ড। বুলবুল, উম-পুন ও যশ— তিন নামের ঘূর্ণিঝড়ই এই পর্যটন কেন্দ্রগুলির দফারফা করে দিয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। এর মধ্যে বকখালি ও ফ্রেজারগঞ্জ ঘুরে দাঁড়ালেও হেনরিজ আইল্যান্ডের হাল ফেরেনি। লাল কাঁকড়ার দেশ বলে পরিচিত এই সমুদ্রপাড় পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। কিন্তু অপরিষ্কার সৈকতের কারণেই এদিকে আসতে চাইছেন না পর্যটকরা।
হেনরিজ আইল্যান্ডে গিয়ে দেখা গেল, সৈকত বরাবর যতদূর চোখ যায়, শুধুই মরা গাছের স্তূপ। ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে গাছগুলি উপড়ে পড়েছে। সবুজের সমারোহ উধাও। দেখে মনে হবে, মৃত গাছগুলিকে কেউ যেন সারি দিয়ে শুইয়ে রেখেছে। জায়গায় জায়গায় মরা গাছের ছোট ছোট জঙ্গল। বেশ কয়েক বছর আগে একটা ওয়াচ টাওয়ার তৈরি হয়েছিল বটে, তবে পরিবেশ দপ্তরের ছাড়পত্র ছিল না। ফলে সেই নির্মাণ ভাঙতে হয়েছে প্রশাসনকে। কংক্রিটের সেই ভগ্নাবশেষও পড়ে রয়েছে সমুদ্র সৈকতে। পর্যটকদের সতর্ক করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় যে বোর্ড টাঙানো হয়েছিল, সে সব উধাও। কয়েকটি বোর্ডের ভাঙাচোরা অংশ পড়ে রয়েছে বালির উপর। পর্যটকরা এখানে আসেন, তবে হাতেগোনা।
সমুদ্রপাড়ে এলে মন ভরে না। বরং হতাশাই ফুটে ওঠে তাঁদের কথাবার্তায়। এমনই এক পর্যটক বললেন, পাঁচ বছর আগে এসেছিলাম। সেই হেনরিজ আইল্যান্ডের সঙ্গে এখনকার দৃশ্যের আকাশপাতাল তফাত। অনেকটাই অবনতি হয়েছে। শুধু ঘূর্ণিঝড় নয়, অবহেলার চূড়ান্ত নিদর্শন ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে সর্বত্র। স্থানীয় মানুষও সমুদ্রপাড়ের শ্রীহীন অবস্থার জন্য প্রশাসনকেই দায়ী করছেন। আসলে পর্যটক না এলে রুটি-রুজিতে টান পড়ছে এই এলাকার বাসিন্দাদের। করোনা ও লকডাউনের কারণে এমনিতেই পর্যটকদের আনাগোনা কমে গিয়েছে। তার উপর সমুদ্র সৈকত এই অবস্থায় পড়ে থাকলে আরও কমবে পর্যটকদের ভিড়।
এ বিষয়ে ওয়াকিবহাল মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা। তিনি বলেন, মরা গাছের স্তূপ সরিয়ে দ্রুত ফেলা হবে। এখানে ছোট ছোট তাঁবু খাটিয়ে স্ন্যাকস জাতীয় খাবার বিক্রি করার ব্যবস্থা করা হবে। ৪ আগস্ট পর্যটন নিয়ে বৈঠক ডেকেছি। সেখানে এ নিয়ে আলোচনা করা হবে।