শতক পূরণ করতে চলছে হাওড়ার বড় ঘড়ি

একাধিক সাহিত্যে এর বর্ণনা মেলে। শুধু তাই নয়, বহু বাংলা সিনেমাতেও এই বড় ঘড়িকে দেখানো হয়েছে। আসলে বাঙালীর জীবনের সাথে ওই ঘড়ি ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে।

March 3, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

একাধিক সাহিত্যে এর বর্ণনা মেলে। শুধু তাই নয়, বহু বাংলা সিনেমাতেও এই বড় ঘড়িকে দেখানো হয়েছে। আসলে বাঙালীর জীবনের সাথে ওই ঘড়ি ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে। অসংখ্য গল্প আর নস্টালজিয়া ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে সেই বড় ঘড়িকে ঘিরে।

সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তো বড়ঘড়ির সুদীর্ঘ সম্পর্ক। বিয়ের আগে হবু স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর দেখা করার জায়গা ছিল সেই বড় ঘড়ির সামনেই। আসলে বড় ঘড়ি যে আমাদের জীবনে ল্যান্ডমার্কের থেকেও অনেক বড় নস্টালজিয়া হয়ে দাঁড়িয়েছে! তাই তো ন’দশক পরে এখনও থামেনি তার সময়।

বছর কয়েক আগে ২০১০ সালে একবার কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ হলেও দ্রুত তা মেরামত করা হয়। ঘড়িটি স্থাপনের ৯৪ বছর পরেও এতদিন ধরে অক্লান্তভাবে সঠিক সময় দিয়ে চলেছে আজও। দেখা যায়, এখনও অনেক যাত্রী নিজেদের ঘড়ির সময় বড় ঘড়ির সঙ্গে মিলিয়ে নেন। পাশাপাশি ৯ দশকের বেশি সময় ধরে অসংখ্য মানুষের মিলনস্থল হিসেবেও স্মৃতিস্তম্ভ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে হাওড়া স্টেশনের ঐতিহ্যবাহী এই ‘বিগ বেন’।

এই ঘড়ির ডায়ালের ব্যাস ৩ ফুট বা ৯ ইঞ্চি। ছোট কাঁটা অর্থাৎ ঘন্টার কাঁটা দেড় ফুট বা ১৮ ইঞ্চি লম্বা। আর বড় কাঁটা বা মিনিটের কাঁটার দৈর্ঘ্য ২ ফুট অর্থাৎ ২৪ ইঞ্চি। ১৯৭৫ সালে ঘড়িটি মেকানিক্যাল থেকে ইলেকট্রো মেকানিক্যালে রূপান্তরিত করা হয়েছিল। তার পরে রিচার্জেবল ব্যাটারির সাহায্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয় ঘড়িটি।

১৯২৬ সালে এই ঘড়িটি হাওড়া স্টেশনের পুরনো কমপ্লেক্সের শতাব্দী প্রাচীন ভবনে বসানো হয়। পিঠোপিঠি অবস্থিত এই ঘড়িটির একটি মুখ আছে ১ থেকে ৮ নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে এবং অন্যটি ৯ থেকে ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মমুখী।

লোহার মজবুত ফ্রেমের ওপর স্থাপিত এবং স্টেশন ম্যানেজারের অফিসের পাশের দেওয়ালের সঙ্গে সংযুক্ত এই ঘড়ি ‘জেন্টস’ নির্মিত। লন্ডনের বিখ্যাত বিগ বেন ঘড়িও বিলিতি ঘড়িবাবু ‘এডওয়ার্ড জন ডেন্টের’ এই সংস্থারই তৈরী। আগে বিদ্যুৎ চালিত যান্ত্রিক হাওড়ার এই বড় ঘড়িটিতে একটি দূরনিয়ন্ত্রক পালসার যন্ত্রের মাধ্যমে দম দেওয়া হতো এবং সময়ের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করা হতো। পরবর্তীকালে বিদ্যুৎ পরিবাহী তারে সমস্যার সৃষ্টি হয়। এখন আর এই ঘড়িতে চাবি ঘুরিয়ে দম দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। তার ব্যবস্থা করা আছে ঘড়ির ভিতরেই। হাওড়া স্টেশনে এটিই সবচেয়ে জনপ্রিয়, পরিচিত ও খ্যাতনামা ল্যান্ডমার্ক।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen