দ্বিগুণ ব্যয়ে আমেরিকা থেকে তেল আমদানির পরিমাণ বাড়িয়েছে ভারত, কী চাইছে নয়া দিল্লি?
বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশ হল ভারত। ভারতের মোট তেল আমদানির অন্তত ৩৫ শতাংশ আসে রাশিয়া থেকে। যা নিয়ে ক্ষিপ্ত ট্রাম্প

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ৯:৩০: বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশ হল ভারত। ভারতের মোট তেল আমদানির অন্তত ৩৫ শতাংশ আসে রাশিয়া থেকে। যা নিয়ে ক্ষিপ্ত ট্রাম্প। ভারতের পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন তিনি। হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে গেলে ভারতকে জরিমানা দিতে হবে। আমেরিকার সঙ্গে কি সম্পর্ক মজবুত করতে মরিয়া নয়া দিল্লি?
ভারতের কিছু রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা রাশিয়া থেকে তেল কেনা কমিয়ে ফেলার খবর সামনে এসেছিল কয়েকদিন আগেই। অন্যদিকে, চুপি চুপি বিশ্ব জ্বালানি বাজারে সমীকরণ বদলে ফেলছে মোদী সরকার। রাশিয়ার উপর নির্ভরতা বজায় রেখে আমেরিকা থেকে তেল আমদানি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়াচ্ছে ভারত। নানান সূত্রে জানা যাচ্ছে, ২০২৫ সালের প্রথম ছ’মাসে আমেরিকা থেকে খনিজ তেল আমদানি বেড়েছে ৫১ শতাংশ। খরচও হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি! আমেরিকা এখন ভারতের মোট তেল আমদানির ৮ শতাংশ জোগাচ্ছে। আগে যা ছিল মাত্র ৩ শতাংশ।
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেছেন ২০ জানুয়ারি। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত আমেরিকার তেল আমদানি গত বছরের তুলনায় ৫১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০২৪ সালের প্রথম ছ’মাসে জানুয়ারি থেকে জুন আমেরিকা থেকে ভারত প্রতিদিন ১.৮ লক্ষ ব্যারেল খনিজ তেল আমদানি করেছিল। ২০২৫ সালের একই সময়ে আমদানি পৌঁছে গিয়েছে দিনে ২.৭১ লক্ষ ব্যারেল। মার্কিন তেল আমদানি সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে এপ্রিল থেকে। এপ্রিল থেকে জুন অবধি বৃদ্ধির হার গত বছরের তুলনায় ১১৪ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালের প্রথম ভাগে মার্কিন তেল আমদানিতে ভারতের খরচ হয়েছিল ১৭৩ কোটি ডলার, ভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ১৫ হাজার কোটি টাকা। ২০২৫-এ তা ৩২ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছে গিয়েছে। আপাতত মার্কিন তেল আমদানি কমার কোনও সম্ভাবনা তো নেই-ই! উল্টে আগামী দিনে তা আরও বাড়তে পারে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জুন মাসের তুলনায় জুলাই মাসে আমেরিকা থেকে তেল আমদানি ২৩ শতাংশ বেড়েছে। কেবল তেল নয়, এলপিজি, এলএনজি-র মতো জ্বালানি গ্যাসও আমেরিকা থেকে আগের চেয়ে বেশি কিনছে ভারত। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে এলএনজি আমদানির পরিমাণ প্রায় ১০০ শতাংশ বেড়েছে।
একদিকে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধের কোনও নাম নেই। পাশাপাশি আমেরিকা থেকে তেল আমদানি দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। এর নেপথ্যে কি ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধ? না-কি তেল বাণিজ্যের সমীকরণ বদলাচ্ছে নয়া দিল্লি?