দেশবাসীর আবেগের সঙ্গে প্রতারণা! TRP-র নেশায় ভুয়ো ফুটেজ দেখিয়ে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সেনার বীরত্বকে লঘু করল?

পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলার পাল্টা পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে অপারেশন সিঁদুর চালায় ভারতীয় সেনাবাহিনী। ধ্বংস হয় পাকভূমে থাকা জঙ্গিঘাঁটি। তার পাল্টা আক্রমণ করে পাকিস্তান। পাক সেনার যাবতীয় আক্রমণ প্রতিহত করে ভারত। কিন্তু দেশের সীমান্ত এলাকায় বসবাস করা নিরীহ কিছু গ্রামবাসী, সরকারি অধিকারিক এবং বিএসএফের জওয়ান শহিদ হন। আট মে-র রাতে যখন ভারতীয় সেনা পাক আক্রমণ প্রতিহত করছে ঠিক সেই সময় ব্রেকিংয়ে পাক জয় করে ফেলে ভারতীয় মিডিয়া। মুহূর্তে মুহূর্তে ফুটেজ আসা শুরু হয়। রীতিমতো ব্রেকিংয়ের বন্যা বয়ে যায়। সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হয় একের পর এক ফুটেজ। ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম তরফে দাবি করা হয়, করাচি ও ইসলামাবাদের দখল নিয়েছে ভারতীয় সেনা, পাক প্রধানমন্ত্রী বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন, পাক সেনাপ্রধান পালিয়ে গিয়েছেন, আইএনএস বিক্রান্ত করাচি বন্দর ধ্বংস করে দিয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি।

May 11, 2025 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলার পাল্টা পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে অপারেশন সিঁদুর চালায় ভারতীয় সেনাবাহিনী। ধ্বংস হয় পাকভূমে থাকা জঙ্গিঘাঁটি। তার পাল্টা আক্রমণ করে পাকিস্তান। পাক সেনার যাবতীয় আক্রমণ প্রতিহত করে ভারত। কিন্তু দেশের সীমান্ত এলাকায় বসবাস করা নিরীহ কিছু গ্রামবাসী, সরকারি অধিকারিক এবং বিএসএফের জওয়ান শহিদ হন। আট মে-র রাতে যখন ভারতীয় সেনা পাক আক্রমণ প্রতিহত করছে ঠিক সেই সময় ব্রেকিংয়ে পাক জয় করে ফেলে ভারতীয় মিডিয়া। মুহূর্তে মুহূর্তে ফুটেজ আসা শুরু হয়। রীতিমতো ব্রেকিংয়ের বন্যা বয়ে যায়। সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হয় একের পর এক ফুটেজ। ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম তরফে দাবি করা হয়, করাচি ও ইসলামাবাদের দখল নিয়েছে ভারতীয় সেনা, পাক প্রধানমন্ত্রী বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন, পাক সেনাপ্রধান পালিয়ে গিয়েছেন, আইএনএস বিক্রান্ত করাচি বন্দর ধ্বংস করে দিয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি।

একে একে সামনে আসে প্রায় অধিকাংশ ফুটেজই ভুয়ো। বহু পুরনো বা অন্য কোনও ঘটনার ভিডিওকে ভারত-পাক সাম্প্রতিক সংঘাতের ভিডিও বলে দেশবাসীদের দেখিয়ে দিয়েছে ভারতের প্রথম সারির একাধিক মিডিয়া। বাংলার এক জনপ্রিয় বৈদ্যুতিন মিডিয়া, ফিলাডেলফিয়ার একটি ফুটেজ দেখিয়ে দাবি করে, করাচিকে ধ্বংস করে দিয়েছে ভারতীয় সেনা। চলতি বছরের পয়লা ফেব্রুয়ারি আমেরিকার ফিলাডেলফিয়ায় প্লেন ভেঙে পড়ার ভিডিওকে করাচির ভিডিও হিসাবে দেখানো হয়। শুধু তাই নয়, বেশি কিছু জাতীয় স্তরের বৈদ্যুতিন মিডিয়াও এমন অজস্র ভুয়ো ভিডিও লাগাতার দেখিয়ে গিয়েছে। এক গ্রেমিং ইউটিউব চ্যানেলের নকল গোলাগুলির ভিডিওকে পাকিস্তানের ড্রোন হামলা হিসাবে দেখানো হয়। ভিডিওটি ছিল ২০২২ সালের। ২০২১ সালের ইজরায়েলের ভিডিওকে জয়সালমেরে পাক হামলা বলেও দাবি করা হয়। এমনকি একাধিক ডিজিটাল মিডিয়াও নিজেদের প্রতিবেদন এই সব ভুয়ো ছবি, ভিডিও ব্যবহার করেছে। মসজিদে আগুন লাগার ভিডিওকে মসজিদে বিস্ফোরণ হয়েছে দাবি করে দেখানো হয়।

৮ মে রাতভর এমন চলার পর তড়িঘড়ি আসরে নামে দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। ৯ মে নির্দেশিকা জারি করে সংবাদ মাধ্যমকে দায়িত্বশীল হতে বলা হয়। সূত্র নির্ভর খবর এবং যাচাই না করে খবর প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়। সেনার গতিবিধি ও সামরিক অভিযানের ভিডিও, লাইভ রিপোর্টিং বন্ধ করতে বলা হয়। কেবল ভারতের সংবাদ মাধ্যম নয় গত কয়েকদিনে পাক মিডিয়াও এমন একাধিক ভুয়ো দাবি করে ভিডিও প্রকাশ করেছে।

সংঘাত ও সামরিক অভিযানকে হাতিয়ার করে দুই দেশের প্রথম সারির সংবাদ মাধ্যম মেতে উঠেছিল টিআরপি বাড়ানোর নেশায়। লাগাতার ভুয়ো ব্রেকিংয়ের জেরে বিনিদ্র রজনী যাপন করেছে দেশবাসী। মিডিয়ার যুদ্ধ যুদ্ধ খেলায় দেশবাসীর আবেগের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। অভিযোগ, আম জনতার দেশপ্রেমকে বাণিজ্যিক স্বার্থে ব্যবহার করেছে মিডিয়া। গোটা বিশ্ব, ভারতীয় মূলধারার মিডিয়ার কান্ড দেখে বিস্মিত। পাশাপাশি ভারতের সংবাদ মাধ্যমের পাক জয়ের মিথ্যে দাবি ভারতীয় সেনার বীরত্বকে লঘু করেছে বলেই মত দেশবাসীর।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen