কমিশনের ডাকা সর্বদল বৈঠকে তুমুল হট্টগোল! SIR নিয়ে একযোগে প্রতিবাদ তৃণমূল-সহ বিরোধীদের

October 28, 2025 | 2 min read
Published by: Saikat

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৯:১৭: রাজ্যে SIR প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরদিনই মঙ্গলবার রাজ্যের নির্বাচন কমিশনের ডাকে অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় বৈঠক যেন রণক্ষেত্র। মঙ্গলবার বিকেলে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজকুমার আগরওয়ালের (Manoj Kumar Agarwal) দপ্তরে অনুষ্ঠিত এই প্রশাসনিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। সূত্রের খবর, বৈঠকের শুরুতেই SIR নিয়ে বিরোধী দলগুলোর একযোগে প্রতিবাদে তুমুল হট্টগোল শুরু হয়।

বৈঠকে আধার কার্ডকে (Aadhaar Card) বৈধ পরিচয়পত্র হিসেবে গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত ঘিরে শুরু হয় উত্তপ্ত বিতর্ক। তৃণমূল (TMC), সিপিআই(এম) (CPIM) ও কংগ্রেসের (Congress) প্রতিনিধিরা একযোগে নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) অবস্থানের বিরোধিতা করেন। সিপিআই(এম)-এর পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়, কোন আইনের ভিত্তিতে কমিশন নাগরিকত্ব নির্ধারণ করছে।

তৃণমূলের প্রতিনিধি CEO কে সরাসরি প্রশ্ন করেন, “বাংলাদেশি জানলেন কীভাবে? কীভাবে প্রমাণ হচ্ছে একজন নাগরিক? কোন অধিকারে পশ্চিমবঙ্গের মানুষদের বাংলাদেশী দাগানো হচ্ছে?” এই মন্তব্যে বৈঠকের ঘরে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।

এনুমেরেশন ফর্ম নিয়েও প্রশ্ন তোলে রাজনৈতিক দলগুলি। ২০০২ সালের SIR প্রক্রিয়ায় এই ফর্ম ছিল না, অথচ এবার হঠাৎ করে তা চালু করা হয়েছে- এই সিদ্ধান্তের ভিত্তি জানতে চায় কংগ্রেস। তাঁদের দাবি, চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পর অন্তত এক বছর এই ফর্ম সংরক্ষণ করতে হবে। CPM-র প্রশ্ন, যে ব্যক্তি ২০০২ সালের পর পাঁচটি নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন, তাঁকে আবার প্রমাণ দিতে হবে কেন?

বৈঠকে উঠে আসে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA)-এর প্রসঙ্গও। CPM জানতে চায়, যদি ভোটার তালিকা থেকে কারও নাম বাদ যায়, তাহলে সেই ক্ষেত্রে CAA-এর ভূমিকা কী হবে। তাঁরা জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে স্পষ্ট সরকারি বিবৃতি দাবি করেন।

বৈঠকের উত্তেজনা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, CEO-র উপস্থিতিতেই সভা বারবার থামাতে হয়। রাজনৈতিক দলের পারস্পরিক বাকযুদ্ধের কারণে প্রশাসনিক আলোচনার পরিবেশ বারবার বিঘ্নিত হয়।

নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, সোমবার রাত ১২টা থেকে ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ভোটার তালিকা ‘ফ্রিজ’ হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ, নতুন নাম অন্তর্ভুক্ত, সংশোধন বা পরিবর্তনের কোনও কাজ আর করা যাবে না। ২৮ অক্টোবর থেকে শুরু হবে এনুমেরেশন ফর্ম (Enumeration Form) ছাপার কাজ এবং BLO-দের প্রশিক্ষণ, যা চলবে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত। এরপর ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের হাতে ফর্ম তুলে দেওয়া হবে। প্রবাসী বা রাজ্যের বাইরে থাকা নাগরিকরা অনলাইনেও ফর্ম পূরণ করতে পারবেন।

খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে ৯ ডিসেম্বর। কেউ তালিকায় ভুল বা বাদ পড়া নাম নিয়ে অভিযোগ জানাতে পারবেন ৯ ডিসেম্বর থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। এরপর ৯ ডিসেম্বর থেকে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখার প্রক্রিয়া চলবে। সবশেষে ৭ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen