“দলে মহিলাদের সম্মান নেই” অভিযোগ তুলে কান্নায় ভেঙে পড়লেন হুগলি BJP মহিলা মোর্চার সদস্যরা

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ১৬:৪৫: রাজ্যে মহিলাদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদ জানাতে মঙ্গলবার হুগলির চুঁচুড়ার ঘড়ির মোড়ে বিজেপির (BJP) পক্ষ থেকে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সভাতেই বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন বিজেপির মহিলা মোর্চার সদস্যারা – “দলেই মহিলাদের সম্মান নেই।” সভার মাঝখানেই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। একাধিক নেত্রীকে হাপুস নয়নে কাঁদতেও দেখা যায়।
প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো (Jyotirmay Singh Mahato)। কিন্তু তাঁর সামনেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিজেপির মহিলা মোর্চার কর্মীরা। অভিযোগ, জেলার মহিলা মোর্চার সভানেত্রী সোনিয়া সামন্তকে মূল মঞ্চে জায়গা দেওয়া হয়নি। অথচ পুরুষ নেতৃত্বের প্রায় সকলকেই মঞ্চে দেখা গিয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ হন মহিলা মোর্চার কর্মীরা।
বিজেপি মহিলা মোর্চার কর্মী মিলি গুহঠাকুরতা, সবিতা মণ্ডল, সোনিয়া সামন্ত-সহ একাধিক নেত্রী প্রকাশ্যে বলেন, “আমরাই সভার জন্য দিনরাত প্রচার চালিয়েছি, অথচ আজ আমাদের নেতৃত্বকেই মঞ্চে বসানো হয়নি। এই অপমান আর সহ্য করা যায় না।” ক্ষোভে সভা চলাকালীন ‘সুরেশ সাউ হটাও’ স্লোগান তুলতে শুরু করেন তাঁরা।
বিক্ষোভের মূল নিশানায় ছিলেন বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউ (Suresh Sahu)। অভিযোগ, মহিলা কর্মীদের গুরুত্ব দেন না তিনি, বরং ঘনিষ্ঠদেরই প্রতিটি পদে ও মঞ্চে জায়গা করে দেন। কয়েকজন মহিলা কর্মী বলেন, “আমরা দলে কাজ করি, কিন্তু দলে আমাদের সম্মান নেই। এই নিয়ে আগেও অভিযোগ জানানো হয়েছিল রাজ্য নেতৃত্বকে, কিন্তু কোনও ফল হয়নি।”
পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, সাংসদ জ্যোতির্ময় মাহাতো সভা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “এই ধরনের কোনও বিষয় নেই। এটি সাংগঠনিক বিষয়, মন্তব্য করতে চাই না।”
অন্যদিকে, অভিযোগের জবাবে সুরেশ সাউ বলেন, “মঞ্চ ছোট ছিল, তাই সবাইকে জায়গা দেওয়া যায়নি। দু’একজন বাদ পড়ে গিয়েছেন। আগামী দিনে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে, তা দেখব।”
তবে ঘটনাটি নিয়ে রাজনৈতিক কটাক্ষ করতে ছাড়েননি চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার (Asit Mazumdar)। তাঁর কথায়, “বিজেপিতে মহিলাদের সম্মান নেই, সেটা ওদের নিজেদের নেত্রীরাই প্রমাণ করে দিলেন। বাংলার মা-বোনেদের সম্মান দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাঁরা অপমানিত হয়েছেন, তাঁদের বলব, সঠিক দলের জন্য কাজ করুন।”
ঘটনার পর বিজেপির মহিলা মোর্চার একাংশের মধ্যে গভীর ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, রাজ্য নেতৃত্বের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ জানানো হবে। তাঁদের কথায়, মহিলাদের সম্মান না দিলে মহিলা নির্যাতনের প্রতিবাদ করে কোনও লাভ নেই। আগে নিজের দলেই সম্মান দিতে শেখান।