বাংলা থেকে ভুটানের শিল্প-নগরে রেলপথ, বানারহাট-সামচে প্রকল্পের শুভসূচনা

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ০৯:৩০: ভারত ও ভুটানের সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। সোমবার কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করল দুটি বড়সড় সীমান্তবর্তী রেল প্রকল্প। একটির দৈর্ঘ্য ৬৯ কিমি এবং অন্যটি ২০ কিমি। এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ভুটান রেলপথে যুক্ত হতে চলেছে ভারতের অসম এবং পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে।
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এবং পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি এক যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে জানান, ৬৯ কিমি দীর্ঘ কোকরাঝাড় (অসম)-গেলেফু (ভুটান) লাইন তৈরি করতে ব্যয় হবে ৩,৪৫৬ কোটি টাকা। অন্যদিকে, বানারহাট (পশ্চিমবঙ্গ)-সামচে (ভুটান) ২০ কিমি রেলপথ তৈরির খরচ ধরা হয়েছে ৫৭৭ কোটি টাকা। গেলেফু বর্তমানে ‘মাইন্ডফুলনেস সিটি’ হিসেবে গড়ে উঠছে এবং সামচে একটি শিল্পকেন্দ্র হিসেবে উন্নয়নশীল। তাই এই রেললাইন দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করবে।
অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান, কোকরাঝাড়-গেলেফু রেলপথে থাকবে ছয়টি স্টেশন, ২৯টি বড় সেতু, ৬৫টি ছোট সেতু, দুটি গুডশেড, একটি ফ্লাইওভার এবং ৩৯টি আন্ডারপাস। এই প্রকল্প শেষ হতে সময় লাগবে চার বছর। অন্যদিকে, বানারহাট-সামচে রেলপথে থাকবে দুটি স্টেশন, একটি বড় সেতু, ২৪টি ছোট সেতু, একটি ওভারপাস এবং ৩৭টি আন্ডারপাস। এটি শেষ হবে তিন বছরের মধ্যে।
এই রেলপথ সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক এবং আধুনিক ট্রেন যেমন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালানোর উপযোগী হবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুই দেশের পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারিত হবে। প্রকল্পের ভারতীয় অংশের অর্থায়ন করবে ভারতের রেল মন্ত্রক, আর ভুটান অংশে খরচ হবে ভারতের ১৩তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সহায়তা তহবিল থেকে।
পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রির মতে, এই সংযোগ শুধু ভুটান নয়, উত্তর-পূর্ব ভারতের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে, সামচে থেকে ডোলোমাইট, ফেরো-সিলিকন, কোয়ার্টজাইট এবং পাথরের টুকরোর মতো পণ্য ভারতে রেলপথে পরিবহন অনেক বেশি অর্থনৈতিক হবে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, এই প্রকল্পের সূচনা হয়েছিল ২০২৪ সালের মার্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভুটান সফরের সময় স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক থেকে। ভারতের প্রতিশ্রুত ১০,০০০ কোটি টাকার উন্নয়ন সহায়তার মধ্যে থেকেই ভুটানের এই উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে।