এবার থেকে ডেবিট ক্রেডিট কার্ডের লেনদেনেও আয়করের নজরদারি

দিন কয়েক আগেই আয়করদাতাদের নতুন ‘সুযোগ’ এনে দিয়েছে ইনকাম ট্যাক্স বিভাগ।

November 22, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

 দিন কয়েক আগেই আয়করদাতাদের নতুন ‘সুযোগ’ এনে দিয়েছে ইনকাম ট্যাক্স বিভাগ। তাদের পোর্টোলে গিয়ে যে-কোনও করদাতা তাঁর আর্থিক কর্মকাণ্ডের সংক্ষিপ্তসার দেখতে পাবেন। সেই বিবরণীর নাম দেওয়া হয়েছে ‘অ্যানুয়াল ইনফর্মেশন সিস্টেম’। আয়কর দপ্তরের কর্তারা বলছেন, এই পদ্ধতি চালু হওয়ার পর প্যান এবং আধার সংক্রান্ত যে-কোনও লেনদেন এবার আয়কর দপ্তরের নজরে চলে আসবে। ফলে সাধারণ মানুষ অনলাইন এবং ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে যা-কিছু কেনাকাটা করবেন, সেই তথ্য আয়কর দপ্তরের নজরে থাকবে। দপ্তরের কর্তাদের কথায়, সাধারণ ক্ষেত্রে এতদিন এগুলি দপ্তরের নজরে থাকত না। এসবের পাশাপাশি আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিচ্ছেন কর বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, সারা বছরের লেনদেন সংক্রান্ত যে তথ্যগুলি করদাতার ‘অ্যানুয়াল ইনফর্মেশন সিস্টেম’-এ দেখা যাবে, সেগুলির সবই ধ্রুব সত্য নাও হতে পারে। সেখানে যদি কোনও ত্রুটি থেকে থাকে, তাহলে তার সংশোধনের দায়িত্বও আয়করদাতারই। তা না-হলে, ওই ভুল তথ্যকেই সঠিক হিসেবে ধরে নেবেন আয়কর কর্তারা। তার জন্য যদি কোনও কর বকেয়া হয়, তাহলে তা দিতে বাধ্য থাকবেন করদাতা। প্রশ্ন উঠছে এখানেই। কেন্দ্রীয় সরকার বারবার আয়কর রিটার্ন দাখিল করার কাজটি আরও সহজ করার কথা বলছে। অথচ সেখানে তাদের ভুলচুকের দিকে নজর রাখতে হবে করদাতাকেই। তা না-হলে দায় বর্তাবে সাধারণ করদাতার। এর যৌক্তিকতা কী, তার উত্তর পাচ্ছেন না অনেকেই। এটি আয়করের নামে হেনস্তারই নামান্তর, বলছেন তাঁরা। 


আয়কর রিটার্ন ফাইল করার সময় করদাতা তাঁর আর্থিক কর্মকাণ্ডের কয়েকটি তথ্য দেখতে পান। ‘২৬ এএস’ ফর্মে তা দেখা যায়। কেন্দ্রীয় সরকার জানায়, সেই ফর্মটিকেই ঢেলে সাজা হবে। সেখানে আরও বিস্তারিত তথ্য থাকবে। যেমন সেভিংস অ্যাকাউন্টের সুদ, ভাড়া বাবদ প্রাপ্ত অর্থ, সরকারি সিকিউরিটিজ বা বন্ডে রাখা টাকা, শেয়ার বা মিউচুয়াল ফান্ড কেনা-বেচা ইত্যাদি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে যে-কোনও লেনদেনে আরও সজাগ থাকতে হবে সাধারণ মানুষকে। মার্চেন্টস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রত্যক্ষ কর বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান অরবিন্দ আগরওয়াল বলেন, আমরা দেখেছি, টিডিএস সংক্রান্ত বিষয় জড়িয়ে আছে, এমন লেনদেনগুলির বিষয়ে এতদিন সজাগ ছিল আয়কর দপ্তর। এখন সাধারণ মানুষের আধারের সঙ্গে প্যান যুক্ত হয়েছে। এর ফলে আধার ও প্যানের সঙ্গে যুক্ত যে-কোনও লেনদেন এখন আয়করের নজরে থাকবে। সেই তালিকায় আছে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড সংক্রান্ত লেনদেনও। 


যে তথ্য ‘অ্যানুয়াল ইনফর্মেশন সিস্টেম’-এ দেওয়া আছে, সেখানে ভুল-ত্রুটি থাকার সুযোগ কোথায়? অরবিন্দ আগরওয়াল বলেন, কেউ তাঁর স্ত্রী বা ব্যবসার পার্টনারের সঙ্গে জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট রাখতে পারেন। সেক্ষেত্রে যদি ওই অ্যাকাউন্ট থেকে স্ত্রী বা পার্টনার কিছু সম্পত্তি কেনেন, তাহলে তার দায় চাপতে পারে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির। ওই ব্যক্তির নিজস্ব আয়কর বিবরণীতে সেই তথ্য চলে যেতে পারে। এক্ষেত্রে ওই ব্যক্তিকেই জানাতে হবে, তিনি ওই সম্পত্তি কেনেননি। তা জানোনোর সুযোগ আছে আয়কর দপ্তরের পোর্টালে। কিন্তু তিনি যদি তা না জানান, তাহলে বছর শেষে ধরে নেওয়া হবে, ওই তথ্যে ভুল নেই। তার উপর যদি কোনও কর আরোপ করা হয়, তাহলে তা মেটানোর দায় থাকবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির। ফলে সাধারণ করদাতাকে এই বিষয়ে সতর্ক থাকাই বাঞ্ছনীয়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen