বাংলাভাষীদের ‘বাংলাদেশি’ দাগিয়ে পুলিশি হেনস্থা! ওড়িশার BJP সরকারের কাছে রিপোর্ট তলব হাই কোর্টের

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৮.৩০: ওড়িশায় বাংলাভাষী শ্রমিকদের ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে পুলিশি হেনস্থার অভিযোগে এবার কড়া পদক্ষেপ করল ওড়িশা হাই কোর্ট (Odisha High Court)। মুর্শিদাবাদের চার শ্রমিককে নিগ্রহের ঘটনায় সে রাজ্যের বিজেপি সরকারের কাছে হলফনামা তলব করল আদালত। আগামী ১৪ দিনের মধ্যে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ লিখিত আকারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনকে।
অভিযোগ, বিজেপি শাসিত ওড়িশায় বাংলা ভাষায় কথা বলার অপরাধে বারবার হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে বাংলার শ্রমিকদের (Migrant Labours)। সাম্প্রতিক ঘটনাটি ঘটে গত ২৭ নভেম্বর। ওড়িশার নয়াগড় জেলার ওদাগাঁও থানা এলাকায় মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) সাগরপাড়ার এক ফেরিওয়ালার ভাড়াবাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। অভিযোগ, ঘরে ঢুকেই ওই ফেরিওয়ালাকে নানা প্রশ্নবাণে জর্জরিত করা হয়। তিনি বাংলায় উত্তর দেওয়ায় তাঁকে ‘বাংলাদেশি’ বলে দাগিয়ে মারধর করা হয় বলে দাবি।
নির্যাতিতদের অভিযোগ, হেনস্থা সেখানেই থামেনি। ঘটনার পরের দিন সন্ধ্যায় ওই ফেরিওয়ালা এবং তাঁর আরও তিন সঙ্গীকে থানায় ডেকে পাঠানো হয়। সেখানেও তাঁদের মানসিক ও শারীরিকভাবে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। পরে ছাড়া পেয়ে আতঙ্কে চারজনই কাজ ছেড়ে পশ্চিমবঙ্গে ফিরে আসেন।
এই ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসতেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তিনি সমাজমাধ্যমে ওড়িশা পুলিশের (Odisha Police) এই ভূমিকার কড়া নিন্দা করেন এবং প্রয়োজনে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। মহুয়া অভিযোগ করেন, বিজেপি (BJP) শাসিত রাজ্যে বেছে বেছে বাংলাভাষীদের টার্গেট করা হচ্ছে।
এরপরই আব্দুস সালাম শেখ নামে এক ব্যক্তি ওড়িশা হাই কোর্টে এই ঘটনার বিচার চেয়ে মামলা দায়ের করেন। গত ৯ ডিসেম্বর মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে। বাদীর বক্তব্য শোনার পর ওড়িশা সরকারকে (BJP Government) নোটিস দেয় হাই কোর্ট। আদালত জানতে চেয়েছে, ঠিক কী ঘটেছিল সেদিন এবং কেন ওই শ্রমিকদের হেনস্থা করা হলো। আগামী ১৪ দিনের মধ্যে রাজ্য সরকারকে এই বিষয়ে হলফনামা জমা দিতে হবে। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী বছরের ১৩ জানুয়ারি ধার্য করা হয়েছে।