নোটবাতিলের কতটা প্রভাব পড়েছে ভারতীয় অর্থনীতিতে?

একইসঙ্গে ডিজিটাল ইন্ডিয়ার দিকেও আরও এগিয়ে যাবে ভারত।

November 8, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

২০১৬ সালের ৮ই নভেম্বর সেই ঐতিহাসিক ঘোষণার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছিলেন, নোটবাতিলের ফলে বেশ কিছু ইতিবাচক প্রভাব পড়বে ভারতীয় অর্থনীতিতে। কালো টাকা উদ্ধার করা যাবে, বন্ধ হবে জাল নোটের কারবার, বন্ধ হবে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসবাদে টাকার জোগান, কর ফাঁকি দেওয়ার অভ্যাস দূর হবে। একইসঙ্গে ডিজিটাল ইন্ডিয়ার দিকেও আরও এগিয়ে যাবে ভারত। 

নোটবাতিলের চার বছর পরে ফিরে দেখা যাক, কতটা সফল হল মোদী সরকারের নেওয়া এই অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তঃ     

কালো টাকা

নরেন্দ্র মোদী সরকারের নোট বাতিলের প্রধান লক্ষ্য ছিল ভারতে কালো টাকার কারবার বন্ধ করা। এই কারণেই পুরোনো ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিল করে ৫০০ এবং ২০০০ টাকার নোট চালু করা হয়েছিল। কিন্তু সেই লক্ষ্যে সরকার প্রায় পুরোপুরিই ব্যর্থ হয়েছে বলা যায়। শুল্ক বিভাগের একাধিক অভিযানে বিভিন্ন জায়গা থেকে থরে থরে মজুত বেহিসেবি ২০০০ টাকার নোটের বাণ্ডিল পাওযা গিয়েছে। আরবিআই-এর পক্ষ থেকে ২০০০ টাকার নোট ছাপা বন্ধ অবধি করে দেওয়া হয়েছে।   

ডিজিটাল লেনদেন

কালো টাকা এবং জাল নোট রুখতে সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল নগদের পরিমাণ কমিয়ে ডিজিটাল পেমেন্টে জোর দেওয়া। নোট বাতিলের পরবর্তী সময়ে বাজারে নগদ টাকার যখন অভাব ছিল, ডিজিটাল লেনদেনে জোয়ার এসেছিল। তবে নগদ টাকা বাজারে এসে যাওয়ার পর ফের ডিজিটাল লেলনদেনের পরিমাণ লক্ষ্যনীয়ভাবে কমেছে। এখন নোটবাতিল পূর্ববর্তী সময়ের থেকে ডিজিটাল লেনদেনের পরিমাণ দ্বিগুণ হলেও, বাজারে চালু নগদের পরিমাণও প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ডিজিটাল পেমেন্টে বেশ কিছু প্রতারণার ঘটনাও ভারতীয়দের ডিজিটাল লেনদেনে ভরসা কমিয়েছে।

জাল নোট

জাল নোটের কারবার বন্ধের ক্ষেত্রে বিমুদ্রাকরণের কোনও প্রভাবই প্রায় পড়েনি বলা যায়। আরবিআই-এর ২০০০ টাকার নোট ছাপা বন্ধ করার পিছনে এই জাল নোটের দাপট অন্যতম কারণ। জানা গিয়েছে নোট বাতিলের আগে বাজারে ১৫.৯ কোটি টাকার জাল নোট চালু ছিল বলে সরকার দাবি করেছিল। কিন্তু ২০১৭ সালে পুলিশ উদ্ধারই করেছিল ২৮.১ কোটি টাকার জাল নোট। যার বেশিরভাগই ২০০০ টাকার। অর্থাৎ ১ বছরে প্রায় দ্বিগুন হয়েছিল জাল নোট। নতুন নোট চালুর সময়ে বলা হয়েছিল এই নোটগুলি জাল করা কঠিন হবে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তার উল্টোটাই ঘটেছে। 

কর ফাঁকি দমন

নোট বাতিলকে সাফল্য হিসেবে তুলে ধরে মোদী সরকার দাবি করে গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট (জিডিপি) অনুপাতে কর আদায় বাড়বে। এই দাবি আংশিক সত্যি বলা য়ায়। আয়কর রিটার্ন (আইটিআর)  জমা দেওয়ার লোকের সংখ্যা অবশ্যই বেড়েছে। তবে কর সংগ্রহের হেরফের ঘটেনি। ট্যাক্স-টু-জিডিপি অনুপাত এখনও উন্নত দেশগুলির প্রায় অর্ধেকে দাঁড়িয়ে আছে। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen