কেন্দ্র উদাসীন, চ্যাংরাবান্ধায় তৈরি হয়নি আন্তর্জাতিকমানের ট্রাক টার্মিনাস

আজ পর্যন্ত কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বর্তমানে কোচবিহার জেলা পরিষদের আওতায় একটি ট্রাক টার্মিনাস রয়েছে। সেখানে ৫০টি ট্রাকও দাঁড়াতে পারে না।

February 12, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

কেন্দ্রে বিজেপি সরকার দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরও চ্যাংরাবান্ধায় আন্তর্জাতিকমানের ট্রাক টার্মিনাস তৈরি হয়নি। সেইসঙ্গে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট ও বাণিজ্য কেন্দ্রের পরিকাঠামোরও কোনও উন্নতি হয়নি। এনিয়ে বাণিজ্য কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, সবাই ক্ষোভে ফুঁসছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, গত লোকসভা নির্বাচনের সময়ও বিজেপি নেতারা একটি অত্যাধুনিক ট্রাক টার্মিনাস তৈরি সহ বাণিজ্য কেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বর্তমানে কোচবিহার জেলা পরিষদের আওতায় একটি ট্রাক টার্মিনাস রয়েছে। সেখানে ৫০টি ট্রাকও দাঁড়াতে পারে না। 

ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, প্রতিদিন বাংলাদেশে প্রায় ৫০০ ট্রাক পণ্য নিয়ে যায়। ফলে ওই ট্রাক টার্মিনাসে স্থান সংকুলান হয় না। পণ্য সহ ট্রাক রাস্তায় সার দিয়ে রাখতে হয়। ফলে বাসিন্দা ও অন্যান্য যানবাহনের চলাচলে সমস্যা হয়। কেন্দ্রীয় সরকার একটি আন্তর্জাতিকমানের ট্রাক টার্মিনাস তৈরির প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু সেটা হয়নি। বিগত কংগ্রেস আমলে তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম রমেশ চ্যাংরাবান্ধায় এসে এখানকার পরিকাঠামো উন্নয়নে ৬৮ কোটি টাকা বরাদ্দের কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেই কাজ হয়নি। প্রথম বিজেপি সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং এসে তিন বিঘা করিডর সহ  চ্যাংরাবান্ধায় ট্রাক টার্মিনাস সহ পরিকাঠামো উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তৃণমূল আসন্ন বিধানসভা ভোটে কেন্দ্রীয় সরকারের এই বঞ্চনার কথা এবার সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরতে প্রস্তুত।  এব্যাপারে চ্যাংরাবান্ধা উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা পরেশচন্দ্র অধিকারী বলেন, চ্যাংরাবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট ও বাণিজ্যকেন্দ্রের উন্নয়নের কথা বিজেপি বললেও দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরও কোনও কাজ করেনি। আন্তর্জাতিক ট্রাক টার্মিনাস তৈরি নিয়েও এপর্যন্ত কোনও উদ্যোগ তারা নেয়নি। আমরা এনিয়ে অনেকবার জানিয়েছি। আমরা জেলা পরিষদের তরফে চ্যাংরাবান্ধায় ট্রাক টার্মিনাস করেছি। কিন্তু সেটি প্রয়োজন মেটাতে পারছে না। একইসঙ্গে পাসপোর্ট অফিস সহ চেকপোস্ট এলাকার একাধিক সরকারি অফিস জীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। দুই দেশে যাতায়াতকারী মানুষের জন্য পানীয় জল বা শৌচাগারের ব্যবস্থা নেই। আমরা সেখানে শৌচাগার করে দিয়েছি। বিজেপি শুধু মানুষকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছে। মানুষ সময়ে এর জবাব দেবে। বিধানসভা ভোটের প্রচারে আমরা বিষয়টি তুলে ধরব। 

অপরদিকে, চ্যাংরাবান্ধা বাণিজ্যকেন্দ্র ও ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের পরিকাঠামোর উন্নয়ন ও টার্মিনাস তৈরি না হওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে দায়ী করেছেন বিজেপির জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) সাংসদ জয়ন্তকুমার রায়। তিনি বলেন, চ্যাংরাবান্ধা বাণিজ্যকেন্দ্র সহ সেখানকার সরকারি দপ্তরগুলিকে একছাতার তলায় নিয়ে আসার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু সেই কাজের ব্যাপারটি আটকে রেখেছে রাজ্য সরকার। যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় রাজ্যকে না জানিয়ে কাজ করা সম্ভব নয়, সেকারণে কেন্দ্র এখানকার পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ করতে পারছে না। তৃণমূলের নেতারা সমস্ত কিছু না জেনেই সাধারণ মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছেন। এনিয়ে আমরাও পাল্টা প্রচার চালাব। প্রসঙ্গত, চ্যাংরাবান্ধা দিয়ে শুধু ভারত-বাংলাদেশের মধ্যেই ব্যবসা বাণিজ্য সীমাবদ্ধ নেই। এই বাণিজ্যকেন্দ্র দিয়ে ভুটান ও নেপালও বাংলাদেশে পণ্য আমদানি-রপ্তানি করে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen