অ্যালার্জি থাকলে খাবেন না চিংড়ি-কাঁকড়া, সতর্কবার্তা বিশেষজ্ঞদের

চিংড়ি, কাঁকড়া, ঝিনুক, শামুক, গুগলি খেলে শরীরে প্রদাহ তৈরি হয়।

November 22, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

কোনও খাবারে অ্যালার্জি।  সেই খাবার জিভে দেওয়া মাত্রই শরীরের ‘প্রতিরোধ ক্ষমতা’ কিছু কেমিক্যাল নিঃসরণ করে। যা থেকে আকস্মিক রক্তচাপের পতন। বন্ধ হয়ে যায় শ্বাসনালীর রাস্তা। জলজ্যান্ত দেহটা কয়েক মুহূর্তে নিথর। যেমনটা হয়েছে দিঘায় ঘুরতে যাওয়া বেহালার যুবকের।

সম্প্রতি দিঘায় কাঁকড়া (Crab) ভাজা খেয়ে মৃত্যু হয়েছে বেহালার যুবকের। জানা গিয়েছে, চিংড়ি মাছে অ্যালার্জি ছিল তাঁর। নিজে জানতেন সেটা। কিন্তু টের পাননি কাঁকড়াও থাকতে পারে সেই তালিকায়। চিকিৎসকরা বলছেন, সাধারণত চিংড়ি মাছে যাঁর অ্যালার্জি থাকে তাঁদের কাঁকড়া কেন, কোনও রকম সামুদ্রিক মাছই খাওয়া উচিৎ নয়। আদতে ওই খাবারগুলো তাঁর কাছে অ্যালার্জেন। মুখে দেওয়া মাত্রই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মারাত্মক প্রতিঘাত দেবে। অতি সক্রিয় হয়ে ‘পালমোনারি ইডিমা’ তৈরি করবে। যার ফলে শ্বাসনালীর উপরের অংশ বন্ধ হয়ে যাবে। নাকের দুটো ফুটো ছিপি আটার মতো আটকে যাবে।

ন্যাশনাল অ্যালার্জি অ্যাসমা ব্রঙ্কাইটিস ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর ডা. অলোক গোপাল ঘোষাল জানিয়েছেন, চিংড়ি, কাঁকড়া খেয়ে চুলকানি হচ্ছে, ঠোঁট ফুলছে এটা ছোটখাটো অ্যালার্জি। অ্যানাফাইলেকটিক শক নয়। তবে আজ যার স্রেফ ঠোট ফুলছে কাল তাঁর অ্যানাফাইলেকটিক শক হতেই পারে। তাই যে খাবারে অ্যালার্জি তার থেকে দশ হাত দূরে থাকুন।

কোন কোন খাবারে অ্যালার্জি? তা জানতে টেস্ট করা যায়। এধরণের টেস্টকে বলা হয় এসপিটি বা স্কিন প্রিক টেস্ট (Skin Prick Test)। রয়েছে ফুড চ্যালেঞ্জিং টেস্ট। ত্বকরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কৌশিক লাহিড়ির কথায়, পৃথিবীতে হাজার একটা খাবার রয়েছে। জনে জনে ধরে ধরে এমন টেস্ট করানোর কোনও মানে নেই। টেস্ট রিপোর্টও অনেক সময় ফলস পজিটিভ আসে। সেক্ষেত্রে উপায় একটাই। আগে থেকে সাবধান হওয়া। তিন রকমের খাবার রয়েছে। ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন। সাধারণত প্রোটিন জাতীয় খাবারেই অ্যালার্জি বেশি দেখা যায়। তার মধ্যে প্রাণীজ প্রোটিন থেকেই সাবধান থাকতে বলছেন চিকিৎসকরা। সয়াবিন খেয়ে অ্যালার্জি হয়েছে এমনটা বড় একটা দেখা যায় না।

চিংড়ি, কাঁকড়া, ঝিনুক, শামুক, গুগলি খেলে শরীরে প্রদাহ তৈরি হয়। এই প্রদাহ বন্ধ করতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিছু ‘ইনফ্লামেটরি মেডিয়েটর’ নিঃসরণ করতে থাকে। প্রদাহ কমানোর এমনই এক বস্তু হিস্টামিন। এই হিস্টামিন শ্বাসনালীর পেশির সংকোচন বাড়িয়ে দেয়। ব্লাড ভেসেল গুলি ফুলে ওঠে। চিকিৎসা পরিভাষায় এর নাম ভ্যাসোডাইলেশন। শিরা থেকে রক্তরস বাইরে চলে যায়। যথেষ্ট পরিমাণ রক্ত আর হার্টে পৌঁছয় না। মস্তিষ্কেও রক্ত পৌছনোর পরিমাণ কমতে কমতে থাকে। ১৫ মিনিটের মধ্যে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন রোগী।

এ সময় একটা ইঞ্জেকশন দিলেই ব্লাড ভেসেল গুলি আবার আগের আকারে ফিরে আসে। সে ইঞ্জেকশনের দামও অতি সামান্য। চিকিৎসকরা বলছেন, প্রতিটি খাবারের দোকানে এই অ্যাড্রেনালিন এপিনেফ্রিন ইঞ্জেকশন রাখা উচিৎ।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen