হিমাচলের আপেল ফলবে ভাঙড়ে, প্রস্তুতি শুরু রাজ্যের
মুর্শিদাবাদের পর ভাঙড়ে গড়ে উঠছে বিশাল আপেল বাগিচা।

আর হিমাচল প্রদেশ কিংবা কাশ্মীর নয়। কলকাতার উপকণ্ঠেই তৈরি হচ্ছে এক খণ্ড ‘সিমলা’ অথবা ‘গুলমার্গ’! অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি। মুর্শিদাবাদের পর ভাঙড়ে গড়ে উঠছে বিশাল আপেল বাগিচা।
ভাঙড় এক নম্বর ব্লকের পাঁচ বিঘা জমিতে চাষ হবে আপেলের। প্রাণগঞ্জ এবং চন্দনেশ্বর দু’ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে ওই জমি চিহ্নিত। আপেল গাছের চারা আসছে হিমাচল প্রদেশ থেকে। শীতের মরশুমকে সামনে রেখে দ্রুত রোপণের কাজ সেরে ফেলতে চাইছে ব্লক প্রশাসন। সেপ্টেম্বরের প্রথমেই চলে আসবে ৩০০টি আপেল চারা। প্রতিটি গাছের দাম পড়ছে ৩০০ টাকা। সেই মতো জমি প্রস্তুতের কাজ চলছে জোরকদমে। প্রশাসনের আশা, গাছ লাগানোর দু’বছরের মধ্যেই শুরু হয়ে যাবে উৎপাদন। আর সেটা হলে মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়ার পর আপেল চাষে রাজ্যকে পথ দেখাবে দক্ষিণ ২৪ পরগণা। বাণিজ্যিকভাবে এই আপেল চাষ কতখানি সফল হবে কিংবা স্বাদে কতটা কাশ্মীর, সিমলাকে টেক্কা দেবে, তা পরের কথা। আপাতত আপেল ফলানোর প্রাথমিক কাজে চূড়ান্ত ব্যস্ত প্রশাসনের আধিকারিকরা।
বিদেশি ফল ‘ড্রাগন’ চাষে ইতিমধ্যেই সুনাম কুড়িয়েছে প্রাণগঞ্জ এবং চন্দনেশ্বর দু নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত। আপেল চাষের জন্য এই দুই পঞ্চায়েত এলাকাতেই মোট পাঁচ বিঘা জমি পেয়েছে ব্লক প্রশাসন। বিঘে প্রতি ৬০টি চারা গাছ রোপণ করা হবে। কোন প্রজাতির আপেল গাছ এখানকার জলবায়ু ও মাটিতে বেড়ে উঠবে তার পরীক্ষা আগেই করা
হয়েছে। সেই মতো চারার অর্ডার গিয়েছে হিমাচলে। এখানকার দক্ষ শ্রমিকদের দিয়েই রোপণের কাজ
করা হবে। পরবর্তী সময়ে রক্ষণাবেক্ষণের কাজে হিমাচল থেকে আনা হতে পারে বিশেষজ্ঞদের। ভাঙড় এক নম্বর ব্লকের বিডিও সৌগত পাত্র বলেন, ‘ভাঙড়ের মাটি খুব ভালো। আশা করছি, এই আপেল চাষ সফল হবে।’
জানা গিয়েছে, আপেল চাষের পদ্ধতি নিয়ে প্রথম দিকে কিছুটা সমস্যায় পড়েছিলেন ব্লক প্রশাসনের কর্তারা। পরে ইউটিউব দেখে পুরোটাই রপ্ত করেছেন তাঁরা। শ্রমিকদেরও বিশেষ পাঠ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে মুর্শিদাবাদ ও বাঁকুড়াতে এই ধরনের আপেল চাষ করা হয়েছিল। মুর্শিাদাবাদে চারা গাছ রোপণের পর উৎপাদন হতে সময় লেগেছিল দু’ বছর। তাতে দেখা যায় একটি গাছ থেকে অন্তত ৫০ থেকে ৬০ কেজি আপেল উৎপাদিত হয়। ভাঙড়েও সেই রকম ফলনের আশা করছেন আধিকারিকরা। এর আগে ড্রাগন ফল উৎপাদন করে চমক দিয়েছিল এই ব্লক। এবার আপেল চাষ করে নজির গড়তে চাইছেন আধিকারিকরা।