কোভিড ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত পর্যায়ের পরীক্ষার পথে ভারত

মানবদেহে এই পরীক্ষাটি সফল হলে আশা করা যায়, ভারতবাসী দ্রুত পেতে চলেছে মারণ ভাইরাসের মোক্ষম প্রতিষেধক।

August 19, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi
ছবি: প্রতীকী

অবশেষে শুরু হতে চলেছে ভারতীয় কোভিড ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত পর্যায়ের পরীক্ষা। মানবদেহে এই পরীক্ষাটি সফল হলে আশা করা যায়, ভারতবাসী দ্রুত পেতে চলেছে মারণ ভাইরাসের মোক্ষম প্রতিষেধক। মঙ্গলবার এমনই দাবি করেছেন নীতি আয়োগের সদস্য তথা ভ্যাকসিন পরিচালন সংক্রান্ত ন্যাশনাল এক্সপার্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান ডঃ ভি কে পল। বলেছেন, ভারতের তিনটি সংস্থা করোনার টিকা আবিষ্কারের লক্ষ্যে কাজ করছে। যার একটি আজ-কালের মধ্যেই শুরু করে দিচ্ছে মানবদেহে তৃতীয় দফার পরীক্ষা। তবে কোন সংস্থার ভ্যাকসিন সেই ধাপে পা রাখছে, তা স্পষ্ট করেননি নীতি আয়োগ কর্তা। জানা যাচ্ছে, হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেক সংস্থার কোভ্যাকসিনই এই চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু করতে চলেছে। ইতিমধ্যেই এই টিকার প্রথম পর্যায়ের ট্রায়াল সমাপ্ত হয়েছে। দ্বিতীয় দফার পরীক্ষা হয়েছে ১২টি শহরজুড়ে। এবার শুরু হবে তৃতীয় দফা।
অন্যদিকে, চলতি সপ্তাহেই অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা শুরু করবে পুনের সিরাম ইনস্টিটিউট। মুম্বইয়ের দু’টি গবেষণাগারে তা চালানো হবে। পাশাপাশি, ট্রায়ালের জন্য দেশের মোট ১০টি শহরকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সোমবার ভারতের পাঁচটি কোভিড টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেছে ভ্যাকসিন পরিচালন সংক্রান্ত ন্যাশনাল এক্সপার্ট গ্রুপ। এর মধ্যে পুনে ও হায়দরাবাদের দু’টি সংস্থা এখনও পর্যন্ত মানবদেহে পরীক্ষার পর্যায়ে প্রবেশ করেনি। বিভিন্ন পর্যায়ের ট্রায়ালে থাকা বাকি তিনটি সংস্থা হল, সিরাম ইনস্টিটিউট, ভারত বায়োটেক এবং জাইডাস ক্যাডিলা। বৈঠকে সরকারি প্যানেলে ছিলেন ডিপার্টমেন্ট অব বায়োটেকনোলজির সচিব রেণু স্বরূপ, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিকেল রিসার্চের (আইসিএমআর) ডিজি বলরাম ভার্গব এবং ডিপার্টমেন্ট অব ফার্মাসিউটিক্যালের সচিব পি ডি বাঘেলা। ওই পাঁচটি ভারতীয় সংস্থার সঙ্গে চূড়ান্ত পর্যায়ে সাফল্য পেলে কবে নাগাদ পূর্ণাঙ্গ উৎপাদন শুরু হবে, একটি ডোজের দাম কত হতে পারে, এক নাকি একাধিক ডোজ নিতে হবে ইত্যাদি তথ্য নিয়ে আলোচনা করেন তাঁরা।
অন্যদিকে, ভ্যাকসিনের অপেক্ষার মধ্যেই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমতে শুরু করেছে ভারতে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ এদিন জানিয়েছেন, গত ১৩ আগস্ট ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশে ৬৪ হাজারের বেশি সংক্রমণ হয়েছিল। এখন সেই প্রবণতা কমে হয়েছে ৫৫ হাজারের আশপাশে। সুতরাং স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে সংক্রমণের হার কমছে। সবথেকে ইতিবাচক বার্তা হল, বিগত ২৪ ঘণ্টায় এই প্রথম দেশজুড়ে ৯ লক্ষের বেশি করোনার পরীক্ষা হয়েছে। আবার শেষ একদিনে রেকর্ড গড়েছে সুস্থতার হারও। ৫৭ হাজার ৫৮৪ জন রোগী গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাকে হারিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। স্বাস্থ্যসচিব অবশ্য একথাও বলেছেন যে, পাঁচদিনের মধ্যে এত বড় একটা মহামারীর প্রবণতা সম্পর্কে কোনও নিশ্চিত পূর্বাভাস দেওয়া উচিত নয়। তাই কন্টেইনমেন্ট, পরীক্ষা, সংক্রমণের সন্ধান করে আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা আরও শক্তিশালী করতে হবে। তবে জানা যাচ্ছে, দেশের সিংহভাগ রাজ্যেই করোনায় মৃত্যুর হার কমছে। গোটা দেশে মৃত্যুহার যখন ১.৯২ শতাংশ, সেখানে বহু রাজ্যে ইতিমধ্যেই তা ১ শতাংশের নীচে নেমে এসেছে।
একইসঙ্গে রাশিয়ার ভ্যাকসিনকে অগ্রাহ্য করছে না মোদি সরকার। জানা যাচ্ছে, রাশিয়ার ভ্যাকসিন নির্মাতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে মস্কোয় থাকা ভারতীয় দূতাবাস। রাশিয়ার স্পুটনিক ভ্যাকসিনের গতিপ্রকৃতি খতিয়ে দেখতে চাইছে ভারত সরকার।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen