আজ চা দিবস, উত্তর দক্ষিণে শহরের প্রাচীন চায়ের ঠেকগুলো চেনেন?

পাড়ার মোড়ের চায়ের দোকানগুলো আজও খবর থেকে গসিপ, বিতর্ক থেকে আড্ডা সবকিছুর ঠেক।

May 21, 2023 | 3 min read
Published by: Drishti Bhongi
আজও ভাটার টান পড়েনি চায়ের দোকানগুলিতে। ছবি সৌজন্যে: ibb.in

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: চায়ের বিরুদ্ধে এক সময় আন্দোলন হয়েছিল এ দেশে, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় লিখেছিলেন পাতার পর পাতা প্রবন্ধ। সেখান থেকে আজ উপমহাদেশের সবচেয়ে পছন্দের পানীয় হল চা। ফেলুদার পছন্দের মকাইবাড়ি চা থেকে গল্প হলেও সত্যির ধনঞ্জয়ের বানানো চায়ের বিবরণ, বাঙালির সাহিত্য থেকে সিনেমা সর্বত্রজুড়েই চায়ের যাতায়াত। দাপট বললেও ভুল কিছু বলা হয় না! হালে অজস্র চা ক্যাফ গজিয়ে উঠেছে কিন্তু আজও ভাটার টান পড়েনি চায়ের দোকানগুলিতে। পাড়ার মোড়ের চায়ের দোকানগুলো আজও খবর থেকে গসিপ, বিতর্ক থেকে আড্ডা সবকিছুর ঠেক। কিন্তু মহানগরের বুকে রয়েছে বিখ্যাত কিছু চায়ের ঠেক। সেই সব প্রাচীন চায়ের দোকানগুলোর খোঁজ করল দৃষ্টিভঙ্গি।

নরেন্দ্রনাথ দত্তর চায়ের দোকান: উত্তর কলকাতার চায়ের রাজত্বের রাজা এই দোকান। বহুদিন হল বয়সে একশো বছরে পেরিয়ে গিয়েছে দত্ত মশাইয়ের দোকান। বাগবাজার গিরিশ মঞ্চর ঠিক উল্টো দিকে এই দোকান অবস্থিত। যুগ যুগ ধরে নাট্যপ্রেমী থেকে নাট্যাভিনেতা, সকলের মুখের সামনে চায়ের ভাঁড় ধরছেন দত্তরা। নরেন্দ্রবাবুর ছেলে হরেন্দ্রনাথের নামে আজ হরেনের চা হিসেবে পরিচিত এই দোকান।

বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটের ‘বুড়ো’ চায়ের দোকান। চিত্র সৌজন্যে- বর্তমান

বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটের জুহুরি সিংয়ের চায়ের দোকান: সেঞ্চুরি পেরোনো দোকানের খ্যাতি তার সুবিশাল ট্যাঙ্কের জন্য। তামার চায়ের ট্যাঙ্ক থেকে চা পড়ে পেয়ালায়। আলিয়া হোটেলের ঠিক উল্টো দিকের ফুটপাতে এই দোকান। মোষের দুধ আর ছোট এলাচগুঁড়ো এই চাকে মহানগরে জনপ্রিয়তা দিয়েছে। উত্তরপ্রদেশের জুহুরি সিং গত শতকে এই দোকান খুলেছিলেন।

আহিরীটোলার ভূতনাথ চায়ের দোকান: আহিরীটোলা লঞ্চঘাট থেকে নিমতলার দিকে একটু এগোলেই দত্তবাবুর স্নানঘাট ছাড়িয়ে ডান হাতে পড়বে এই দোকান। প্রায় ষাট বছর বয়সী এই দোকান দিনে তিন চার ঘন্টার জন্য কেবল বন্ধ হয়, বাকি সময় খোলা। ভিড় লেগেই থাকে, চা প্রেমীদের ভিড় ভূতনাথের চায়ের দোকানকে অনন্য করে তুলেছে।

রবিদার চায়ের দোকান: সুকিয়া স্ট্রিট আর মানিকতলা মোড়ের এই দোকান, সাড়ে সাত দশক পেরিয়েছে। বহু সেলেবদের নিত্য যাতায়াত এখানে। অধুনা দোকানটি কালুদার চা খ্যাত পরিচিত, আসলে রবিবাবুর মৃত্যুর পর তার ছেলেই ব্যবসার হাল ধরেছেন।

রাধুবাবুর চায়ের দোকান

রাধুবাবুর চায়ের দোকান: উত্তর আর মধ্য কলকাতা হল, এবার খাস দক্ষিণে যাওয়া যাক। লেক মার্কেটের গা লাগোয়া গলিতে রয়েছে রাধুবাবুর দোকান। শতবর্ষের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে রয়েছে এই দোকান। ১৯৩০ সালে রুজি-রুটির টানে বাঁকুড়ার সোনামুখীর স্বাধীনতা সংগ্রামী রাধাকিশোর দত্ত কলকাতায় আসেন। চায়ের দোকান দেন৷ রাতে পাওয়া যেত মটন কিমা কারি -রুটি৷ এরা আজও চিনে মাটির কাপ-প্লেটে চা পরিবেশন করেন। রাজ কাপুর থেকে মহানায়ক সকলেই রাধুবাবুর দোকানের চায়ে চুমুক দিয়েছেন।

বলবন্ত সিং ধাবা। ছবি সৌজন্যে: Crazy Fooder

বলবন্ত সিং ধাবা: একশো ছুঁই ছুঁই এই দোকানের চায়ে মজেছে কলকাতা। হরিশ মুখার্জি রোডের এই দোকানের কেশর চাও খুব বিখ্যাত। ভাঁড়ের ছোটা, আধা পাও, পোয়া পাও, ডবল পোয়া পাও চায়ে চুমুক দিতে ভিড় করেন মানুষজন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen