ছ’বছরের চেষ্টা সফল, কৃত্রিম উপায়ে বৃষ্টি নামালেন Kanpur IIT-র গবেষকরা
উত্তরপ্রদেশের বুন্দেলখণ্ডে মেঘের বীজ পুঁতে নজির গড়েছেন কানপুর আইআইটির গবেষকরা।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: দীর্ঘ ৬ বছরের প্রচেষ্টার পর সফল হলেন কানপুর আইআইটির গবেষকরা। কৃত্রিম উপায়ে বৃষ্টিপাত ঘটানোর জন্য অনেকদিন ধরেই গবেষণা চালাচ্ছিলেন তাঁরা। উত্তরপ্রদেশের বুন্দেলখণ্ডে মেঘের বীজ পুঁতে নজির গড়েছেন কানপুর আইআইটির গবেষকরা। ভারতের মধ্যে প্রথম এই কৃতিত্ব অর্জন করলো কানপুর আইআইটি। উল্লেখ্য, চীন এর আগে কৃত্রিম বৃষ্টিপাত ঘটিয়েছিল। তবে ভারতে প্রথম হল এমনটা।
দূষণের জেরে বিপন্ন রাজধানী দিল্লির জনজীবন। দেওয়ালির পর ও শীতের আগে দিল্লির বাতাসে দূষণের মাত্রা প্রতিবারই বেড়ে যায়। শীতের সময় দিল্লি ও সংলগ্ন অঞ্চলে দৃশ্যমানতা কমে যায়। দূষিত বাতাসে বসবাস করা কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুক্তির পথ খুঁজতে আসরে নামে কানপুর আইআইটি। তাতেই সাফল্য এল, এবার আর বৃষ্টির অপেক্ষায় বসে থাকতে হবে না।
চাইলেই এবার কৃত্রিম বৃষ্টিপাত ঘটানো যাবে।

কৃত্রিম বৃষ্টির জন্য ড্রোনের সাহায্যে মেঘের উপর সিলভার আইয়োডাইডের মতো রাসায়নিক বা ড্রাই আইস বা খাওয়ার নুন ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এতেই বৃষ্টির সম্ভাবনা বেড়ে যায়। বায়ুতে যে জল থাকে, তা মেঘে ছড়ানো রাসায়নিকের কণার আশপাশে ঘনীভূত হয়ে স্ফটিকের মতো বরফের দানার আকার নেয়। বৃষ্টির সম্ভাবনা বাড়ে যায়। এই পদ্ধতিকে নিউক্লিয়েশন বলা হয়। উল্লেখ্য, মেঘের উপর রাসায়নিক ছড়ানোর জন্য ড্রোন বা বিমান বা রকেট ব্যবহার করেন গবেষকেরা।

কৃত্রিম বৃষ্টির জন্য নিজেদের ক্যাম্পাসে একটি পরীক্ষা করে আইআইটি কানপুর। তাতে সাফল্য আসে। ক্যাম্পাস থেকে ৫,০০০ ফুট উঁচুতে বিমান উড়িয়ে মেঘের উপর রাসায়নিক ছড়িয়ে দেওয়া হয়। যা বৃষ্টির অনুঘটকের কাজ করবে। বুন্দেলখণ্ডে কৃত্রিম উপায়ে বৃষ্টি নামানোর জন্য কানপুরের দ্বারস্থ হয় উত্তরপ্রদেশ সরকার। প্রকল্পের দায়িত্বে ছিলেন আইআইটির কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক মণীন্দ্র আগরওয়াল।

২০১৭ সাল থেকে আইআইটি কানপুরে ক্লাউড সিডিং প্রকল্প চলছে। ২০১৯ সালে করোনার কারণে প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। কোভিডের পরে ফের কাজ শুরু করে। বিমানে লাগানো যন্ত্রের সাহায্যে সিলভার আয়োডাইড, শুষ্ক বরফ, সাধারণ লবণ মিশ্রিত রাসায়নিকগুলির মাধ্যমে ক্লাউড সিডিং করা হয়। বিমানের ডানায় একটি ডিভাইস বসানো ছিল। তা দিয়ে আশেপাশের এলাকায় রাসায়নিক স্প্রে করা হয়। গত কয়েক বছর ধরে চলা প্রচেষ্টা প্রথমবার সফল হল।
মনে করা হচ্ছে, কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের সাহায্যে দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকার দূষণ নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে। পাশাপাশি খরাপ্রবণ এলাকায় কৃষিকাজের সুবিধাও হবে কৃত্রিম বৃষ্টির মাধ্যমে।