তৃণমূল সাংসদের প্রশ্নের জবাবে ১০০ দিনের কাজে বাংলাকে বঞ্চনা, কার্যত স্বীকার করল কেন্দ্র
পশ্চিমবঙ্গের জন্য ১০০ দিনের কাজের (MGNREGA) বরাদ্দ টাকা ঢোকেনি রাজ্যের তহবিলে।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৭:০০: পশ্চিমবঙ্গের জন্য ১০০ দিনের কাজের (MGNREGA) বরাদ্দ টাকা ঢোকেনি রাজ্যের তহবিলে। সেই নিয়ে কাটাছেঁড়ার মধ্যে রাজ্যসভায় তৃণমূলের প্রশ্নের জবাব দিল বিজেপি সরকার। কেন্দ্রের লিখিত জবাবে সমস্ত রাজ্যের নাম, বকেয়া এবং বরাদ্দের হিসাব দেওয়া হলেও পশ্চিমবঙ্গের নাম উল্লেখ করা হয়নি। এই নিয়ে শুরু হল নয়া বিতর্ক।
১০০ দিনের কাজের কর্মদিবস ও মজুরি নিয়ে শুক্রবার রাজ্যসভায় তৃণমূলের নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন পরিসংখ্যান পেশ করে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন তোলেন। ডেরেকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবর্ষের তুলনায় চলতি অর্থবর্ষে শ্রমিকের সংখ্যা ৮.৩৪ কোটি থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৭.৮৮ কোটি। গড় কর্মদিবসও হ্রাস পেয়েছে, তা ৫২ দিন থেকে হয়েছে ৫০ দিন। এসব পরিসংখ্যান দিয়ে তাঁর অন্যতম প্রশ্ন ছিল, কোন রাজ্যের জন্য কত অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। জবাবে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক যে তালিকা দিয়েছে, তাতে বাংলার নামই নেই! আর তাতেই স্পষ্ট, কেন্দ্রের কাছে বাংলা সত্যিই ‘বঞ্চিত’।
গোটা বিষয়টি তৃণমূল কংগ্রেস সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছে। দলের কটাক্ষ, ‘আপনারা আমাদের প্রাপ্য অর্থ থেকে বঞ্চিত করেছেন, আমাদের বাসিন্দাদের গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাচ্ছেন। এবার আপনারা বাংলার নামই রেকর্ড থেকে মুছে দিতে চাইছেন? মনে রাখবেন, আপনারা দিল্লির নিয়ন্ত্রক, দেশের নয়।’
রাজ্যসভায় কেন্দ্র জানিয়েছে, ১০০ দিনের কাজের টাকা দেওয়ার জন্য পর্যায়ক্রমে দু’টি কিস্তিতে তহবিল প্রকাশ করে সরকার। প্রতিটি কিস্তিতে এক বা একাধিক কিস্তি থাকে। শ্রম বাজেট, কাজের চাহিদা, তহবিলের ব্যবহারের গতি, সামগ্রিক কর্মক্ষমতা, রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির প্রয়োজনীয় নথির সাপেক্ষে সেগুলো তৈরি করা হয়। নিয়ম হল, প্রতি আর্থিক বছরের শুরুতে পূর্ববর্তী বছরের বাকি থাকা অর্থ শোধ করে দেওয়া হয়। সেই নিয়ম মেনে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের ‘অমীমাংসিত মজুরির’ অর্থ ইতিমধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে। চলতি অর্থবর্ষে (২১ জুলাই পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী) ৪৪,৪৭৯.৭৯ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে রাজ্যগুলিকে।
এই প্রকল্পের অধীনে আপাতত কোনও অর্থ বাকি নেই। পরিশেষে বলা হয়েছে, মজুরিহার গণনার বর্তমান পদ্ধতি ব্যবহার করে কেন্দ্রীয় সরকার মজুরিহার নিয়েও বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। গত বছরের তুলনায় গড়ে ৫ শতাংশ এবং পূর্ববর্তী ৫ বছর থেকে প্রায় ২৯ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে বিভিন্ন রাজ্যের সরকার তাদের নিজস্ব উৎস থেকে কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক বিজ্ঞাপিত মজুরি হারের চেয়ে বেশি মজুরিও প্রদান করতে পারে। এর পর বাংলা বাদে ৩৩টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের তালিকা দিয়েছে কেন্দ্র। রাজ্যের শাসকদল প্রশ্ন তুলেছে এখানেই।