Inside Story: ধনখড়ের আকস্মিক ইস্তফা! নেপথ্যে কী কারণ?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৩:৪০: রাজনীতিতে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি আলোড়ন তৈরি করেছে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের (Jagdeep Dhankhar) আকস্মিক ইস্তফার খবর। সোমবার রাত ৯টা নাগাদ রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন তিনি। কারণ হিসেবে শরীরিক অসুস্থতার কথা উল্লেখ করলেও তা রাজনৈতিক মহলে খুব একটা গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে গুঞ্জন।
মাত্র দু’বছর আগে দেশের ১৪তম উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন তিনি। হিসেব মতন তাঁর পদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২৭ সালের অগাস্ট মাসে এবং একথা তিনি গত ১০ই জুলাই JNU-র একটি অনুষ্ঠানেও বলেছিলেন।
সোমবার বাদল অধিবেশন শুরু হয়েছে সেখানে সংসদের উচ্চকক্ষ পরিচালনা, তারপর বিকেলে উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে যোগ দেওয়া সবই ঠিক চলছিল। বিকেল ৩.৫৩ মিনিটে এক সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়, বুধবার উপরাষ্ট্রপতি জয়পুর সফরে যাবেন। কিন্তু তার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই, ধনখড় এই বিস্ফোরণ ঘটান। তার এই সিদ্ধান্তে বিস্মিত গোটা রাজনৈতিক মহল। কী এমন হল সেই প্রশ্নের উত্তর না খুঁজে পেয়ে অনেকগুলো বিষয় আঁচ করে নেওয়া হচ্ছে।
কেউ বলছেন, আচমকা ‘কেন্দ্র বিরোধী’ হয়ে উঠেছিলেন তিনি আর তাই কি তাঁকে নিজের পদ থেকে সরে যেতে হল? উদাহরণস্বরূপ প্রথমেই আসছে বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব গ্রহণ। রবিবার সর্বদল বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, বিচারপতি বর্মার বিরুদ্ধে প্রথমে পদক্ষেপ করবে লোকসভা। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তের ‘বিরোধিতা’ করেন ধনকড়। সোমবার অধিবেশনের প্রথম দিনেই ৬৩ জন বিরোধী সাংসদের সই করা প্রস্তাব রাজ্যসভায় গ্রহণ করেন তিনি।
আর তারপরেই তার দ্বিতীয় পদক্ষেপ যেখানে তিনি পহেলগাঁও হামলায় নিরাপত্তার গাফিলতি এবং ভারত-পাক যুদ্ধবিরতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভূমিকা- এই দুটো ইস্যু যা কেন্দ্রের অপছন্দের তাই নিয়ে দীর্ঘক্ষণ কথা বলতে অনুমতি দিলেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গেকে। এবং এই ঘটনায় যে ট্রেজারি বেঞ্চ অসন্তুষ্ট হবে তা খুব স্বাভাবিক। আর তারপরেই জে পি নাড্ডা বিরোধী নেতাকে জবাব দেওয়ার জন্য কথা বলা শুরু করেন এবং বলেন “আমি যা বলি তা কেবল রেকর্ডে থাকবে।”
সূত্রের খবর, বিরোধীদের কারও কারও মতে, নাড্ডার এই মন্তব্য সভাপতিকে অসম্মান ও অবমাননা করেছে, কেউ বলছেন মিস্টার ধনখড় এতে বিরক্ত হয়েছেন। আর তারপর বিকেল সাড়ে ৪টের সময় BAC বৈঠকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জেপি নাড্ডা এবং কিরণ রিজিজুর অনুপস্থিতি, বিষয়টিকে আরও তিক্ততার দিকেই নিয়ে গেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
আরও একটি আকর্ষণীয় বিষয়, সোমবার রাতে পদত্যাগপত্র পাঠানো আর মঙ্গলবার সকালেই তা গৃহীত হয়ে যাওয়া, এই কান্ড কিছুটা অস্বাভাবিক বলেই মনে বিরোধী মহল। উল্লেখ্য, রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের পদ থেকে তাঁকে সরাতে চেয়েছিলেন বিরোধীরা, তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবও আনার কথা চলছিল আর তারই মাঝে এই সিদ্ধান্ত। নেপথ্যে কী রাজনৈতিক খেলা চলছে, তা নতুন উপরাষ্ট্রপতির নাম ঘোষণার পরই প্রকাশ্যে আসবে।